অভিজাত এলাকার বাজার: সবজি-মাছের দাম আকাশচুম্বী

ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-31 14:08:10

রাজধানীর বেশিরভাগ কাঁচাবাজারেরই সাপ্তাহিক বাজারদর প্রায় সমানই থাকে। দামের পার্থক্য বলতে ২ থেকে ৫ টাকা, এর বেশি হয় না। তবে রাজধানীর গুলশান, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ও বাড্ডার কাঁচাবাজারের সবজি ও মাছের দাম শুনলে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য। কেননা এখানে অন্যান্য বাজারের চেয়ে সবজিতে দামের পার্থক্য ৫০ থেকে ১০০ টাকা। আর মাছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা।

শুক্রবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর এসব অভিজাত এলাকাগুলোর বাজার ঘুরে এমন তথ্য জানা গেছে।

বাজারগুলো সরেজমিন ঘুরে দেখে গেছে, প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা যা রাজধানীর অন্যসব বাজারে ১০০ টাজা, ৪০ টাকার বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, ৪০ টাকার ঢেঁড়স ৭০ টাকায়, কেজি প্রতি ৩০ টাকার শশা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, ৪০ টাকার ঝিঙ্গা ও চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা কেজি করে।

এছাড়া টমেটো প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা, পটল ৬০ থেকে ১০০ টাকা, প্রতি পিস ফুল এবং বাঁধাকপি ৫০-৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে যা রাজধানীর অন্যসব বাজার থেকে ৩০-৪০ টাকা বেশি।

দামের এমন পার্থক্যের কারণ জানতে চাইলে বিক্রেতারা বলেন, এখানকার ক্রেতারা উচ্চবিত্ত, তারা দামের চেয়ে পণ্যের মানের দিকেই বেশি নজর দেন। আর এ বিষয়টিকে মাথায় রেখে সবচেয় ভালো পণ্যগুলোই এখানে আনা হয়। আর তাই দামটাও বেশি হয়।

এ প্রসঙ্গে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা জিন্নাত বলেন, তিন প্রকার শিম বাজারে রয়েছে। একটি ৫০ টাকা, একটি ৬০ টাকা ও অন্যটি ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমাদের বাজারের ক্রেতারা উচ্চবিত্ত ক্রেতা। তারা ভালো মানের সবজি চান। তাই বাজারে ১৬০ টাকার শিমটিই আনা হয়। কিন্তু অন্যসব বাজারের ৫০-৬০ টাকা কেজি দরের শিম বিক্রি হয় বেশি।

তিনি বলেন, এখানে দাম বেশি, কথাটি সত্য নয়। আমরা সবচেয়ে ভালো সবজিগুলো নিয়ে আসি। ভালো পণ্যের দামতো কিছুটা বেশি হবেই। এছাড়া এই বাজারের একটা দোকান নিতে আমার ২০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এর প্রভাবওতো কিছুটা হলেও দামের ওপর পড়ে।

কথা হলো বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার কাঁচাবাজারে আসা মো. সুলেমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ওরাতো বলে এখানে নাকি সবচেয়ে ভালোটাই আনে। তাই দাম বেশি। আশেপাশে ভালোমানের কোনো বাজার নেই তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই ওদের কাছ থেকে কিনতে হয়।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, কালবাউশ প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ টাকা কেজিপ্রতি, বোয়াল ৭০০ টাকা ও চিংড়ি প্রতিকেজি ৬৫০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা রাজধানীর অন্যসব মাছের বাজার থেকে কেজি দরে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি।

এ বিষয়ে রাজধানীর বাড্ডা কাঁচাবাজারের মাছ বিক্রেতা মো. আমিন বলেন, আমাদের বাজারের সব মাছ তাজা এবং বড় সাইজের। তাছাড়া এখানকার কোনো মাছে ফরমালিন নাই। ভালো জিনিসের দামটাতো একটু বেশি হবেই।

তিনি বলেন, ৩ থেকে ৪ কেজি ওজনের একটি রুই মাছকে ড্রামে জীবিত রাখতে অনেক খরচ হয়। এছাড়া নদীর মাছও থাকে বেশি। ভালো মানের মাছ আনতে আমাদের খরচটাও বেশি হয়। তাই দামটাও অন্যান্য বাজারের চেয়ে একটু বেশি।

তবে বিক্রেতার এমন কথার সঙ্গে একমত হতে পারলেন না ক্রেতা শাহজাহান। তিনি বলেন, এই বাজারে মাছের যা সাইজ অন্য বাজারেও প্রায় একই। এখন সব বাজারেই মাছ ড্রাম জীবিত রাখা হয়। কিন্তু গুলশান ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার মাঝখানে বাজারটি হওয়ায় বিক্রেতারা দাম বেশি হাঁকান। কারণ তারা জানেন যে এখানের ক্রেতারা দাম বেশি হলেও কিনবে।

সবজি ও মাছের দামের ক্ষেত্রে আকাশ-পাতাল পার্থক্য দেখা গেলেও মাংস, চাল, ডাল, পেঁয়াজ থেকে শুরু করে অন্যসব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। ৫-৬ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে।

আরও পড়ুন: সবজির দামে পাইকারি আর খুচরায় বিস্তর ফারাক

এ সম্পর্কিত আরও খবর