দক্ষিণ এশিয়ার পূর্বাংশে সংযোগ বৃদ্ধিতে যে সম্ভাবনা দেখছেন ড. আতিউর

, অর্থনীতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-03-02 22:13:03

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার পূর্বাংশে সংযোগ বৃদ্ধির ফলে দেশসমূহের সঙ্গে সহযোগিতার নতুন সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। যা বাংলাদেশের উন্নত দেশে রূপান্তরের আত্মবিশ্বাসী লক্ষ্য অর্জনে বিরাট নিয়ামক ভূমিকা রাখবে।

শনিবার (২রা মার্চ, ২০২৪) ভারতের পুনের ম্যারিয়ট হোটেলে পুনে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার আয়োজিত পঞ্চম ‘এশিয়ান ইকোনমিক ডায়লগ’- এর সমাপনী দিনে এক প্যানেল আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি।

ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার পূর্বাংশে কানেক্টিভিটি বা সংযোগ আগের চেয়ে অনেকটাই বেড়েছে। বিশেষ করে ভারত ও বাংলাদেশের মানুষে মানুষে, ব্যবসায়- বাণিজ্যে এবং জ্বালানিসহ অর্থনীতির নানা ক্ষেত্রে এই সংযোগ বেড়েছে। এবং সড়ক, রেল ও জলপথের অবকাঠামোর পাশাপাশি আর্থিক ক্ষেত্রে দুই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যে সংযোগ বহুলাংশে বৃদ্ধির ফলে নতুন নতুন সহযোগিতার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। যা বাংলাদেশের উন্নত দেশে রূপান্তরের আত্মবিশ্বাসী লক্ষ্য অর্জনে বিরাট নিয়ামক ভূমিকা রাখবে।’

তিনি বলেন, ‘নেপাল ও ভূটানের সাথেও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বেড়েছে। ফেনী নদীর ওপর মৈত্রী সেতু পুরোপুরি চালু হলে ত্রিপুরা ও উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যান্য রাজ্যের সাথে বাংলাদেশের যাতায়াত সংযোগ বহুগুণে বাড়বে।’

রাষ্ট্রদূত সুধীর দেভারের সঞ্চালনায় দক্ষিণ এশিয়ার বাড়ন্ত কানেকটিভিটি বিষয়ে এই প্যানেল আলোচনায় দিল্লির আরআইএস গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অধ্যাপক ড. প্রবীর দে, দ্য ভুটানিজ পত্রিকার সম্পাদক তেনজিং ল্যামস্যাং এবং নেপালের সেন্টার ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের পরিচালক ড. নিশ্চল নাথ পান্ডেও আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।

 

দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্য প্রসারের প্রচুর সুযোগ রয়েছে’ প্যানেল আলোচকদের এই আশাবাদের প্রেক্ষিতে ড. আতিউর বলেন, ‘ভৌত অবকাঠামো ছাড়াও ডিজিটাল পেমেন্টসহ শুল্কায়ন ও অন্যান্য সংযোগ বাড়ানোর ক্ষেত্র প্রসারিত হচ্ছে এবং তা আরও বিকাশের সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে এই অঞ্চলের কেন্দ্রীয় ব্যাংকসমূহ ডিজিটাল লেনদেন ও কারেন্সি সোওয়াপের মতো বহুমাত্রিক সংযোগ স্থাপনের কাজ ইতোমধ্যেই শুরু করেছে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সবুজ অর্থায়নের সমর্থন দিয়ে ইতোমধ্যে টেক্সট্টাইল ইন্ডাস্ট্রি সবুজ রুপান্তরে বড়ো ধরনের ভূমিকা রেখেছে। আর্থিক অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে কৃষিখাতের উন্নতি ছাড়াও নারী উদ্যোক্তাসহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোক্তাদের বিকাশে বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্ভাবনীমূলক ভূমিকার কথা সকলেরই জানা।’

আরবিআই ডিজিটাল লেনদেনের সমন্বিত অবকাঠামো নির্মাণে বড়ো ভূমিকা রেখে চলেছে জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই গভর্নর বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো একে অপরের উত্তম চর্চা থেকে অনেক কিছুই শিখতে পারে এবং এ অঞ্চলের নানামাত্রিক সংযোগের ক্ষেত্রকে নিশ্চয় আরও প্রসারিত করতে পারে।’

জাপানের জাইকা, এডিবি ও বিশ্ব ব্যাংক দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক সংযোগ বৃদ্ধিতে বিরাট ভূমিকা রাখছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘এসবের প্রভাবে এই অঞ্চলের মানুষের দারিদ্র্য নিরসনসহ জীবন মানের উন্নয়নে বড়ো ভূমিকা রাখছে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর