লোকসান জেনেও গ্রাহকের টাকায় জমি কিনছে প্রগতি লাইফ

ব্যাংক বীমা, অর্থনীতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-29 00:12:02

কেবল মালিকদের স্বার্থ রক্ষায় লোকসান জেনেও গ্রাহকের টাকায় জমি কিনছে বেসরকারি লাইফ বীমা কোম্পানি প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। এমনটাই অভিযোগ করেছেন একজন শেয়ারহোল্ডার।

জমি কেনার অনুমোতি না দিতে সম্প্রতি ওই শেয়ারহোল্ডার বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, গুলশানে ৬৫ কোটি টাকা দিয়ে ৮.০৬ কাঠা জমি কিনবে বলে ঘোষণা দিয়েছে প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স। কিন্তু এই জমি কেনা হলে কোম্পানিটির আর্থিক ভিত দুর্বল হয়ে পড়বে। কতিপয় প্রভাবশালী পরিচালক ব্যক্তিগতভাবে আর্থিক লাভবান হওয়ার জন্য জমি কেনার উদ্যোগ নিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

অভিযোগপত্রে আরো উল্লেখ করা হয়, জমির মালিক সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ আলম। তিনি প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রভাবশালী পরিচালক আবদুল আউয়াল মিন্টুর ঘনিষ্ট। বিশেষভাবে লাভবান হওয়ার জন্যই আবদুল আউয়াল মিন্টু প্রগতি লাইফের গ্রাহকের টাকায় এ জমি কিনতে চান। এরইমধ্যে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশের মাধ্যমে জমি কেনার ঘোষণা দিয়েছে কোম্পানিটি।

এতে আরো বলা হয়েছে, এ জমি কেনা হলে বছরে কোম্পানিটির বিনিয়োগ থেকে আয় কমে যাবে প্রায় ৮ থেকে ১০ কোটি টাকা। ফলে কোম্পানিটির আর্থিক ভিত দুর্বল হয়ে পড়বে। কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার ও পলিসিহোল্ডারে স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হবে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, কোম্পানিটির জীবন বীমা তহবিল রয়েছে ৫৫৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে গত বছর শেয়ার বাজারের বিনিয়োগে লোকসান হয়েছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা।

এই হিসাবে কোম্পানির প্রকৃত পক্ষে লাইফ ফান্ড রয়েছে ৫২৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি সিকিউরিটিজ বন্ড, বন্ড ও শেয়ার বাজার ও অন্যান্য খাতে মোট বিনিয়োগ রয়েছে প্রায় ৪৮৩ কোটি টাকা।

২০১৮ সালে বিনিয়োগ থেকে আয় হয়েছে ৩৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা। যা লাইফ ফান্ডের ৭.৬৪ শতাংশ। গুলশানের ওই জমি কেনা হলে জমির দাম ও অন্যান্য খরচসহ মোট ব্যয় হবে প্রায় ১০০ কোটি টাকা।

এই হিসাবে লাইফ ফান্ড ১০০ কোটি টাকা কমে গেলে বিনিয়োগ আয় কমে যাবে বছরে ৭ থেকে ৮ কোটি টাকা। অথচ জমির ওই বিনিয়োগ থেকে বছরে বছরে ৭ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ আয় হবে এর কোনো নিশ্চয়তা নেই।

ওই অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, বেশিরভাগ লাইফ বীমা কোম্পানি জমিতে বিনিয়োগ করে লোকাসানে রয়েছে। ফলে তারা মেয়াদ শেষে সময়মতো গ্রাহকদের টাকা দিতে পারছে না। এ অবস্থায় জমি বিক্রি করে গ্রাহকদের টাকা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।

এরপর তারা জমি বিক্রি করতে পারছে না। এমন অবস্থায় জমি কেনার অনুমোদন না দিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর