বাজেট ঘোষণার দিন থেকে ভ্যাট আইন কার্যকর

ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 19:43:30

ঢাকা: আসছে (২০১৯-২০) অর্থবছরের বাজেট কার্যকরের (ঘোষণার) দিন থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। একই সঙ্গে সব ব্যবসায়ীকে অটোমেশনের আওতায় আনবে এনবিআর।

বৃহস্পতিবার (০২ মে) ইকোনোমিক রিপোর্টার ফোরামের (ইআরএফ) সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় এনবিআরের সদস্য ফিরোজ শাহ আলম, কানন কুমার রায়, ইআরএফ সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলাল এবং সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলামসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, যেদিন বাজেট ঘোষণা হবে সেদিন থেকে বাজেট কার্যকর হবে। বাজেটে ১৫ শতাংশ পর‌্যন্ত ভ্যাট থাকবে। ভ্যাটের হার কেমন হবে তা অর্থমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে নির্ধারণ করেছেন। ব্যবসায়ীরা তা মেনেও নিয়েছেন। আগামী অর্থবছরের বাজেট কার্যকরের দিন থেকে এ ভ্যাট আইন কার্যকর হবে।

সাইফ ইসলাম দিলাল বলেন, বর্তমানে এক কোটি টাকা কর দেন মাত্র ১০০ জন। অন্তত ৫০ হাজার জন আছেন যারা এ পরিমাণ কর দিতে পারেন। কিন্তু তাদের কাছ থেকে কর আনা হচ্ছে না। এর জন্য ব্যাংকের সহযোগিতা নেওয়া যেতে পারে।

তিনি বলেন, নকল ওষুধ, কসমেটিকস, বিদুৎ এবং খাদ্যে সয়লাব হয়ে গেছে দেশ। সরকার এসব খাত থেকে প্রচুর পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষও মানসম্মত পণ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সব ব্যবসায়ীকে করের আওতায় আনতে পারলে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব বাড়বে।

তার কথার সূত্র ধরে এনিবআর চেয়ারম্যান বলেন, আমরা কর অব্যাহতির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসছি। এখন হাতেগোনা দু-একটি খাতে কর অব্যাহতি রয়েছে। শুধু তাই নয়, জনসেবামূলক কাজ ছাড়া ব্যক্তিদেরও কর অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে না।

টিআইএনের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, অনেকে অনৈতিকভাবে টিআইএন নেন। এ বিষয়ে আমরা কড়াকড়ি আরোপ করবো। যারা টিআইএন নেন তারা যাতে রিটার্ন দেন তার ব্যবস্থা করবো।

করপোরেট কর হার কমানোর প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, দেশের মোট রাজস্ব আয়ের ৬০-৬৫ শতাংশ আসে করপোরেট কর থেকে। করপোরেট করের হার এখনো বিশ্বের অনান্য দেশের মতই রয়েছে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার সব দেশেই ২৫ শতাংশ। সব কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলেই তো কর ছাড় পায়। যখন ব্যবসা বাড়বে তখন করপোরেট কর বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা হবে।

ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক রাশিদুল ইসলাম এনবিআরের কাছে সংগঠনের ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবি গুলো হচ্ছে-করদাতাদের সুবিধার্থে কর সেবা সহজীকরণ, রাজস্ব বোর্ডের ওয়েব সাইট আপগ্রেড করা, এনবিআরের সক্ষমতা বাড়ানো, কর সচেতনতা তৈরি বা কর প্রদানে সচেতনতা বাড়াতে এসএমএস এর মাধ্যমে প্রচারণা চালানো, প্রত্যক্ষ কর আদায়ে সংস্কার করা, করদাতাদের বিরোধ নিষ্পত্তি বা মামলা জট কমানোর জন্য বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) ব্যবস্থাকে অধিকতর কার্যকর করা, ভ্যাট আদায়ে আরো স্বচ্ছতা আনা, রাজস্ব বোর্ড বিভিন্ন এসআরও জারি করে যে কর ছাড় দিয়ে থাকে, সে কর ছাড়ের কারণ এবং সম্ভাব্য কর ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ থাকা, ট্রান্সফার প্রাইসিং সেলকে আরো কার্যকর করা ও এর কার্যক্রম সম্পর্কে কর দাতাদের কাছে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা করা, ইআরএফ সদস্যদের জন্য ঢাকার বাইরে বিভিন্ন কাস্টমস হাউজ, আয়কর ও ভ্যাট অফিস পরিদর্শনের সুযোগ করে দেওয়া এবং সংবাদকর্মীদের সুবিধার্থে ভারতের মত বাজেট অধিবেশন বিকেলের পরিবর্তে সকালে শুরু করা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর