জনপ্রিয়তা পাচ্ছে না মোবাইল অ্যাপসে লেনদেন

পুঁজিবাজার, অর্থনীতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-26 07:43:43

ব্রোকারেজ হাউজে না এসেই ঘরে কিংবা অফিস-আদালতে লেনদেন করতে পারছেন বিনিয়োগকারীরা। বিও অ্যাকাউন্টের বাইরে এ জন্য কোনো সার্ভিস চার্জও দিতে হচ্ছে না। তারপরও জনপ্রিয়তা পাচ্ছে না ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মোবাইল অ্যাপসে লেনদেন।

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইর তথ্য মতে, মোবাইল অ্যাপসটি চালু হয়েছে ৩ বছরের বেশি সময় ধরে। এ সময়ে লেনদেন করার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন মাত্র ৪৫ হাজার বিনিয়োগকারী। অথচ বর্তমানে পুঁজিবাজারে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীর সংখ্যা সাড়ে ২৮ লাখ রয়েছে বলে সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) সূত্রে জানা গেছে।

বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ, মোবাইল অ্যাপসটি ‘ইউজার ফ্রেন্ডলি’ না। আর তাই বিনিয়োগকারীরা মোবাইল অ্যাপস প্রযুক্তিতে লেনদেনও কম করেন। আর তাতে ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে অতিরিক্ত খরচ যোগ হচ্ছে বলে মনে করেন ব্রোকার হাউজের মালিকরা।

র্যা পিড সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী সোহান মাহমুদ বলেন, মোবাইল অ্যাপসের ব্যবহার জটিল। তাই আমি রেজিস্ট্রেশন করার পরও ব্যবহার করি না।

নাম না প্রকাশের শর্তে ইবিএল সিকিউরিটিজের এক ট্রেডার বার্তা২৪.কমকে বলেন, মোবাইল অ্যাপসে লেনেদেনের সুবিধা দিতে আলাদা ডেক্স খোলা হয়েছে, কয়েকজন লোকও নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু লোকজন আসছে না। ফলে ব্রোকারেজ হাউজের অতিরিক্ত খরচ বেড়েছে এই দরপতনের বাজারে।

তিনি বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে ডিএসইকে সমস্যাগুলো তুলে ধরেছি। কিন্তু ডিএসই কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ফলে জনপ্রিয় হচ্ছে মোবাইল অ্যাপস।

সংশ্লিষ্টরাও বলছেন, প্রযুক্তিগত আধুনিকায়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ডিএসইর মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে লেনদেনের নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। বর্তমান প্রযুক্তির যুগে যেভাবে অ্যাপসটি ব্যবহার করার কথা ছিলো সেভাবে ব্যবহারকারী বাড়ছে না। তবে এসব বিষয়ে অধিক প্রচারণা ও ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের অ্যাপসটি আরও জনপ্রিয় করে তোলা সম্ভব বলে মনে করছেন তারা।

ডিএসইর তথ্য অনুসারে, ২০১৬ সালের ৯ মার্চ চালু হওয়া ডিএসই মোবাইল অ্যাপসে চলতি বছরের ২ জুন পর্যন্ত ৪৫ হাজার ৪৫২ জন রেজিস্ট্রেশন করেছেন। অ্যাপস চালুর হওয়ার এক বছরে ২০১৭ সালে ৯ মার্চ দাঁড়ায় ১০ হাজার ৪১১ জন, ২০১৮ সালের মার্চে দাঁড়ায় ২৭ হাজার ২৩১ জনে।

রেজিস্ট্রেশন করার বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৪৫ হাজার। অর্থাৎ প্রতি মাসেই নতুন বিনিয়োগকারী সেবাটি ব্যবহার করার জন্য রেজিস্ট্রেশন করছেন। তবে প্রত্যাশা অনুসারে সেই সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে না।

শুধু তাই নয়, সাড়ে ৪৫ হাজার জনের মধ্যে শেয়ার কেনাবেচার জন্য অর্ডার দিয়েছেন ২৫ হাজার ৩৪৫ জন। এরমধ্যে শেয়ার বেচাকেনা অর্ডার কার্যকর করেছেন ১৬ হাজার ২৬২টি। কিন্তু লেনদেনে করেছেন সামান্যই।

যেভাবে মোবাইল অ্যাপসে যুক্ত হওয়া যায়:
ডিএসইর মোবাইল অ্যাপসটি ব্যবহারে আগ্রহীদের ভালো স্মার্টফোন ব্যবহার করতে হয়। অ্যাপসটি ব্যবহারের আগে নিজ নিজ ব্রোকারেজ হাউজ বা মার্চেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হয়। এজন্য প্রথমে বিনিয়োগকারীকে ব্রোকার হাউজে গিয়ে মোবাইল অ্যাপসের কোনো একটি নির্দিষ্ট সংস্করণের জন্য আবেদন করতে হবে। পরবর্তীতে ব্রোকারেজ হাউজ সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীর ই-মেইলে মোবাইল অ্যাপসের লিঙ্ক পাঠাবে, যেটি ডাউনলোড করে একজন বিনিয়োগকারী মোবাইল অ্যাপস চালু করতে পারবেন। এজন্য বিনিয়োগকারীকে সামান্য ফি দিতে হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর