ভরিতে ১০০০ টাকা ট্যাক্স দিয়ে মজুদ স্বর্ণ বৈধ করার সুযোগ

ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি

আসিফ শওকত কল্লোল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 14:54:23

স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের কাছে মজুদ স্বর্ণের ওপর ভরিতে ১০০০ টাকা ট্যাক্স দিয়ে বৈধ করার সুযোগ দিয়ে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। স্বর্ণ নীতিমালার আওতায় ভ্যাট, ট্যাক্স ও ব্যাগেজ রুলের নিয়ম সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি পাঁচটি শর্তসহ এই নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। গত ১১ ডিসেম্বর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে ওই কমিটি এই সিদ্ধান্ত নেয়।

শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে- অথরাইজড ডিলার এবং ব্যাগেজ রুলস-এর আওতায় আনা স্বর্ণালঙ্কার এবং স্বর্ণবার বা স্বর্ণপিন্ডের ওপর ভরিতে সর্বসাকুল্যে ২০০০ টাকা ট্যাক্স আদায়, ব্যাগেজ রুলস-২০১৬-এর অন্যান্য বিধান অপরিবর্তিত থাকবে।

বৈঠকের সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) একটি মেলার আয়োজন করে অঘোষিত মজুদ স্বর্ণ ও স্বর্ণালঙ্কার বৈধ করবে এবং নতুন করে ভ্যাট, ট্যাক্স ও ব্যাগেজ রুলের আলোকে রেগুলেটারি অর্ডার জারি করবে।

বৈঠকে স্বর্ণ নীতিমালা-২০১৮ এর আওতায় ঘোষিত স্বর্ণ ও স্বর্ণালঙ্কারের জন্য ভরি প্রতি কর হার সর্বসাকুল্যে ১০০০ টাকা, কাট অপলিশড ডায়মন্ডের ক্ষেত্রে ক্যারেট প্রতি ৬০০০ টাকা এবং রৌপ্যের ক্ষেত্রে ৫০ টাকা ধার্য করা হয়।

অন্যদিকে, বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) দাবি ছিল- স্বর্ণ নীতিমালায় স্বর্ণ রপ্তানি উৎসাহিত করতে ব্যবসায়ীদের ডিউটি-ড্র ব্যাক প্রদান এবং বন্ডেড ওয়্যারহাউজ সুবিধার ব্যবস্থা রাখা। কিন্তু এনবিআর এসব দাবি আমলে নেয়নি। সংস্থাটির দাবি, ভারতে আমদানি পর্যায়ে প্রতি ভরি স্বর্ণালঙ্কার এবং স্বর্ণবার বা স্বর্ণপিন্ডের বিপরীতে ৩ হাজার ৮০ ভারতীয় রুপি ডিউটি দিতে হয়। বাংলাদেশে আমদানি ডিউটি আরো কমানো হলে আমদানি করা স্বর্ণলঙ্কার এবং স্বর্ণবার বা স্বর্ণপিন্ড পার্শ্ববর্তী দেশে পাচারের আশঙ্কা আছে এবং এতে চোরাকারবারীরা উৎসাহিত হবে।

এছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে স্বর্ণালঙ্কার ক্রয় ও বিক্রির সময় বর্তমানে কার্যকর ৫ শতাংশ ভ্যাটের স্থলে ভারতের ন্যায় ৩ শতাংশ ভ্যাটের আরোপ করার অনুরোধ করলে কমিটি তাদের এ আবেদন মেনে নেয়নি। স্থানীয় পর্যায়ে ভ্যাটের হার ৫ শতাংশই রয়েছে।

এদিকে ২ অক্টোবর বহুল প্রতিক্ষীত স্বর্ণ নীতিমালা-২০১৮ মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেওয়াতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, স্বর্ণ নীতিমালার খসড়া অনুমোদন এ খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় সন্তোষজনক পদক্ষেপ। এখন এই নীতিমালার আলোকে দেশের স্বর্ণ খাতের সম্পূর্ণ ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। নীতিমালার অভাবে দেশের স্বর্ণ ও স্বর্ণালঙ্কারের মান এবং স্বর্ণবাজারে স্বচ্ছতা আসছে না। নীতিমালাটির ফলে এ খাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, দেশের স্বর্ণের মোট বার্ষিক চাহিদা ২০-৪০ টন। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ স্বর্ণ চোরাচালান পথে আসে এবং বাকিটা রিসাইকেল করে চাহিদা মেটানো হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর