বিসিক শিল্পনগরের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে শিল্প মন্ত্রণালয়কে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) শিল্প মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে এই আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম। এসময় এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী, সহ-সভাপতি মো. মুনির হোসেন, এফবিসিসিআই’র মহাসচিব মো. আলমগীর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মাহবুবুল আলম বলেন, উপযুক্ত শিল্পনীতি প্রণয়নের মাধ্যমে শিল্পায়নকে ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের সংস্কার, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের বিকাশ, পণ্য উন্নয়ন ও মূল্য সংযোজন, মেধা সম্পদের অধিকার সংরক্ষণ, খাতভিত্তিক দক্ষ জনশক্তি তৈরি, উৎপাদনশীলতা ও প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধি, উদ্ভাবন ও গবেষণা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে শিল্প মন্ত্রণালয়।
ব্যবসায় ব্যয় হ্রাসে চট্টগ্রাম বন্দরের গুরুত্বের কথা তুলে ধরে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে বিএসটিআই’র ল্যাবরেটরিতে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও উন্নত প্রযুক্তির ঘাটতি থাকায় ব্যবসার ব্যয় অনেকাংশে বেড়ে যাচ্ছে। প্রধান সমুদ্র বন্দরটিতে দ্রুত আধুনিক পরীক্ষণ যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি স্থাপন করা গেলে সেখানে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া আরও সহজ ও দ্রুততর হবে। এতে ব্যবসার ব্যয় কিছুটা কমে আসবে।
মাহবুবুল আলম বলেন, চামড়া শিল্পের আধুনিকায়নের লক্ষ্যে সাভারে চামড়া শিল্পনগরী স্থাপন এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য উন্নয়ন নীতিমালা ২০১৯ প্রণয়ন করা হয়েছে। পরিপূর্ণ প্রস্তুতি না নিয়ে চামড়া শিল্পনগরী সাভারে স্থানান্তর করায় এই খাতের উদ্যোক্তারা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগারের (সিইটিপি) সম্পূর্ণ সুফল না পাওয়া, কঠিন বর্জ্য এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার কারণে এলডব্লিউজি সার্টিফিকেট (লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের পরিবেশগত সনদ) পাচ্ছে না সাভার চামড়া শিল্পনগরী। যা চামড়া ও চামড়াজাত শিল্পের বিকাশে অন্যতম বাধা। এসব সমস্যা সমাধানে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে শিল্পমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। এছাড়া কাঁচা চামড়ার গুণগত মান রক্ষায় কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন, চামড়ার বাই-প্রডাক্ট উৎপাদনসহ এই খাতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) আকর্ষণে আরও উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সরকার কর্তৃক রুগ্ণ শিল্পের হালনাগাদ তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করায় সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে মাহবুবুল আলম জানান, এফবিসিসিআই থেকে তার অধিভুক্ত সকল এসোসিয়েশন ও চেম্বারকে নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে রুগ্ণ শিল্পের হালনাগাদ তালিকা প্রেরণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
এফবিসিসিআই’র পক্ষ থেকে সিক ইন্ডাস্ট্রি অ্যাক্ট -এর খসড়া প্রণয়ন করে ইতিপূর্বে শিল্প মন্ত্রণালয় ও সরকারের নিকট জমা দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিল্পমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
এসময় এফবিসিসিআই সভাপতির কথা গুরুত্বসহকারে শুনেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। বর্তমান সরকার দেশে ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নে বহুমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে ও ব্যবসার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে এফবিসিসিআই’র সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে শিল্প মন্ত্রণালয়।
ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে বিএসটিআইয়ের ভবনের নির্মাণকাজ অনেকদূর এগিয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে খুব শিগগিরই চট্টগ্রাম বন্দরে বিএসটিআই’র আধুনিক পরীক্ষাগার স্থাপন করা হবে।