ডিজিটাল দেশের এনালগ সংস্থা বাতাঁবো!

, অর্থনীতি

ঊর্মি মাহবুব, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-24 11:59:05

 

ঢাকা: ডিজিটাল দেশ হিসেবে বিশ্বের অন্য দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে বাংলাদেশ। তারপরও সরকারি সংস্থা বাতাঁবোর (বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড) অবস্থা ঠিক যেন বিপরীত। তাঁত শিল্প সংক্রান্ত সরকারের গত প্রায় পাঁচ বছরের উন্নয়নমূলক কোনো কাজের তথ্য নেই বাতাঁবোর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটটিতে।  

শুধু তাই নয় বর্তমান কর্মকর্তাদের তালিকায়ও রয়েছে পুরানোদের নাম। রফতানির সর্বশেষ তথ্য হিসেবও রয়েছে পাঁচ বছরের পুরানো হিসাব।

বিগত পাঁচ বছরে সরকারের সাফল্য বলতে আছে, ২০০৯-১৩ অর্থ বছরের কার্যক্রমের বর্ণনা। রফতানির সর্বশেষ তথ্য হিসেবে ২০১২-১৩ অর্থ বছরের আয় দেখানো হয়েছে ১ কোটি ৭৪ লাখ ৮৬ হাজার টাকা।

অন্যদিকে বিগত পাঁচ বছর হিসেবে দেখানো হয়েছে, ২০০৮-০৯ অর্থ বছর থেকে ২০১২-১৩ অর্থ বছরের রফতানি আয়। বিগত পাঁচ বছরের রফতানি আয় হিসেবে দেখানো হয়েছে ৩৯ কোটি টাকা। পাঁচ বছর পর ইপিবির তথ্য অনুযায়ী,  এই আয় বেড়েছে কয়েকগুণ। কিন্তু সরকারের সেই সাফল্যের কথা কোথায় উল্লেখ নেই ওয়েবসাইটটিতে।

তাছাড়া বাতাঁবোর ফোকাল পয়েন্টে যেসব কর্মকর্তার যোগাযোগের ঠিকানা দেয়া হয়েছে তাতে বিভ্রান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষরা। বাতাঁবোতে বর্তমানে নেই এমন কর্মকর্তার নামও রয়েছে ওয়েবসাইটির ঠিকানায়। ওয়েবসাইটে তথ্য অধিকার সংক্রান্ত, শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়ন ও অভিযোগ সংক্রান্ত কর্মকর্তা হিসেবে নাম রয়েছে মোঃ আলমগীর হোসেনের। কিন্তু আলমগীর হোসেন বর্তমানে সরকারের সমবায় অধিদপ্তরে কর্মরত রয়েছেন।

মোঃ আলমগীর হোসেন বার্তা২৪কে বলেন, আমি আগে বাতাঁবোতে ছিলাম। তবে বর্তমানে আমি আর সেখানে নেই। এখন আমি আছি সমবায় অধিদপ্তরে। এখনো ওয়েবসাইটে আমার নামই কি করে অভিযোগ সংক্রান্ত কর্মকর্তা হিসেবে রয়ে গেছে তা আমি বলতে পারবো না।

অন্যদিকে গত পাঁচ বছর ধরে তাঁত বস্ত্র রফতানি বন্ধ রয়েছে বিএন ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের। কিন্তু এখনো বিএন ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের নাম তাঁত বস্ত্র রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান হিসেবে রয়েছে বাতাঁবোর ওয়েবসাইটে।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিএন ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার সঞ্জয় কুমার দাস বার্তা২৪.কম কে বলেন,  আমরা ২০০২ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত জামদানি শাড়ি রফতানি করেছি ভারতে। কিন্তু তারপর আমরা রফতানি কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছি প্রায় ৭ বছরের বেশি সময় ধরে।

রফতানিকারকদের বর্তমানে কোনো তথ্য হালনাগাদ না করা হলেও ওয়েবসাইটটিতে ওপরে ডান পাশে লেখা রযেছে সর্বশেষ হাল নাগাদ ২০ জুন, ২০১৮।

তবে এসব বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ বাতাঁবোর দায়িত্বপ্রাপ্তরা। এ বিষয়ে বাতাঁবোর চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এখন এ বিষয়ে কথা বলতে পারবো না।

মানুষ এখন কোনো বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে প্রথমেই ইন্টারনেটের সহায়তা নেন। হাতের মুঠোর যেন চলে এসেছে পুরো বিশ্ব। ইন্টারনেটের মাধ্যমে অন্যান্য মন্ত্রনালয় বা সংস্থার সব তথ্য যখন নিমিষেই মানুষের হাতে মুঠোয় চলে আসে চোখের ইশারায় তখন বাতাঁবোর নিজস্ব ওয়েবসাইটে গেলে বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কাজগুলোর তথ্য হিসেবে পাওয়া যাবে সর্বশেষ ২০১৩ সালের সকল কার্যক্রম।

এ সম্পর্কিত আরও খবর