ব্যাংক ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশ করার সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন চায় ঢাকার ব্যবসায়ীদের সংগঠন ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।
সংগঠনের সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, ব্যাংক ঋণের ৯ শতাংশ সুদহার বাস্তবায়ন এর আগে বেশ কয়েকবার পিছিয়েছে। এটি নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ মহল পদক্ষেপ নিয়েছে। আমরা চাই, এবার সঠিক সময়ে ৯ শতাংশ ব্যাংক ঋণের সুদহার বাস্তবায়ন হবে।
ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ কোনো সমস্যা নয় বলে মনে করছেন তিনি। বরং বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার অস্বাভাবিক হারে যে ঋণ নিচ্ছে, তা বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহের জন্য কোনো সমস্যা হবে না।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) ডিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংগঠনের সভাপতি।
দেশের সমসাময়িক অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি এবং ২০২০ সালে ডিসিসিআইর বর্ষব্যাপী কর্ম-পরিকল্পনা জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, সরকার ব্যাংক ঋণ নিচ্ছে দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য। অবকাঠামো উন্নয়ন হলে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। এতে বেসরকারি খাতে তেমন প্রভাব পড়বে না। কারণ বিদেশে বেসরকারি খাতের ঋণ নেয়ার অনেক সুযোগ রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআইয়ের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ বাশির উদ্দিনসহ সংগঠনের পরিচালকরা।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, অনেকে ঋণ নিয়ে কারখানা স্থাপন করেন। কিন্তু গ্যাস বিদ্যুতের সমস্যার কারণে উৎপাদনে যেতে পারে না। এতে করে সঠক সময়ে ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না। খেলাপি বাড়বে।
এছাড়া জাপান, ভারতসহ অনেক দেশে নন পারফরমিং লোন বেশি রয়েছে এটি তেমন সমস্যা নয় বলে তিনি জানান।
সম্প্রতি ব্যাংকের নির্বাহীরা এসএমই খাত ৯ শতাংশ ঋণের আওতার বাইরে রাখার দাবি করেন। এর বিরোধিতা করে শামস মাহমুদ বলেন, এসএমই ঋণ যেন ৯ শতাংশ সুদহারের আওতার বাইরে না থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে।
পুঁজিবাজার নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর এ হস্তক্ষেপের বিষয়টি তুলে ধরে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, সম্প্রতি পুঁজিবাজারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করেছেন। আমরা বিশ্বাস করি, এতে সমস্যার সমাধান হবে।
তিনি জানান, ২০২০ সালে ডিসিসিআই যে কয়টি খাতের ওপর অগ্রাধিকার দেবে, তার মধ্যে পুঁজিবাজার রয়েছে। বছরটিতে বন্ড মার্কেটের পলিসি উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এতে এক দিকে উদ্যোক্তাদের দীর্ঘ মেয়াদি অর্থের যোগান হবে, অন্যদিকে বন্ডে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারীরা ৫ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন।
পুঁজিবাজারের সমস্যার কারণও তুলে ধরেন ডিসিসিআই সভাপতি। তিনি বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারী উভয়ের মধ্যে ডে-টেডিং মানসিকতা রয়েছে। বন্ড মার্কেটের অভাব রয়েছে। এর সঙ্গে ভালো কোম্পানির অভাব রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে চলতি বছরে দেশের অর্থনীতির অগ্রগতির জন্য ১১টি খাতকে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা জানায় ডিসিসিআই। এর মধ্যে রফতানি বহুমুখীকরণ, জনশক্তি উন্নয়ন, অর্থনীতির অগ্রগতির জন্য কূটনৈতিক সম্পর্ক বাড়ানো, পুঁজিবাজার পুনর্গঠন, জ্বালানি নিরাপত্তা, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব, ইজ অফ ডুইং বিজনেস অগ্রগতি, গবেষণা ও উন্নয়ন, অবকাঠামো ও এসএমই খাতকে জোড় দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।