সালিশি বৈঠকে ডাক পেয়েছে গ্রামীণ টেলিকম!

ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি

ঊর্মি মাহবুব, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 11:01:51

শ্রম আইন যথাযথভাবে পরিপালন না করায় গ্রামীণ টেলিকমের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সালিশি বৈঠকে ডেকে পাঠিয়েছে শ্রম অধিদপ্তরের সালিশি শাখা। আগামী ১৪ জানুয়ারি সালিশি শাখায় ত্রিপক্ষী বৈঠকের আয়োজন করেছে শ্রম অধিদপ্তর। ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিবিএর সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গ্রামীণ টেলিকমের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের অভিযোগের শেষ নেই। শ্রম আইনের কোনো ধারাই সঠিক মতো মানা হয় না প্রতিষ্ঠানটিতে। শ্রম আইন পালনের জন্য সিবিএ ১২ দফা দাবি জানালেও সেটা আমলে নেয়নি মালিকপক্ষ।

শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শিবনাত রায় স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন অধিদপ্তরে দাবি আদায়ের বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছে। বাংলাদেশ শ্রম আইনের ২১০ (৬) ধারা মোতাবেক ওই অভিযোগ মীমাংসা করতে আগামী ১৪ জানুয়ারি বেলা ১১টায় অধিদপ্তরের সভাকক্ষে ত্রিপক্ষীয় সালিশি সভা অনুষ্ঠিত হবে। ওই সভায় গ্রামীণ টেলিকম লিমিটেডের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম এমন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি এবং শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো।

শ্রম অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রম কল্যাণ তহবিলে অর্থপরিশোধ, শ্রম আইন অনুযায়ী বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা, শ্রম আইন অনুযায়ী কর্মঘণ্টা অনুসরণসহ ১২ দফা দাবিনামা পেশ করে মালিকপক্ষের কাছে। ১৫ দিনের মধ্যে ওই দাবিনামাসহ শ্রমিকদের সাথে মালিকপক্ষের বৈঠকে বসার কথা থাকলেও তা করেনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। এ সময় পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠলে গ্রামীণ টেলিকমের সিবিএ শ্রম অধিদপ্তরে অভিযোগ করে।

এসব বিষয়ে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান বার্তা২৪কে বলেন, ‘গ্রামীণ টেলিকমে শ্রম আইনের যেসব ধারা মানা হয় না সেসব বিষয় নিয়ে আমরা ১২ দফা দাবি দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের দাবি আমলেই নেয়নি। কর্মীদের সাথে বসার কথা থাকলেও তারা তা করেনি। ফলে আমরা শ্রম অধিদপ্তরের দারস্ত হয়েছিলাম। এখন শ্রম অধিদপ্তর থেকে সালিশি বৈঠক ডাকা হয়েছে। আশা করছি সালিশি বৈঠকে বিষয়টি মীমাংসা হয়ে যাবে।’

প্রসঙ্গত, শ্রম আইনের ২৩২ ধারা অনুযায়ী কোনো প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী সম্পত্তির মূল্য ২ কোটি টাকা বা তার বেশি হলে কোম্পানির নিট মুনাফার ৫ শতাংশ পাবেন কর্মীরা। কিন্তু গত ১০ বছরে গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীদের প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশের প্রায় ১০৭ কোটি টাকা পাওনা থাকলেও তা পরিশোধ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। ইতোমধ্যেই কর্মীদের পক্ষ থেকে ৯০টি মামলা করা হয়েছে গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর