বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য একগুচ্ছ প্রণোদনার প্রস্তাব

পুঁজিবাজার, অর্থনীতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 05:28:06

পুঁজিবাজারে বর্তমান তারল্য সংকট দূর করতে বন্ড লেনদেনের কর অব্যহতির পাশাপাশি স্মলক্যাপ বোর্ডে তালিকাভুক্ত স্বল্পমূলধনী কোম্পানির কর অবকাশ সুবিধাসহ বাজেটে একগুচ্ছ প্রণোদনা চেয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

মঙ্গলবার (২এপ্রিল) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে প্রাক-বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা পুঁজিবাজারকে গতিশীল করতে রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে তুলে ধরেন।

এ সময় তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর ব্যবধান ২০ শতাংশ, করমুক্ত লভ্যাংশ সীমা বৃদ্ধি, দ্বৈত করনীতি প্রত্যাহার, ট্রেজারি বিল ও বন্ড লেনদেনে কর অব্যাহতি এবং স্মলক্যাপ বোর্ডে তালিকাভুক্ত স্বল্পমূলধনী কোম্পানির কর অবকাশের সুবিধাসহ বেশকিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়।

স্টক এক্সচেঞ্জ ছাড়াও আলোচনায় বাংলাদেশ ইন্সুরেন্স এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ লিজিং ফাইন্যান্স কোম্পানিজ এসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ইন্সুরেন্স সার্ভেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা প্রাক-বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে নিজের প্রস্তাবনার তুলে ধরেন।

ডিএসইর প্রস্তাবনা: ডি-মিউচ্যুয়ালাইজেন পরবর্তীতে ক্রমহ্রাসমান হারে কর অবকাশের পরবর্তীতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে শতভাগ কর ছাড়, শেয়ার লেনদেনে শূন্য দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ কর থেকে শূন্য দশমিক শূন্য ১৫ শতাংশ, ৫ কোটি টাকা স্বল্প মূলধনী কোম্পানির তালিকাভুক্তিতে কর ছাড়, ট্রেজারি বিল ও বন্ড লেনদেনে কর অব্যহতি, বিনিয়োগকারীর লভ্যাংশ আয়ের সীমা ২৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে এক লাখ টাকা, বহুজাতিক ও ব্লু-চিপ কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে আকৃষ্ট করতে তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে কর্পোরেট কর হারের পার্থক্য ১০ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ এবং স্ট্যাম্প ডিউটি প্রত্যাহারে প্রস্তাব করা হয়।

ডিএসইর এমডি কেএএম মাজেদুর রহমান বলেন, ‘পুঁজিবাজারকে গতিশীল, উন্নয়ন ও বিশ্বমানের করতে প্রস্তাবনা বস্তবায়ন খুবই জরুরি। অর্থনীতির সঙ্গে একটি সত্যিকারের পুঁজিবাজার গড়তে এসব প্রণোদনা প্রয়োজন। কর ছাড় দিলে দৈনিক লেনদেন বাড়বে,কর্পোরেট কর ব্যবধান বাড়লে নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্তিতে উৎসাহিত হবে। এতে বাজার গতিশীল হলে সরকারের রাজস্বও বৃদ্ধি পাবে।’

সিএসই’র প্রস্তাবনা: কর্পোরেট করহার পুনর্বিন্যাস চেয়ে তালিকাভুক্ত কোম্পানির বিদ্যমান কর হার ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ, নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানির আয় তিন বছর করমুক্ত, এসএমই কোম্পানির প্রথম তিনবছর শূন্য শতাংশ কর, করমুক্ত লভ্যাংশের সীমা ২৫ হাজর টাকা থেকে ১ লাখ টাকা, তালিকাভুক্ত কোম্পানি থেকে পাওয়া লভ্যাংশ আয় করমুক্ত, বন্ডের সুদ আয়ের উপর কর অব্যহতি, বন্ড লেনদেনের ওপর কর প্রত্যাহার, অল্টারনেট ট্রেডিং বোর্ড (এটিবি) কোম্পানিকে কর সুবিধা, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে কর অব্যহতি ও সদস্যদের ওপর উৎসে কর কর্তন শূন্য দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ থেকে শূন্য দশমকি শূন্য ১৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

সিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, ‘বিগত বছরে পুঁজিবাজারে ব্যাপক কাঠামোগত ও আইনী সংস্কার হয়েছে। দেশের বিকাশমান অর্থনৈতিক অগ্রযাথায় পুঁজিবাজারের অংশগ্রহণ ও ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে দেশে লক্ষাধিককোম্পানি নিবন্ধিত হলেও মধ্যম ও বৃহদায়তনের কমপক্ষে কয়েক হাজার কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার সুযোগ আছে। অথচ শুধুমাত্র কয়েকশ কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আছে যা একান্ত নগন্য। বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রুপান্তর করতে বেসরকারী পুঁজি সঞ্চালনের প্রয়োজন। আর এ লক্ষ্য পূরণে পুঁজিবাজার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে আমরা দৃঢভাবে বিশ্বাস করি।’

মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘স্টক এক্সচেঞ্জ, ব্যাংক, ইন্সুরেন্স ও মার্চেন্ট ব্যাংক দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। স্টক এক্সচেঞ্জ বিনিয়োগের বিরাট কেন্দ্র। যেসব দেশে স্টক এক্সচেঞ্জ উন্নত হয়, সেসব দেশে বিনিয়োগ বাড়ে। চীনা স্টক এক্সচেঞ্জের কাছে শেয়ার বিক্রির সময় করে বড় সুবিধা দেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘কখনো কখনো দেখা যেতো বাজেট ঘোষণার পর চাঙ্গা হতো আবার কখনো নিন্মমুখী হয়েছে। কিন্তু এবারের বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য উল্টো হয় এমন কিছুই করবো না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর