দশ শিল্প গ্রুপের খেলাপি ঋণ ১৫ হাজার কোটি টাকা

, অর্থনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 22:20:43

ঢাকা: দেশের শীর্ষ দশটি শিল্প গ্রুপ ঋণের পুনর্গঠন সুবিধা নিয়েও কিস্তি পরিশোধ না করায় আবারও খেলাপি হয়ে পড়েছে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ। এসব প্রতিষ্ঠানের কারণেই খেলাপি ঋণ প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার ঘরে পৌঁছাতে যাচ্ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে,তিন মাসের ব্যবধানে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৪ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা। গত বছরের ডিসেম্বর মাস শেষে খেলাপি ঋণ ছিলো ৭৪ হাজার ৩শ ৩ কোটি টাকা। চলতি বছরের মার্চ মাস শেষে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৮ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকায়। যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ১০ দশমিক ৭৮ শতাংশ। একই সময় ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ৮ লাখ ২২ হাজার ১৩৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।

জানা গেছে, রাজনৈতিক অস্থিরতার অজুহাতে ২০১৫ সালে ১০ শিল্প গ্রুপের প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ পুনর্গঠন হয়। এর মধ্যে অধিকাংশ গ্রুপই খেলাপি হয়ে পড়েছে। আর এসব গ্রুপ আদালতের আশ্রয় নেওয়ায় ব্যাংকগুলো কোনো আইনি ব্যবস্থা নিতে পারছে না। এ কারণে আদায়ও হচ্ছে না  ঋণ।

এ বিষয়ে সম্প্রতি এক গোলটেবিল বৈঠকে সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেছেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের বিতরণ করা  ঋণ খেলাপি হয়েছে। ব্যাংকের পক্ষ থেকে আদায় করার উদ্যোগ নিলে আদালতে গিয়ে তা স্থগিতাদাশে জারি করা হচ্ছে। বিচার ব্যবস্থার শ্লথ গতির ফলে হাজার হাজার কোটি টাকা আদায় হচ্ছে না। ব্যাংকগুলো টাকা আদায়ে অর্থঋণ আদালতে মামলা করলেও তা আটকে আছে।

২০১৫ সালে ঋণ পুনর্গঠন হলেও এসব ঋণের প্রথম কিস্তি পরিশোধ শুরু হয় ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। ত্রৈমাসিক কিস্তি হওয়ায় ইতিমধ্যে সবার তিন কিস্তি পরিশোধের সময় শেষ হয়েছে। আইন অনুযায়ি দুই কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলেই খেলাপি হয়ে যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রাম ভিত্তিক এসএ গ্রুপ,রতনপুর গ্রুপ ও ঢাকার কেয়া গ্রুপ,নারায়নগঞ্জের এমআর গ্রুপ কিস্তি পরিশোধ করছে না। ফলে এসব গ্রুপের নাম নতুন করে খেলাপির তালিকায় উঠেছে।

২০১৪ সালের আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে এই গ্রুপগুলোর সব ঋণ নতুন করে পুনর্গঠনের প্রস্তাব দেয়া হয়। প্রস্তাবে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারন দেখিয়েব্যবসা চালানো যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়। তাই ৫শ কোটি টাকা পর্যন্ত গ্রহিতাদের ঋণ পুনর্গঠনের সুবিধা চাওয়া হয়।

ঋণখেলাপিদের সাধারনতো ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়। তবে এ জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা দিতে হয়। তবে ব্যবসায়ীরা শর্ত মেনে পুনঃতফসিলে আগ্রহী ছিলেন না। এ কারণে ঋণ পুনর্গঠনে সুবিধা দেওয়া হয় যাতে করে নগদ টাকা জমা দেয়ার চাপ কমে আসে।

প্রস্তাব অনুযায়ি ঋণ পুনর্গঠন সুবিধা দেওয়া হলেও এখন অনেক গ্রুপই ঋণ ফেরত দিচ্ছে না। অবশ্য ব্যাংকিং সূত্রগুলো বলছে, আশির দশক থেকে শুরু হয়ে এখনপর্যন্ত বারবার অনেক শিল্প গ্রুপকে সুবিধা দেওয়া হলেও তারা বরাবরই খেলাপি হয়ে যান।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ এ নিয়ে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক তো আর স্বাধীন প্রতিষ্ঠান নয়। এর জন্য সরকারের সঙ্গেঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের চাপে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যবসায়ীদের এ সুবিধা দিতে বাধ্য হয়েছিলো। আমরা তখনই বলেছিলাম এসব টাকা আদায় করা যাবে না। এখন তাই প্রমাণ হচ্ছে।

পুনর্গঠন সুবিধা দেওয়া ব্যাংকগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসএ গ্রুপ ৯২৮ কোটি টাকা, এমআর গ্রুপ ৫৭২ কোটি টাকা, এমআর গ্রুপের জুলিয়া সোয়েটার১৮৪ কোটি টাকা, কেয়া গ্রুপ ৩৬ কোটি টাকা, এসএ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান এস এ অয়েল ও সামান্নাজ সুপার অয়েল ১১৫ কোটি টাকা পুনর্গঠনের সুবিধা নিয়েছে।রতনপুর গ্রুপের পক্ষে তিন ব্যাংকে পুনর্গঠন হয় ৮১২ কোটি টাকার ঋণ। এর মধ্যে জনতা ব্যাংকের ৪৮০ কোটি টাকা ও সোনালী ব্যাংকের ২৭৫ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের শেষ দিকে বিপুল অঙ্কের ঋণ পুনঃতফসিলের মাধ্যমে নিয়মিত ও আদায় জোরদার করায় খেলাপি ঋণ এক অঙ্কের ঘরেনেমে আসে। কিন্তু চলতি বছরে খেলাপি ঋণ

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর