দেশের শিল্প কারখানায় দক্ষ জনশক্তির অভাবে মেশিনারিজ ও অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনায় অতিরিক্ত লোকবল দরকার হয়। অনেক সময় কারখানার মেশিনারিজ পরিচালনা করতে বিদেশ থেকে লোকবল আনতে হয়। বিনিময়ে উচ্চ বেতনের সম্মানি প্রদান করতে হয় তাদের। এছাড়া দক্ষতার অভাবে বিদেশে গিয়েও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর শ্রমিকদের তুলনায় কম বেতনে কাজ করতে হয় বাংলাদেশি শ্রমিকদের। এই অবস্থায় দেশে দক্ষ জনবল তৈরিতে উন্নত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ওপর আরও জোর দিতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইন্ডাস্ট্রিয়াল শিক্ষা অন্তর্ভুক্তিসহ শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও একাডেমিয়াগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
শনিবার (১ জুন) বিকেলে এফবিসিসিআইর দক্ষতা বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় এ কথা বলেন ব্যবসায়ীরা। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যোগ দেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম।
এসময় তিনি দেশের জনবলের দক্ষতা উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীগণ, সরকারি কর্মকর্তা, শিল্পমালিক, ব্যবসায়ীসহ স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে এফবিসিসিআইতে একটি সেমিনার আয়োজনের পরামর্শ দেন।
এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, বাংলাদেশের বিপুল জনসংখ্যা দেশের জন্য সম্পদ। এ সম্পদকে কাজে লাগাতে প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন জরুরি।
তিনি বলেন, দক্ষ জনবল তৈরিতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ ও স্বদিচ্ছা রয়েছে। সরকারকে সহযোগিতা করার মাধ্যমে একসঙ্গে কাজ করতে হবে আমাদের ব্যবসায়ীদের।
কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ শোয়েব বলেন, বর্তমান যুগ রোবটিকস, অটোমেশনের যুগ। অনেক শিল্প কারখানা আছে রোবটিকস, অটোমেশনে চলছে। কিন্তু তারপরেও গার্মেন্টস, স্পিনিং ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্ডাস্ট্রিগুলোতে জনবলের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু দক্ষতার অভাবে চীন, জাপানের তুলনায় এখানে উৎপাদন কম। এখানে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। বিভিন্ন খাতভিত্তিক দক্ষতা উন্নয়নের বিষয় একাডেমিক কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির চেয়ারম্যান মো. শফিকুর রহমান ভূঁইয়া। তিনি বলেন, উন্নত দেশে রূপান্তরিত হওয়ার জন্য দক্ষতা উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। দক্ষতার অভাব থাকলে উৎপাদনশীলতা, রফতানি ও রফতানি আয় বৃদ্ধি-সবকিছুই বাধাগ্রস্ত হবে।
সভায় বাংলাদেশে দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্র ও করণীয় নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করা হয়। প্রেজেন্টেশনে উন্নত শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা, প্রশিক্ষণ প্রাপ্তি সহজিকরণ, শিল্পের সাথে একাডেমির সমন্বয়, উন্নত প্রযুক্তির সাথে সমন্বয় করে একাডেমিক কারিকুলাম সাজানো, লিঙ্গবৈষম্য কমানো ইত্যাদির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর পরিচালক নিয়াজ আলী চিশতী, কমিটির কো-চেয়ারম্যানবৃন্দ, সদস্যবৃন্দ।