প্রতিযোগিতামূলক বাজার হলেও পোশাক ব্যবসায়ীদের যথাসাধ্য বার্গেনিং (দরকষাকষি) করার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বলব, আমরা খুব অল্প টাকায় আমাদের পোশাক বিক্রি করি। যারা আমাদের পোশাক কিনেন তারা যদি পণ্যের দাম মাত্র ১ ডলার করেও দাম বাড়ায়, তাহলেও আমরা এ খাতকে আরও উন্নত করতে পারতাম। এখানে একটা প্রতিযোগিতার ব্যাপার থাকে বলে আমাদের ব্যবসায়ীরা হয়ত বার্গেনিং করে না, তবে আমার মনে হয় কিছুটা বার্গেনিং করা উচিত।’
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বস্ত্র দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বৈদেশিক ক্রেতা ও বায়ারদের এ বিষয়ে আপনাদের বলা উচিত। আমি নিজে যেসব দেশে যাই এ বিষয় নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলি। আমি নিজে একা বললে হবে না, আপনাদেরও এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে।’
বস্ত্র খাতের গুরুত্ব জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পাট এমন একটি কৃষিপণ্য যা পরিবেশবান্ধব। আমরা পাটের জীবনরহস্য উন্মোচন করেছি। এখন পাট দিয়ে বিভিন্ন পণ্যের পাশাপাশি বস্ত্র নির্মাণের কাজও এগিয়ে চলেছে। এর বিকাশে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, তাঁত শিল্প আমাদের দীর্ঘদিনের একটা ঐতিহ্য। এক সময় আমাদের দেশে যে মসলিন ছিল, তার সুনাম ছিল, ধীরে ধীরে তা হারিয়ে যেতে শুরু করেছে। আমরা মুসলিনের জন্য গবেষণার কাজ শুরু করেছি, আবার যাতে সুনাম ফিরিয়ে আনা যায়। তাঁতীদের উন্নয়নে পদক্ষেপ নিয়েছি। যে সরঞ্জাম প্রয়োজন তার ওপর শুল্কমুক্ত সুবিধা দিচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের রেশমের সারা বিশ্বব্যাপী সুনাম ছিল। সরকার সিল্ক ও রেশমের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। রাজশাহীতে ১৯টি লুম চালু করা হয়েছে। সুনাম ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ রাষ্ট্রীয় খাতে গেলেই অজানা কারণে আমরা লাভের মুখ দেখি না। জানি না এর পেছনে মূলত কী কারণ। তাই বেসরকারি খাতের দিকেই আমাদের আগ্রহ বেশি। তাদেরও এগিয়ে আসতে হবে।’
রফতানি বহুমুখীকরণ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন পোশাক বাজারে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে। একটা বিষয় নজর দিতে হবে- তা হলো একই জিনিস সব সময় চলে না। রফতানি ক্ষেত্রে বহুমুখীকরণ, পোশাকের ক্ষেত্রেও ডিজাইন রং-এ পরিবর্তন আনতে হবে। নতুন নতুন বাজার খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে হবে। পণ্যের রং, ডিজাইন এবং চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের উৎপাদনকে বহুমুখী করা প্রয়োজন। এজন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দরকার। বাজার ধরতে করতে গেলে পণ্যের বৈচিত্র্যও দরকার- এটা মনে রাখতে হবে।