পুঁজিবাজারকে টেনে উঠানোর উদ্যোগ বিএসইসির

পুঁজিবাজার, অর্থনীতি

মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, | 2023-08-22 23:44:43

দীর্ঘ আড়াই মাস দরপতনে তলানিতে থাকা পুঁজিবাজারকে টেনে তোলার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

বৃহস্পতিবার (১১এপ্রিল) যাতে কোনোভাবে সূচক পতন না হয়, সেজন্য বিএসইসির পক্ষ থেকে শেয়ার কিনে মার্কেট সাপোর্ট দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়।

বাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো কম-বেশি শেয়ার কিনে সার্পোট দিয়েছে। ফলে টানা ছয়দিন পর বাজারে উত্থান হয়েছে। আর তাতে বিনিয়োগকারীরা একটু প্রাণ ফিরে পেল।

বৃহস্পতিবার দিন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক বেড়েছে ৬৪ পয়েন্ট। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূচক বেড়েছে ১৫৯ পয়েন্ট।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রথমে পুঁজিবাজারে প্রাণ বলে খ্যাত ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশসহ (আইসিবি) বড় বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ফোন করে শেয়ার কিনে সার্পোট দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। বিএসইসির পাশাপাশি ডিএসই ও সিএসই’র পক্ষ থেকে ফোনসহ বিভিন্ন কৌশলে বাজারকে সার্পোট দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে।

নাম না প্রকাশের শর্ত ডিএসইর একজন পরিচালক বার্তা২৪কমকে বলেন, ২০১০ সালের পর আরো একটি ধস যাতে না হয়, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যেন হতাশা আরো না বাড়ে। সেজন্য আমাদের শেয়ার কিনে সার্পোট দেওযার অনুরোধ করা হয়। আমরাও বাজারটাকে বাঁচাতে ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছি।

এদিকে দরপতনের প্রতিবাদ ও বাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনতে ইস্যু মূল্যের নিচে অবস্থানরত কোম্পানিগুলোর শেয়ারে কিনতেবাই ব্যাক আইন করা, আপতত আইপিও’র অনুমোদন বন্ধ এবং প্লেসমেন্ট শেয়ারের অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ রাখার দাবিতে বৃহস্পতিবারও বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বিনিয়োগকারীরা।

দুপুর ২টা থেকে পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু হয়। দুপুর ৩টায় ডিএসইর সামনে থেকে মিছিল শুরু করে শাপলা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর থেকে হঠাৎ পুঁজিবাজারে উত্থান শুরু হয়। চলে চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। এরপর ২৮ জানুয়ারি থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত মোট ৫০ কার্যদিবস লেনদনে হয়েছে। এতে ৩৪ কার্যদিবস দরপতন হয়েছে। আর ১৬ কার্যদিবস পুঁজিবাজারে উত্থান হয়েছে। এসময়ে ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছে ৬৭৭ পয়েন্ট। আর সিএসইর প্রধান সূচক কমেছে ১ হাজার ২০৬ পয়েন্ট। ডিএসইতে লেনদেন ১ হাজার কোটি টাকা থেকে কমে ২00 কোটি টাকার গড়ে চলে এসেছে।

আর তাতে গত আড়াই মাসে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজার থেকে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি হাওয়া হয়েছে ৫৩ হাজার ৫২৫কোটি ৩৭ লাখ টাকারও বেশি। এর মধ্যে ডিএসইর বিনিয়োগকারীরা হারিয়েছে ২৬ হাজার ৯১৭ কোটি ২ লাখ ৬৭ হাজারটাকার মূলধন।

অপর পুঁজিবাজার সিএসই থেকে পুঁজি হাওয়া হয়েছে ২৬ হাজার ৬০৮ কোটি ৩৫ লাখ ৫ হাজার টাকা।

এ অবস্থা থেকে উত্তোলনে গত ৯ এপ্রিল বিএসইসি’র সঙ্গে ডিএসই, ডিবিএ, মার্চেন্ট ব্যাংক, আইসিবি’র সাথে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে তারল্য সংকট নিরসনের স্ক্রিপ্ট নিটিং চালু,খারাপ কোম্পানির আইপিও’র অনুমোদন না দেয়া, ব্রোকারহাউজের সার্ভিস বুথ চালু এবং সারাদেশে হাউজগুলোর শাখা খোলা এবং বন্ড মার্কেট চালুর বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। কমিশনের পক্ষ থেকে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।

এরপর দিন বুধবার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খায়রুল হোসেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। বাজারে সার্বিক চিত্র তুলে ধরেছেন। প্রধানমন্ত্রীও তাকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর