পাঁচ বছর পর নির্বাচনী প্রক্রিয়া ২০১৯-২১ সালের জন্য বিজিএমইএ -এর দায়িত্ব গ্রহণ করতে চলেছে পরিষদ-ফোরাম জোট। আর এই নির্বাচনে ইতিহাস গড়লেন জোটের প্যানেল লিডার রুবানা হক।
বিজিএমইএ -এর ইতিহাসে প্রথম নারী সভাপতি হতে চলেছেন মোহাম্মাদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবানা হক।
শনিবার (৬ এপ্রিল) সকালে ৮টা থেকে চলে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া। শেষ হয় বিকাল ৪টায়। বিকাল সাড়ে ৪টা নাগাদ শুরু হয় ভোট গণনা। শেষ হয় রাত সাড়ে ৮টায়। ভোট গণনা শেষ হওয়ার আগেই সন্ধ্যা ৭টায় ভোট গণনা শেষে জয় লাভ করে পরিষদ-ফোরাম জোট। তারপর শুধুই যেন অপেক্ষা ছিল জয় উদযাপনের। রাত সাড়ে ৯টায় নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ফল ঘোষণা করা হয়। সেখানেও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পান রুবানা হক। প্যানেল ভোট ও মিশ্র ভোট মিলিয়ে রুবানা হক পান ১ হাজার ২৮০ ভোট।
নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলামিন ফলাফল ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, অত্যন্ত সুন্দর একটি নির্বাচন হয়েছে এতে আমরা অত্যন্ত খুশি হয়েছি। আমি সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া ২৬ জনকে জয়ী ঘোষণা করছি।
জয়ী পরিষদ-ফোরাম জোটের প্যানেল লিডার রুবানা হক বলেন, ভোটাররা সুস্থভাবে ভোট দিতে পেরেছেন, এটা সত্যি আনন্দের। অনেকে হুইল চেয়ারে করে এসেও ভোট দিয়েছেন। পুরো পোশাক শিল্পই বিজয়ী। এখানে বিভাজনের কোনো সুযোগ নেই। আগামীতে যাতে সবাই এক সাথে কাজ করতে পারি, সেই চেষ্টা করতে হবে।
অন্যদিকে স্বাধীনতা পরিষদের প্যানেল লিডার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি নির্বাচনে হেরেছি, এটা বিষয় নয়। রুবানা আপা যখন আমাকে পাশে চাইবেন, পাবেন। আশা করছি, তিনি আমাকে পাশে রাখবেন।
বিজিএমইএ -এর নির্বাচনে প্যানেল ভোট পড়েছে ৭৩২টি। আর এর সব ভোটই পেয়েছে পরিষদ-ফোরাম জোট। অন্যদিকে ২৬ জন প্যানেলের ১৭ জন প্রার্থী দিয়েছিল স্বাধীনতা পরিষদ। আর তাই প্যানেল ভোটের একটিও পায়নি স্বাধীনতা পরিষদ।
বিজিএমইএ -এর সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনে প্যানেল ভোট পেড়েছে ৭৩২টি। আর মিশ্র ভোট পড়েছে ৬৬৫টি। ৯৯টি ভোট বাতিল হয়।
সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন পরিষদ-ফোরাম প্যানেলের এম এ রহীম। তার ব্যালট নম্বর সাত।
বিজিএমইএ -এর নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, ঢাকা অঞ্চলের ১ হাজার ৫৯৭ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ১ হাজার ২০৪ জন। অন্যদিকে চট্টগ্রামে ৩৫৮ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ২৮৮ জন। সে হিসাবে, মোট ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৭৬ শতাংশ ২৮ শতাংশ।
নির্বাচনে অংশ নেওয়া অপর পক্ষ স্বাধীনতা পরিষদের নেতৃত্ব দেন ডিএসএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি পেয়েছেন ৪২২টি ভোট।
ঢাকা অঞ্চলে যেমন জোটের ২৬ জনই জয়ী ঠিক তেমনি চট্টগ্রাম অঞ্চলে পরিষদ-ফোরাম জোটের নয় জন পরিচালক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগেই জয়ী হয়েছেন।
নির্বাচিতরা হলেন- এম এ রহিম, রুবানা হক, আরশাদ জামাল, কে এম রফিকুল ইসলাম, ইনামূল হক খান, মিরান আলী, মো. মোহসিনুল আজম, মো. মহিুউদ্দিন রুবেল, মো. নাসির উদ্দিন, মো. রেজোয়ান সেলিম, মো. কামাল উদ্দিনন, মোহাম্মদ নাসির, মো. সাজ্জাদুর রহমান মৃধা, মো. মনির হোসেন, এ কে এম বদিউল আলম, মো. আবদুল মোমেন, মো. শহীদুল হক মুকুল, ইকবাল হামিদ কোরেয়েশি, মো. শীহাবুদ্দোজা চৌধুরী, মাসুদ কাদের মনা, মো. মোশাররফ হোসেন ঢালী, এস এম মান্নান কচি, শরীফ জহির, নজরুল ইসলাম, আসিফ ইব্রাহীম ফয়সাল আহমেদ।
১৮ এপ্রিল নির্বাচিত ৩৫ জন পরিচালক মিলে নির্বাচিত করবেন সভাপতি ও সাতজন সহ-সভাপতি। সভাপতি হিসেবে জোটের সবাই সমর্থন দিবেন রুবানা হককে বলেই ইতোমধ্যেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন কয়েকদিনের মধ্যেই পরিচালকরা নির্বাচন করবেন সাতজন সহ-সভাপতিকে।
চলতি মাসের ২০ তারিখের মধ্যেই বর্তমান কমিটিকে নব নির্বাচিত কমিটির কাছে সকল দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে। ২০১৫ সালে সমঝোতার মাধ্যমে গঠিত হয় বর্তমান কমিটি। দুই বছরের জন্য গঠিত এই কমিটি দফায় দফায় আরো দেড় বছর মেয়াদ বাড়ায়। এর ২০১৩ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিলেন বর্তমান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।