মূলধন ঘাটতি পূরণে সোনালী ব্যাংকের নানা কৌশল

ব্যাংক বীমা, অর্থনীতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-24 18:58:38

রাষ্ট্রায়ত্ব সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি পূরণে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কিন্তু তাতেও মূলধন ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হয়নি।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মূলধন ঘাটতি মেটাতে সরকারের কাছে ৬ হাজার কোটি টাকার ‘ব্যাংক গ্যারান্টি’ দেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ।

তিনি তখন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেবা দিলেও বিনিময়ে কোনো অর্থ পায় না সোনালী ব্যাংক। এতে আর্থিক ক্ষতি হয়। তাই মুনাফা থেকে মূলধন ঘাটতি মেটানো কঠিন। এ অবস্থায় মূলধন বাবদ ব্যাংকটিকে ‘ব্যাংক গ্যারান্টি' দেওয়া হোক।

এর প্রায় ছয়মাস পর আবারও মূলধন যোগান চেয়ে অর্থমন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন এমডি। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বৈদেশিক বাণিজ্য চলমান রাখতে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি ব্যাংক হিসেবে কাজ করা একমাত্র সরকারি ব্যাংক ‘সোনালী ব্যাংক’ এর ঐতিহ্য ধরে রাখতে মূলধন যোগান দেওয়া হোক।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধি মোতাবেক ২০১৫ সাল থেকে ব্যাসেল-৩ বাস্তবায়নের জন্য সোনালী ব্যাংকের স্থায়ী সম্পদের পুনঃমূল্যায়নের অংশ হিসেবে ২০১৪ সাল থেকে প্রতি বছর ২০ শতাংশ হারে এক হাজার ৩০০ কোটি টাকা করে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই অর্থ সংরক্ষণ করা হবে।

সোনালী ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বর মাসের শেষে সব মিলিয়ে সোনালী ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ছিল ৬ হাজার ৯৩৬ টাকা, ২০১৭ সালে ৫ হাজার ৩৯৭ কোটি টাকা এবং ২০১৬ সালে ৩ হাজার ৪৭৪ কোটি টাকা। মূলধন ঘাটতির সঙ্গে বেড়ে চলেছে নিরাপত্তা সঞ্চিতি ঘাটতিও। নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকা।

এছাড়া ২০১৮ সালের নভেম্বর পর্যান্ত সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ৮১১ কোটি টাকা এবং ২০১৭ সালে ১৩ হাজার ৭৭১ কোটি টাকা।

আরও জানা গেছে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটির ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদ ৫ হাজার ৩৬৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকা, ১০ শতাংশ হারে ন্যুনতম প্রয়োজনীয় মূলধন ৫ হাজার ৩৬৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা, সংরক্ষিত মূলধন ৫৬৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, ১০ শতাংশ হারে মূলধন ঘাটতি ৫ হাজার ৯৩০ কোটি টাকা, ১১ দশমিক ৮৭৫ শতাংশ হারে বাফারসহ নূন্যতম প্রয়োজনীয় মূলধন ঘাটতি ৬ হাজার ৯৩৬ কোটি ২০ লাখ টাকা।

সোনালী ব্যাংকের তথ্য মতে, মূলধন ঘাটতির কারণে ব্যাংকের সুনাম ও ব্যবসায়ীক ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়া একং ক্রেডিট রেটিং মান কমে যাওয়ায় এখন থেকে ঋণপত্র খোলার আগে নিশ্চয়তা দিতে হবে। ব্যাংকের নিট মুনাফা থেকে বিপুল পরিমান অর্থ যোগান দিয়ে মূলধন ঘাটতি পূরণ সম্ভব নয়। ফলে মূলধন বাবদ সরকারের কাছে ৬ হাজার কোটি টাকার গ্যারান্টিপত্র ইস্যু করার অনুমোদন চেয়েছে সোনালী ব্যাংক।

এ সম্পর্কিত আরও খবর