প্রধানমন্ত্রীকে বিনিয়োগকারীদের ১৫ দাবির স্মারকলিপি

পুঁজিবাজার, অর্থনীতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-27 00:27:54

পুঁজিবাজার স্থিতীশীল করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ১৫ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি দিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বিকেলে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে গিয়ে নিয়োগকারীরা ওই স্মারকলিপি দেন।

বিনিয়োগকারীদের পক্ষে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজানুর রশিদ চৌধুরী স্মারকলিপি প্রদান করেন। বিষয়টি বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে নিশ্চিত করেছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক।

তিনি বলেন, চরম দুবস্থা থেকে মুক্তির পাশাপাশি স্থিতিশীল পুঁজিবাজার গঠনের প্রধানমন্ত্রীর দফতরে স্মারকলিপি দিয়েছি। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আমাদের দাবিগুলো গ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ৪ নম্বর গেটে দায়িত্বরত মো. রুহুল আমীন। আমরা আশার করি, দেশের পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেবেন।

এর আগে দুপুরে পুঁজিবাজারে দর পতনের প্রতিবাদে মতিঝিলের রাস্তায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে তারা। এরপর পূর্ব ঘোষণা অনুসারে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের উদ্দেশে রওনা দেন।

বিনিয়োগকারীদের দাবিগুলো হলো-

১. পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যানসহ পুরো কমিশনারদের অপসারণ করে কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে।

২. সিসি আইনের বাস্তবায়ন করতে যে সব কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের ব্যক্তিগত ২ শতাংশ, সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার নেই, ওই সব উদ্যোক্তা পরিচালক ও কোম্পানিগুলোকে শেয়ার ধারণ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

৩। প্লেসমেন্ট শেয়ারের অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে এবং প্লেসমেন্ট শেয়ারের লকইন পিরিয়ড পাঁচ বছর করতে হবে। পুঁজিবাজার স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত সব প্রকার আইপিও, রাইট শেয়ার অনুমোদন দেওয়া বন্ধ করতে হবে।

৪। খন্দকার ইব্রাহিম খালেদের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী শেয়ারবাজার কারসাজির সাথে জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।

৫। জেড ক্যাটাগরি এবং ওটিসি মার্কেট বলতে কোনো মার্কেট থাকতে পারবে না। কোম্পানি আইনে কোথাও জেড ক্যাটাগরির ও ওটিসি মার্কেটের উল্লেখ নেই।

৬। ইস্যু মূল্যের নিচে অবস্থান করা শেয়ারগুলো নিজ নিজ কোম্পানিগুলোর পরিচালনা পর্ষদকে ইস্যু মূল্যে শেয়ার বাইব্যাক করতে হবে। বাইব্যাক আইন পাস করতে হবে।

৭। পুঁজিবাজারের প্রাণ মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোকে পুঁজিবাজারে সক্রিয় হতে বাধ্য করুন এবং প্রত্যেক ফান্ডের নূন্যতম ৮০ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে হবে।

৮। সাধারণ বিনিয়োগকারী আইপিও কোটা ৮০ শতাংশ করতে হবে এবং তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে ১০ শতাংশ হারে লভ্যাংশ প্রদান করতে হবে।

৯। জানুয়ারি ২০১১ থেকে জুন ২০১৯ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মার্জিন লোনের সুদ সম্পূর্ণ মওকুফ করতে হবে।

১০। পুঁজিবাজারে অর্থের যোগান বৃদ্ধির জন্য সহজ শর্তে অর্থাৎ ৩ শতাংশ সুদে ১০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে। যা আইসিবি, বিভিন্ন মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকার হাউজের মাধ্যমে ৫ শতাংশ হারে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা লোন হিসাবে বিনিয়োগের সুযোগ পাবে।

১১। অপ্রদর্শিত অর্থ বিনা শর্তে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ দিতে হবে।

১২। জীবন বিমা খাতের বিপুল অলস ও সঞ্চিত অর্থের ৪০ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে বাধ্য করুন।

১৩। জীবন বাচাতে এবং ন্যায্য দাবিতে আন্দোলনরত সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিরুদ্ধে সব প্রকার মামলা প্রত্যাহার ও পুলিশি হয়রানি বন্ধ করতে হবে।

১৪। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বিপরীতে বাংলাদেশ স্টক এক্সচেঞ্জ নামে বিকল্প স্টক এক্সচেঞ্জ করতে হবে, এর ফলে কারসাজি বন্ধ করা যাবে।

১৫। পাবলিক ইস্যু রুলস ২০১৫ বাতিল করতে হবে।

আরও পড়ুন: দরপতনের প্রতিবাদে বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ

এ সম্পর্কিত আরও খবর