বিদায়ী বছরে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি বেড়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা

পুঁজিবাজার, অর্থনীতি

মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-25 06:34:39

চার মাস উত্থান আর আট মাস দরপতনের মধ্যদিয়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পার করেছে দেশের প্রধান ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। বিদায়ী এই বছরে মোট ২৩৮ কার্যদিবস লেনদনে হয়েছে। তাতে ডিএসইর তিনটি সূচকের মধ্যে দুটি কমেছে।

পাশাপাশি কমেছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দামও। আর তাতে আগের বছরের চেয়ে প্রায় তের হাজার কোটি টাকার লেনদেন কমেছে। তবে প্রধান সূচক বাড়ায় বিনিয়োগকারীদের লেনদেন পুঁজি বেড়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা।

ডিএসইর তথ্য মতে, তিন সূচকে পথচলা ডিএসইর প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ গত বছরের চেয়ে ১৬ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৪২১ পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে। আর তাতে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি অর্থাৎ বাজার মূলধন বেড়েছে ১৫ হাজার ৮১ কোটি ৫৯ লাখ ৭২ হাজার ৪৫৪ টাকা। যা শতাংশের হিসেবে বেড়েছে ৩ দশমিক ৯২ শতাংশ।

তবে ডিএসই’র বাকি দুটি সূচকই কমেছে। এর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক গত বছরের চেয়ে ৩০ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২৯ পয়েন্ট। অন্যদিকে শরিয়াহ সূচক ১৯ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৪৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। 

২০১৭-১৮ অর্থবছরের তুলনায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিনিয়োগকারীদের ১৫ হাজার ৮১ কোটি ৫৯ লাখ ৭২ হাজার ৪৫৪ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৯৯ হাজার ৮১৬ কোটি ৩৭ লাখ ৬১ হাজার ৯২১ টাকায়।

আর তাতে বিনিয়োগকারীদের লেনদেন হয়েছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ১৯৩ কোটি ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৯৩৮ টাকা। এর আগের বছর ২৪৬ কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১ লাখ ৫৯ হাজার ৮৫ কোটি ১৯ লাখ ১৬ হাজার ৪৩৮টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের চেয়ে লেনদেন কমেছে ১২ হাজার ৮৯২ কোটি ১৪ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ টাকা। যা শতাংশের হিসেবে কমেছে ৮ দশমিক ১০ শতাংশ।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারে চলছে আস্থা ও তারল্য সংকট। এই সংকটে ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা হাতগুটিয়ে রয়েছে। তাতে দেশি বিনিয়োগের পাশাপাশি গত বছরের বিদেশিরা ১৮৩ কোটি ৭০ লাখ ৮৪ হাজার ৯১৭টাকার কম বিনিয়োগ করেছে। যা সর্বশেষ আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

সার্বিক বিষয়ে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাকিল রিজভী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কিছুদিন পুঁজিবাজারে নেতিবাচক ধারায় লেনদেন হয়। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতিকে কেন্দ্র করে নতুন করে আবারও দরপতন শুরু হয়।’

এই ইস্যুর পাশাপাশি প্লেসমেন্ট, উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার বিক্রির হিড়িক এবং নতুন অর্থবছরের বাজেটকে কেন্দ্র করে পুঁজিবাজারে দরপতন চলছে। আর দরপতনে বিদেশিরা ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও চুপচাপ বসে আছে। ফলে চাঙ্গা হচ্ছে না পুঁজিবাজার বলে মনে করেন তিনি।

এছাড়াও প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে আসা নতুন ১৪ কোম্পানি ৫৭১ কোটি ৯০ টাকা এবং বোনাস শেয়ার মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে তুলে নেওয়ার কারণে চাহিদার তুলনায় শেয়ার বেশি হয়েছে। ফলে প্রতিনিয়তই কমছে লেনদেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর