অফশোর ব্যাংকিং নীতিমালা জারি

ব্যাংক বীমা, অর্থনীতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 00:26:00

দেশে অফশোর ব্যাংকিং চালু হয় ১৯৮৫ সালে। কিন্তু কোনো নীতিমালা ছাড়াই এতদিন চলছিল কার্যক্রম। দীর্ঘ ৩৪ বছর পর সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) প্রথমবারের মত নীতিমালা জারি করলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

অফশোর ব্যাংকিং পরিচালনা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে ওই নীতিমালায়। নীতিমালাটি পরিপালনের জন্য সোমবারই সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) কাছে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

অফশোর ব্যাংকিং হলো- দেশে কার্যরত ব্যাংকের আলাদা ইউনিট। শুধু দেশের বাইরে থেকে তহবিল সংগ্রহ করে রফতানিমুখী প্রতিষ্ঠানকে বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ দেওয়ার জন্য ১৯৮৫ সালে এক আদেশে এ ইউনিট গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। গত বছরের জুন পর্যন্ত অফশোর ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৫৮ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। নীতিমালা না থাকায় ব্যাংকগুলো যেনতেনভাবে অফশোর পরিচালনা করেছে। এর মাধ্যমে অর্থপাচার করেছে কয়েকটি ব্যাংক।

নীতিমালা বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে অনুমোদন নিয়ে যে কোনো ব্যাংক অফশোর ব্যাংকিং চালু করতে পারবে। আর যেসব ব্যাংকের এই ইউনিট রয়েছে তাদেরকে আগামী তিন মাসের মধ্যে ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ (বিআরপিডি) অনুমোদন নিতে হবে। যে কোনো সময় অনুমোদন বাতিল করতে পারবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। শরীয়াহভিত্তিতে অফশোর ব্যাংকিং করা যাবে। ইপিজেড, হাইটেক পার্ক, অর্থনৈতিক অঞ্চল, প্রাইভেট ইপিজেডে শতভাগ বিদেশি মালিকানাধীন কোম্পানি, দেশি-বিদেশি যৌথমালিকানাধীন কোম্পানি, প্রবাসীসহ আইনের দ্বারা নির্ধারিত ব্যক্তিবর্গ অফশোর বাংকিং আমানত রাখা ও ঋণ নিতে পারবেন। 

কোনো নীতিমালা না থাকায় সাধারণ ব্যাংকের মতো অফশোর ব্যাংকিংয়ের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের খুব একটা নিয়ন্ত্রণ ছিল না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০১৬ সালে ১৯টি অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটের ওপর পরিদর্শন করে নানা অনিয়মের প্রমাণ পায়। অফশোর ব্যাংকিং থেকে সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করতে পারে ব্যাংকগুলো। সাধারণ ব্যাংকিংয়ে এখনও যেখানে ১০ থেকে ১২ শতাংশ পর্যন্ত সুদে ঋণ নিতে গচ্ছে।

এরকম পরিস্থিতিতে প্রভাবশালীদের অনেকেই কম সুদে অফশোর ব্যাংকিং থেকে ঋণ সুবিধা নেন। এবি ব্যাংকের অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট থেকে ২০১৬ সালে চার বিদেশি কোম্পানিতে ঋণের নামে ৫ কোটি ১০ লাখ ডলার সমপরিমাণ প্রায় ৪০০ কোটি টাকা পাচারের তথ্য পায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ ঘটনায় ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ বেশ কয়েকজন পরিচালকের বিরুদ্ধে দুদকে মামলা চলছে। ব্যাংকটির অফশোর ব্যাংকিংয়ের ২৮৮ কোটি টাকা এখন খেলাপি। সব ব্যাংকের অফশোর ব্যাংকিংয়ের যেখানে খেলাপি রয়েছে ৩৯২ কোটি টাকা।

 

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর