জিডিপির ৫ শতাংশের মধ্যে থাকছে না বাজেটের ঘাটতি

বাজেট, অর্থনীতি

মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা, বার্তা২৪.কম | 2023-08-24 09:47:15

সব কিছু ঠিক থাকলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন। এ বছর প্রস্তাবিত বাজেটের মোট আকার হতে পারে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। যা মোট জিডিপির ১৮ দশমিক ১৩ শতাংশ।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত এই বাজেটে ঘাটতি থাকছে জিডিপির ৫ শতাংশের মধ্যে। আন্তজার্তিক মুদ্রা তহবিলের শর্তের কারণে বাজেট আকার জিডিপির ৫ শতাংশের রাখা হচ্ছে। তবে এবার এটা আর ৫ শতাংশের মধ্যে থাকছে না। মোট জিডিপি ২৮ লাখ ৮৫ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা দিয়ে মোট বাজেটকে ভাগ করলে আগামী বাজেটের আকার দাঁড়ায় ৫ দশমিক ০৪ শতাংশ। তার ফলে সরকার আইএমএফের ঋণের শর্ত ভঙ্গ করতে যাচ্ছে।

সে দিক থেকে হিসাব করলে এবারের বাজেটে ঘাটতি থাকতে পারে কমবেশি ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘাটতির তুলনায় ২০ হাজার ১৫ কোটি টাকা বেশি বা ১৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি ছিল কম বেশি ১ লাখ ২৫ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সরকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি না বাড়িয়ে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এই ঘাটতি মেটানোর চেষ্টা করবে। তাতে পুরোপুরি সফল না হলে সে ক্ষেত্রে আবারো সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়া হতে পারে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকার বাজেটে জিডিপির ৫ শতাংশ ঘাটতি খুব বেশি নয়। ঘাটতি বাজেটে জিডিপির ৫ শতাংশের মধ্যেই রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রথমে স্থানীয় ব্যাংক থেকে ঋণ ও বিদেশি ঋণ করে বাজেটের ঘাটতি মেটাতে অর্থ সংগ্রহ করবে। প্রয়োজন হলে সঞ্চয়পত্র থেকেও ব্যবস্থা থেকে ঋণ নেওয়া হবে। প্রয়োজন না হলে নেবে না। সরকার নির্ধারণ করেছে, নতুন বছর সরকার ব্যাংক ও অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ নেবে তা জিডিপির ২ দশমিক ৮ শতাংশ।

চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরও বাজেটের ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নেওয়ার একটা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিল, তা কিন্তু এখনও গ্রহণ করা হয়নি এখন সংশোধিত ঋণের মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকা।

জানা গেছে, বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার আগামী অর্থবছর অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৭৭ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। এর মধ্যে শুধু ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সংগ্রহ করবে ৪৭ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সরকার ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল ৪২ হাজার ২৯ কোটি টাকা। নতুন বাজেটে ৫ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা বেশি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে অর্থ বিভাগ।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নতুন বাজেটে ঘাটতি মোকাবেলায় সরকারের ঋণ ও জিডিপির অনুপাত ক্রমান্বয়ে কমাতে বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৫ শতাংশের মধ্যে রাখা, সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা ও বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ নিশ্চিত করতে সরকারের ব্যাংক ঋণ গ্রহণের পরিমাণ সহনীয় পর্যায়ে রাখা এবং সঞ্চয়পত্রের বিক্রির বিষয়টি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

এ সম্পর্কিত আরও খবর