দেশে দক্ষ জনশক্তি গড়তে হাতে কলমে শিক্ষা অর্থাৎ কারিগরি শিক্ষার উপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি গড়ে বেকারত্ব দূর করতে কারিগরি শিক্ষা বিষয়ক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদ ভবনে আয়োজিত ‘মূল্যস্ফীতি আর দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের চ্যালেঞ্জ নিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের বাজেট পেশ করে এসব জানান তিনি।
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ভূমিকা অনস্বীকার্য। সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বিগত কয়েক বছরে কারিগরি শিক্ষায় এনরোলমেন্ট উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১০ সালে কারিগরি শিক্ষায় ভর্তির হার ছিল মাত্র ১ শতাংশ যা ২০২২ সালে ১৮.১৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে এবং এর প্রায় ২৮ শতাংশ নারী।
২০১০ সালে কারিগরি শিক্ষায় ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৪১ হাজার ৬৫৬ জন যা ২০২২ সালে বৃদ্ধি পেয়ে ১৫ লাখ ৮১ হাজার ৪৮৫ জনে উন্নীত হয়েছে। কারিগরি শিক্ষায় অধিকসংখ্যক শিক্ষার্থীকে আগ্রহী করতে এবং দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীকে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে নিয়মিতভাবে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদান ও বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সাহায্য মঞ্জুরি হিসেবে এককালীন অনুদান প্রদান করা হচ্ছে।
কারিগরি শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ১০০টি উপজেলায় প্রতিটিতে ১টি করে মোট ১০০টি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ স্থাপনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে, যার মধ্যে নবনির্মিত ৯১টি টিএসসিতে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সিলেট, বরিশাল, রংপুর এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৪টি মহিলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট স্থাপন কাজ চলমান রয়েছে। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা ও রংপুর বিভাগে ৪টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। তাছাড়া ৩২৯টি উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ স্থাপনের নিমিত্ত ভূমি অধিগ্রহণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
দক্ষ জনশক্তি তৈরি লক্ষ্যে নিরবচ্ছিন্ন শিক্ষাদান নিশ্চিত করতে অফলাইন এবং অনলাইন শিক্ষার সমন্বয়ে ব্লেন্ডেড পদ্ধতি চলমান রয়েছে। জাতীয় টাস্কফোর্সের আওতায় কারিগরি শিক্ষা উপ-কমিটি গঠিত হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে কারিগরি শিক্ষা বিষয়ক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে।
কর্মসংস্থানের ভবিষ্যৎ সুযোগসমূহ বিবেচনা করে প্রচলিত কারিকুলাম সংস্কারপূর্বক ৬ষ্ঠ শ্রেণি হতে সকল পর্যায়ে অন্তত একটি ভোকেশনাল বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে শিক্ষার সাথে পরিচিত করার কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। ২৪৯টি অকুপেশনের জন্য ৫১৩টি কম্পিটেন্সি স্ট্যান্ডার্ড ও ৬১৪টি কম্পিটেন্সি বেসড্ লার্নিং ম্যাটেরিয়ালস প্রণীত হয়েছে।