স্বর্ণ আমদানি ঘোষণার সময় ৩ মাস বাড়বে: এনবিআর

ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 10:57:05

স্বর্ণ আমদানির বিষয়ে যে প্রস্তুতি ছিল তা পুরোপুরি সম্পন্ন হয়নি জানিয়ে জাতীয় রাজস্ব র্বোডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেছেন, ‘স্বর্ণ আমদানি ঘোষণার সময় আরও তিন মাস বাড়ানো হবে।’

মঙ্গলবার(২৩এপ্রিল) এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে প্রাক-বাজেট আলোচনায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির দাবির প্রেক্ষিতে তিনি এ কথা বলেন।

এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন,  ‘স্বর্ণ ঘোষণার সময় আগামী তিন মাস বাড়ানো হবে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ও শিল্পমন্ত্রণালকে চিঠি দেওয়া হবে।’

প্রাক-বাজেট অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন(বাপা),ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ, বিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ক্রপ প্রোটেকশন অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ অটোব্রেড বিস্কুট ম্যানুফ্যাকচারাস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ব্রেড, বিস্কুট ও কনফেশনারী প্রন্তুতকারক সমিতির প্রতিনিধিরা অংশ নেন। 

জুয়েলারি সমিতির সহ-সভাপতি এনামুল হক খান বলেন, ‘স্বর্ণ নীতিমালা কার্যকর করার জন্য যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এনবিআর ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুতি না থাকায়, বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের লাইসেন্স দিচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘আগামী মাসের ৮ তারিখে আমাদের মেয়াদ শেষ। এই সময়ের মধ্যে আমাদের যে গোল্ড (স্বর্ণ) আছে তার ডিক্লারেশন করতে হবে। এটা স্বর্ণ নীতিমালায় আছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে স্বর্ণ আমদানির যেসব অ্যাক্ট সংশোধন করতে বলা হয়েছে। সেগুলোর একটিও করা হয়নি। তাই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে লাইসেন্স পাব না।আমদানি নীতিমালা না হলে ভ্যাট নেবে না। আমাদের সার্টিফিকেট দেবে না। পাশাপাশি এক হাজার টাকার বিনিময়ে আমাদের দায়মুক্তির সার্টিফিকেটও দেবে না।’

এছাড়া পূর্বের বছরের স্বর্ণের এক হাজার টাকা দিলে নতুন বছরের ডিক্লারেশন চলে আসবে। ইনকাম ট্যাক্সের বিষয়টি যতক্ষণ পর্যন্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা স্বর্ণের ডিক্লারেশন দিতে পারছি না। তাই তিনি স্বর্ণ আমদানি ঘোষণার সময় আরও তিন মাস বাড়িয়ে দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

এসময় এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন,  ‘সময় আরও তিনমাস বাড়িয়ে দেব। বাংলাদেশ ব্যাংকেও আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে চিঠি দেওয়া হবে।’

এনামুল হক খান বলেন, ধনীরা আমাদের দেশ থেকে স্বর্ণ কিনছে না। তারা ভারত থেকে স্বর্ণালঙ্কার কিনছে। কারণ দেশের বাজার থেকে স্বর্ণ কিনলে ৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। আর বিদেশ থেকে ১০০ গ্রাম স্বর্ণ আনতে কোনো কর দিতে হয় না। ফলে তারা বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ নিয়ে আসছে।

তিনি আরও বলেন, ‘স্বর্ণ আমদানিতে এখনো আমাদেরকে লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়হীনতার কারণে এটা হচ্ছে না। কোয়ালটি কন্ট্রোলের জন্য যে নীতিমালা দরকার শিল্পমন্ত্রণালয় তা করছে না।’

এসময় এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেহেতু এটি ফাইন্যান্সিয়াল রিপোটিং অ্যাক্ট অনুসারে কাজ করতে হয়। আগে বিদেশ থেকে কে কোন রেটে স্বর্ণ আমদানি করতে পারবে সেটা নির্ধারিত ছিল। সেজন্য এটার ওপর কাজ করিনি। আমাদের পরিকল্পনা হল ফাইন্যান্স অ্যাক্টে পহেলা জুলাই থেকে কার্যকর করা।’

সভায় জুয়েলারি সংগঠনের পক্ষ থেকে বেশকয়েকটির লিখিত দাবি উত্থাপন করা হয়। এ দাবিগুলো হচ্ছে, স্বর্ণ বিক্রির ওপর ১ দশমিক ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট নির্ধারণ করা,  স্বর্ণ শিল্পের বিকাশের জন্য আমদানির ওপর প্রতি ১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রামের(এক ভরি) জন্য সর্বমোট ১০০ টাকা কর আরোপ করা। মূসক নিবন্ধকারী শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ, মূসক ১ দশমিক ৫ শতাংশ রাখা এবং অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারসহ ৫ দফা দাবি জানানো হয়।

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর