বিদেশি বিনিয়োগ আনতে সম্ভাবনাময় খাতসমূহ চিহ্নিত করতে সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বয়ে ‘এফডিআই প্রোমশন টাস্ক ফোর্স’ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। গতকাল বুধবার ডিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)’র নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী মো. আমিনুল ইসলামের কাছে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়।
সভাপতি আবুল কাসেম খানের নেতৃত্বে ডিসিসিআইয়ের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা বিডার চেয়ারম্যানের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় টাস্ক ফোর্স গঠনের প্রস্তাব দেন ডিসিসিআই সভাপতি। এছাড়া অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য আগামী ২০১৯ থেকে ২০২১ সালকে ‘অবকাঠামো বছর’ ঘোষণারও প্রস্তাব দেন তিনি।
বর্তমানে বাংলাদেশে জিডিপি’র ২.৮৭ শতাংশ অবকাঠামো খাতে ব্যয় করে জানিয়ে ডিসিসিআই’র সভাপতি বলেন, এটি ৫ শতাংশে উন্নীত করতে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে অবকাঠামো খাতে ৩২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে বেসরকারিখাতের বিনিয়োগের পরিমাণ জিডিপর ২৩.১ শতাংশ। এ পরিমাণ ২৯ শতাংশে উন্নীত করতে অবকাঠামো উন্নয়ন, শিল্প-প্রতিষ্ঠানে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি শুল্ক কাঠামো সংস্কার, আধুনিকায়ন ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে দক্ষ জনসম্পদ তৈরিতে কার্যকর পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।
এ জন্য ডিসিসিআই সভাপতি বিডা প্রস্তাবিত ‘ওয়ান-স্টপ’ সার্ভিস দ্রুত চালু করা এবং বেজা ও বেপজা পরিচালিত সেবাসমূহের সঙ্গে সমন্বয়ের আহবান জানান।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের সার্বিক আর্থিক খাত এখনো কাক্সিক্ষতমাত্রায় সাফল্য অর্জন করতে পারেনি এবং এ খাতের নীতিমালা সংস্কার ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমের প্রয়োজন। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল, প্রাইভেট ইক্যুয়িটি এবং এঞ্জেল ইনভেস্টমেন্টে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রথম ৫ বছর করমুক্ত সুবিধা দেওয়ার পক্ষে মত দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের কর ব্যবস্থাপনায় ও নীতিমালায় সকল উদ্যোক্তার জন্য সমতা থাকা জরুরি।
তিনি আরো বলেন, প্রতি বছর বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদের বেতন-ভাতায় প্রায় ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হয় এবং এ ক্ষেত্রে আমরা যদি আমাদের দেশের নাগরিকদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারি তাহলে সহজেই এ পরিমাণ টাকা দেশেই রাখা সম্ভব। বিডা চেয়ারম্যান সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যকার সমন্বয় বৃদ্ধি এবং গবেষণাকাজে আরো বেশি মনোনিশের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি আরো বলেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই।
বৈঠকে ডিসিসিআইয়ের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি কামরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি রিয়াদ হোসেন, পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আকবর হাকিম, আন্দালিব হাসান, ইঞ্জিনিয়ার মো. আল আমিন, এস এম জিল্লুর রহমান এবং ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।