আইন মানছে না ইমামি, মামলা করবে শ্রম কল্যাণ তহবিল!

, অর্থনীতি

ঊর্মি মাহবুব, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-26 02:56:42

ঢাকা: বাংলাদেশে ব্যবসা করলেও এই দেশের শ্রম আইন যেন মানতে নারাজ ইমামি ফেয়ার অ্যান্ড হ্যান্ডসাম কোম্পানি। ফলে আইন অমান্যের দায়ে এবার ইমামির বিরুদ্ধে সরাসরি মামলা করার কথা ভাবছে শ্রম কল্যাণ তহবিল।

২০০৬ সালের শ্রম আইন অনুযায়ী, যেকোনো প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী সম্পত্তি ১ কোটি টাকা বা তার বেশি হলে নিট মুনাফার ৫ শতাংশ পাবে কর্মীরা। এই ৫ শতাংশ অর্থের মধ্যে ৮০ শতাংশ সরাসরি ভাগ করে দেওয়া হবে প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মধ্যে।  বাকি ২০ শতাংশের মধ্যে ১০ শতাংশ দিয়ে প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে শ্রমিকদের জন্য আপদকালীন ফান্ড ও বাকি ১০ শতাংশ জমা দিতে হবে সরকারের শ্রম কল্যাণ তহবিলে। যার কোনোটিই করছে না ইমামি ফেয়ার অ্যান্ড হ্যান্ডসাম।

সম্প্রতি বিষয়টি নজরে এসেছে শ্রম কল্যাণ তহবিলের। সূত্র জানায়, চলতি বছরের শুরুর দিকে এ বিষয়ে একটি চিঠি শ্রম কল্যাণ তহবিল থেকে পাঠানো হয় ইমামি ফেয়ার অ্যান্ড হ্যান্ডসামের বাংলাদেশ কার্যালয়ে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের রেজিস্টার্ড একটি প্রতিষ্ঠান। তাই তাদের নিট লাভের অংশ কর্মীদের ও শ্রম কল্যাণ তহবিলে পরিশোধ করতেই হবে। প্রতিষ্ঠানটি কর্মীদের তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে।

চিঠি পাওয়ার পর ইমামির উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা তাদের আইনজীবীসহ বৈঠক করেন শ্রম কল্যাণ তহবিলের মহাপরিচালক ড. এম.এম.এম. আনিসুল আওয়ালের সঙ্গে। এ সময় শ্রম কল্যাণ তহবিলের মহাপরিচালক শ্রম আইনের বিষয়টি পূর্ণব্যাখ্যা করে জানান, ইমামিকে শ্রম কল্যাণ তহবিলে অর্থ দিতেই হবে। শুধু তাই নয় ইমামির বাংলাদেশ কার্যালয়ের কর্মীদেরও নিট লাভের অংশ দিতেই হবে।

কিন্তু তারপরও শ্রম কল্যাণ তহবিলের কথা আমলে নেয়নি প্রতিষ্ঠানটি। পাঁচ মাসেও এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি ইমামি।  এ প্রেক্ষিতে জুন মাসে শ্রম কল্যাণ তহবিল থেকে এ বিষয়ে দ্বিতীয় চিঠিটি পাঠানো হয় ইমামিকে। কিন্তু এক মাস পেরিয়ে গেলেও তাদের দিক থেকে তেমন কোনো ইতিবাচক সাড়া পায়নি শ্রম কল্যাণ তহবিল। আর তাই এবার ইমামি ফেয়ার অ্যান্ড হ্যান্ডসামের বিরুদ্ধে মামলা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্রম কল্যাণ তহবিল।

এ বিষয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক ড. এম.এম.এম. আনিসুল আওয়াল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘একটি দেশে তারা ব্যবসা করছে আর সেই দেশের আইন মানবে না তা হতে পারে না। শ্রম কল্যাণ তহবিলের প্রাপ্য পরিশোধের জন্য ইমামিকে আমরা দুই দফায় চিঠি দিয়েছি। পাশাপাশি শ্রমিকদের পাওয়া অর্থও তাদের পরিশোধ করতে হবে। আর বড়জোর আমরা তাদের এক সপ্তাহ সময় দিব। এর পরে আর কোনো চিঠি চালাচালি করবো না। সরাসরি আমরা হাইকোর্টে মামলা করবো।‘

এসব বিষয়ে শ্রম আইন বিশেষজ্ঞ জাফরুল হাসান শরীফ জানান, ইমামি কিছুতেই শ্রমিকদের নিট লাভের মুনাফা প্রদান থেকে সরে যেতে পারে না। কারণ তারা বাংলাদেশের কোম্পানি আইনে রেজিস্টার করেছে। আর তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যে লাভ হচ্ছে তা অডিট রিপোর্ট দেখলেই বোঝা যায়। এ বিষয়ে শ্রম আইন থেকে তারা রেহাই পাবে না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর