বিজিএমইএ-এর ৫৫ শতাংশ সদস্যই নেই ভোটার তালিকায়

পোশাক শিল্প, অর্থনীতি

ঊর্মি মাহবুব, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্ত২৪.কম | 2023-08-25 19:40:12

পোশাক শিল্প খাতের ব্যবসায়ীদের মধ্যে চলছে নির্বাচনী আমেজ। শুরু হয়েছে নির্বাচনী প্রক্রিয়া। ইতোমধ্যে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিজিএমইএ (বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি) তাদের প্রাথমিক ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে।

আর সেই ভোটার তালিকায় নাম নেই সংগঠনটির প্রায় ৫৫ শতাংশ সদস্যের। নির্বাচন না হয়ে সমঝোতার মাধ্যমে কমিটি গঠন করায় সদস্যরা নির্বাচন বিমুখ হয়ে উঠছেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিজিএমইএ অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সংগঠনটির সাধারণ সদস্যের সংখ্যা চার হাজার ৩৬৮ জন। অথচ ১৪ ফেব্রুয়ারি বিজিএমইএ যে প্রাথমিক ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে তাতে ভোটার সংখ্যা এক হাজার ৯৬৩ জন। সেই হিসাব অনুযায়ী, ভোটার তালিকায় নেই দুই হাজার ৪০৫ জন সদস্যের। যা মোট সদস্যের প্রায় ৫৫ শতাংশ।

বিজিএমইএ সূত্রে জানা যায়, জানুয়ারি মাসের শুরুর দিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বকেয়া চাঁদা পরিশোধ করে ৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভোটার নমিনেশন দাখিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি বিজিএমইএ-এর প্রাথমিক ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়।

সেই তালিকা অনুযায়ী ঢাকা অঞ্চলের ভোটার এক হাজার ৬০১ জন ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৩৬২ জন। সে হিসাবে প্রাথমিক ভোটার তালিকায় ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৯৬৩ জন। তবে আগামী কিছুদিনের মধ্যে আরও কিছু ভোটারের নাম সংযোজন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রাথমকি ভোটার তালিকা প্রকাশের পর বিজিএমইএ-এর মতো একটি প্রভাবশালী সংগঠনের সদস্যদের ৫৫ শতাংশই তালিকায় নেই-এ বিষয়টি নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। ভোটাররা অভিযোগের আঙুল তুলছেন খোদ বিজিএমইএ-এর বর্তমান নেতৃবৃন্দের দিকে।

এন্ট্রাস্ট ফ্যাশন লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আকতারুজ্জামান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বিজিএমইএ-এর ওয়েবসাইটে সাধারণ সদস্যদের যে তালিকা আছে, তাতে অনেক সদস্যের আর কোনো কারখানা নেই। ব্যবসায়ের অবস্থা খারাপ হওয়ায় তারা কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। ছোট ছোট কারখানার মালিক, এমন সদস্যদের দিকে নজর দেয়নি বিজিএমইএ।’

‘তাই যেসব কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে সেসব কারখানার নাম যে বাদ দিতে হবে তাও দায়িত্বরতদের নজরে নেই। তাছাড়া অন্যান্য কারণ তো রয়েছেই। নয় তো এতো বড় সংগঠনের সদস্য হয়েও কেন মালিকরা ভোটার হতে চান না সেই বিষয়ে ভাবা উচিত।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিজিএমইএ-এর পরিচালনা পর্ষদের এক সদস্য বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘মূলত গত পাঁচ বছর ধরে বিজিএমইএ-তে কোনো নির্বাচন হচ্ছে না। ২০১৩ সালে সমঝোতার মাধ্যমে বর্তমান কমিটি ক্ষমতায় আসে। আর নির্বাচন না থাকলে ভোটারদের কদর থাকবে না, তাদের অধিকার আদায় হবে না, এটাই স্বাভাবিক বিষয়।’

‘অনেক সদস্যই ভোটার নমিনেশনই দাখিল করেনি। আমরা নিজেরাও অনেকবার তাদের ফোন করেছি। অনেকেই আমাদের জবাব দিয়েছেন যে, নির্বাচন তো হয় না, ভোটার হয়ে করবো কি?‘

তবে এসব বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছেন বিজিএমইএ-এর বর্তমান নেতৃবৃন্দ। বিজিএমইএ এর সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাসিরের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের পর বিজিএমইএ-তে আর কোনো নির্বাচন হয়নি। ফোরাম ও পরিষদের সমঝোতার মাধ্যমে ২০১৫ সালে মো: সিদ্দিকুর রহমান বিজিএমই-এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান। দুই বছর পর ফের নির্বাচনের কথা থাকলেও তিনবারে প্রায় দেড় বছর মেয়াদ বাড়িয়েছে বর্তমান কমিটি। আর তাই এবারও আদৌ নির্বাচন হবে নাকি ফের সমঝোতা, সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন সাধারণ ভোটাররা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর