প্রায় সব বয়সী মানুষের প্রায় প্রতিটি মুহুর্তই এখন অ্যাপ-নির্ভর। আর অ্যাপ-নির্ভর গ্রাহকদের অ্যাপ ব্যবহারের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ ও মসৃণ করতে নিত্যনতুন আপডেট/ফিচার যুক্ত করে অ্যাপগুলো। গ্রাহক হয়তো ভাবতেই পারেনি এমন সব সেবা কিংবা ফিচার অ্যাপে যুক্ত করে তাদের জীবন সহজতর করে তোলে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।
ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব, গুগল ম্যাপ, উবার এর মতো পৃথিবীজুড়ে ব্যবহৃত অ্যাপে নিয়মিত নতুনত্ব যুক্ত হয়। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয়, দেশের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত আর্থিক সেবা অ্যাপ বিকাশ-এ নিয়মিত নতুন ফিচার যুক্ত হয়। ২০১৮ সালে চালু হওয়া বিকাশ অ্যাপের নতুন ফিচার গ্রাহককে আরো বেশি ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনে অভ্যস্ত করে তুলতে ভূমিকা রাখে। দেশের বহুল ব্যবহৃত বিকাশ অ্যাপে সম্প্রতি যুক্ত হওয়া ফিচারগুলো গ্রাহকদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। গ্রাহকের আর্থিক লেনদেন আরো গোছানো, সহজ, সময়সাশ্রয়ী করতে ভূমিকা রাখছে এই ফিচারগুলো। এক জায়গায় সব সাবস্ক্রিপশন সিনেমা দেখা হোক বা গান শোনা, খেলা দেখা হোক বা ডিজিটাল গেইম খেলা সব ধরনের বিনোদন-ই এখন সাবস্ক্রিপশন নির্ভর।
সাবস্ক্রিপশনের পেমেন্টে গ্রাহকদের পছন্দের মাধ্যম বিকাশ। গ্রাহকের সবধরনের সাবস্ক্রিপশনকে সহজে গুছিয়ে দিতে অ্যাপের হোমপেজে ‘অন্যান্য সেবাসমূহ’ অংশে ‘সাবস্ক্রিপশন’ বাটন যুক্ত হয়েছে। এখানে গ্রাহক ‘সচল’ ট্যাব থেকে তার বর্তমানে সাবস্ক্রাইব করা সব সেবার তালিকা, পেমেন্টের বিবরণী, রেফারেন্স ও নবায়নের তারিখ দেখতে পারবেন। এছাড়া ‘ম্যানেজ’ বাটনে ট্যাপ করে সহজেই যেকোনো সেবার সাবস্ক্রিপশন বাতিলও করতে পারবেন। শুধু তাই নয়, ‘পূর্বের সাবস্ক্রিপশন’ ট্যাব থেকে আগের সাবস্ক্রাইব করা সেবাগুলোর তথ্যও পেতে পারেন।
গ্লোবাল সার্চ অপশনসহ আরো গ্রাহকবান্ধব ইউজার ইন্টারফেস গুটিকয়েক সেবা নিয়ে যাত্রা শুরু হলেও প্রতিনিয়তই বিকাশে যুক্ত হচ্ছে বৈচিত্র্যপূর্ণ এবং কাযকারী গুরুত্বপূর্ণ সেবা। কোথায় কী আছে এখন আর গ্রাহককে খুঁজে বের করতে বেগ পেতে হবে না। বিকাশ অ্যাপের ইউজার ইন্টারফেস-এ যুক্ত হয়েছে গ্লোবাল সার্চ। নতুন এই ফিচারে এখন টাইপ করে কিংবা ভয়েস দিয়ে ইংরেজি বা বাংলা ভাষায় সার্চ করে সার্ভিস, অফার, প্রতিষ্ঠান, কুপন কিংবা প্রিয়জনের নাম্বারসহ সবকিছু সহজেই খুঁজে পাবেন গ্রাহক। দেশের এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর অ্যাপের মধ্যে এরকম সেবা বিকাশেই প্রথম।
মোবাইল রিচার্জের মতোই ‘সেন্ড মানি’, ‘ক্যাশ আউট’, ‘পেমেন্ট’, ‘রিকোয়েস্ট মানি’ আর ‘সেভিংস’ ফিচারগুলোর ইউজার ইন্টারফেস-এ এসেছে গ্রাহকবান্ধব পরিবর্ধন।এছাড়া বিল পেমেন্টের রিসিপ্টের চেহারাও বদলে গেছে। গ্রাহকের তথ্য আলাদাভাবে উল্লেখ থাকার পাশাপাশি এখন ‘পেইড’ লেখা ডিজিটাল সিলও থাকছে রিসিপ্টের নিচে।
মোবাইল রিচার্জে কুপন
বিকাশ অ্যাপের বহুল ব্যবহৃত সেবা মোবাইল রিচার্জে এসেছে নতুনত্ব। ইন্টারফেস বদলে যাওয়ার পাশপাশি কুপন ব্যবহারকে করা হয়েছে আরো সহজ। কুপন ব্যবহার করে এখন নিজের বা প্রিয়জনের মোবাইল রিচার্জে ছাড় পাওয়া যাচ্ছে। এজন্য অ্যাপের বিকাশ লোগোতে ট্যাপ করে বিকাশ মেন্যুতে গেলেই পাওয়া যাবে ‘কুপন’ অপশনটি। তালিকা থেকে গ্রাহক কুপনের মেয়াদসহ বিস্তারিত দেখতে পারবেন। মোবাইল রিচার্জ করার সময় কন্ট্যাক্ট নাম্বারের স্ক্রিনে মোবাইল নাম্বার নির্বাচন করলে রিচার্জের পরিমাণের নিচেই গ্রাহক দেখতে পারবেন কুপন কোড। যে কোডটি ব্যবহার করতে চান তার পাশে থাকা ‘ব্যবহার করুন’ বাটনে ট্যাপ করে পরের ধাপগুলো অনুসরণ করলেই কুপনের ছাড়সহ রিচার্জ হয়ে যাবে। সবার উপরে সার্চ বারের ঠিক নিচেই অটো পে, মাই অফার, অটো রিচার্জ, ফ্লেক্সিপ্ল্যান—এই অপশনগুলো এখন এক জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে।
এছাড়া কোনো নাম্বার সিলেক্ট করে রিচার্জের যেকোনো পরিমাণ টাইপ করলে নিচের ‘অফার দেখুন’ অংশে বাম থেকে ডানে স্ক্রল করে কাছাকাছি পরিমাণ রিচার্জে কী কী অফার আছে সেটাও দেখা যাবে। এমনকি, ইন্টারনেট, মিনিট কিংবা বান্ডেল প্যাকেজ নির্বাচন করলে সর্বোচ্চ থেকে সর্বনিম্ন কিংবা এর বিপরীতে সাজানো লিস্টও পাওয়া সম্ভব। ফলে, যেকোনো অপারেটরের মোবাইল নাম্বার রিচার্জ করা এখন সবচেয়ে সহজ বিকাশেই।
আরো সহজ হলো স্ক্যান করে কার্ড সেভ করার পদ্ধতি ব্যাংকে না গিয়ে ব্যাংকের সেবা ব্যবহারের দিক থেকে জনপ্রিয়তম হয়ে উঠেছে কার্ড থেকে বিকাশ-এ অ্যাড মানি সেবাটি। এবারের আপডেটে বিকাশ অ্যাপে কার্ড সেভ করার পদ্ধতিটিকে আরো সহজ করা হয়েছে। কার্ডের বিস্তারিত টাইপ না করে, স্ক্যান করেই কার্ড সেভ করতে পারছেন গ্রাহক। বিকাশ অ্যাপের ‘অ্যাড মানি’ আইকনে প্রবেশ করে কার্ড নির্বাচন করে টাকার পরিমাণ দিয়ে পরের ধাপে গেলেই পাওয়া যাবে সরাসরি স্ক্যান করার অপশন। কার্ড স্ক্যান অপশন গ্রাহকের সময় সাশ্রয়ের পাশপাশি আরো নির্ভুল সেবা নিশ্চিত করছে।
যুক্ত হলো টোল আইকন
বিকাশ অ্যাপে যুক্ত হয়েছে ‘টোল’ আইকন। এখন লাইনে না দাঁড়িয়ে নিজের গাড়ি বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টোল পেমেন্ট করে মেঘনা, গোমতী, ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে, ধলেশ্বরী, শীতলক্ষ্যা, বঙ্গবন্ধু ও পায়রাসহ ২১টি ব্রিজ অনায়াসে পার হতে পারবেন গ্রাহকরা। এজন্য অ্যাপের মূল মেন্যুতে ‘টোল’ আইকনে প্রবেশ করে ‘মোটরযান রেজিস্টার করুন’ বাটনে ট্যাপ করতে হবে। এরপর গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ও চেসিস নাম্বার দিয়ে পরের ধাপে পিন নাম্বার দিলেই গাড়ি নিবন্ধনের রিকোয়েস্ট চলে যাবে। রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে গ্রাহক নোটিফিকেশন পাবেন।
এরপর থেকে টোল প্লাজা পার হওয়ার সাথে সাথেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে পেমেন্ট হয়ে যাবে এবং গ্রাহক চাইলে ট্রানজেকশন বিবরণী দেখতে পারবেন বিকাশ অ্যাপের স্টেটমেন্ট অংশে।
উল্লেখ্য, একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ২০টি গাড়ি নিবন্ধন করতে পারবেন এবং যখন ইচ্ছা টোল মেন্যু থেকে যেকোনো গাড়ি বাতিলও করতে পারবেন।