পুঁজিবাজারে না আসা লাইফ ও নন-লাইফসহ মোট ২৭টি বিমা কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) তলব করেছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।
আগামী বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টায় আইডিআরএ’র কনফারেন্স কক্ষে তাদের তলব করা হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৮টি জীবন বিমা কোম্পানি এবং ৯টি সাধারণ বিমা কোম্পানি রয়েছে।
বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন আইডিআরএ’র সদস্য গোকুল চাঁদ দাস। তিনি বলেন, কেন কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে আসছে না, আসতে কতদিন লাগবে, আসলেই কি পুঁজিবাজারে আসবে না, নাকি আসবে না— এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানবো, তারপর ব্যবস্থা নেব।
বিমা আইন অনুসারে, কোনো বিমা কোম্পানি ব্যবসার লাইসেন্স পাওয়ার পর ব্যবসা শুরুর ৫ বছরের মধ্যে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিওর) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে হয়। তবে যৌক্তিক কোনো কারণ থাকলে আরও ছয় মাস সময় পায়। কিন্তু সাড়ে ৫ বছর পর অবশ্যই পুঁজিবাজারে আসতে হবে।
তবে কিছু কোম্পানি ১০-১৫ বছর ধরে সেই আইন লঙ্ঘন করে বিমা ব্যবসা করছে। তবে নতুন কোম্পানিগুলোর সংখ্যাই বেশি। তারা পুঁজিবাজারে আসছে না। এসব বিমা কোম্পানিগুলোই ক্লেইম দিতে গড়িমসি করছে। দরিদ্র ও কষ্টে উপার্জিত ব্যক্তিদের টাকা লোপাট করে খাচ্ছে।
নির্ধারিত সময়ে তালিকাভুক্ত না হওয়া কোম্পানিগুলো হলো—বায়রা লাইফ, গোল্ডেন লাইফ, হোমল্যান্ড লাইফ, সানফ্লাওয়ার লাইফ, বেস্ট লাইফ, চার্টার্ড লাইফ, এনআরবি গ্লোবাল লাইফ, প্রোটেক্টিভ ইসলামি লাইফ, সোনালী লাইফ, জেনিথ ইসলামি লাইফ, আলফা ইসলামি লাইফ, ডায়মন্ড লাইফ, গার্ডিয়ান লাইফ, যমুনা লাইফ, মার্কেন্টাইল ইসলামি লাইফ, স্বদেশ লাইফ, ট্রাস্ট ইসলামি লাইফ ও এলআইসি বাংলাদেশ।
৯টি সাধারণ বিমা কোম্পানি হলো—ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, সাউদ এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, দেশ জেনরেল ইন্স্যুরেন্স, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স ও সিকদার ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।
কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার মাধ্যমে মূলধনের ৪০ শতাংশ অর্থ আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করবে।
উল্লেখ্য, গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে সভা করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সকল বিমা কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে আসতে তিন মাস সময় বেঁধে দিয়েছিলেন।
এরপর নির্ধারিত সময়ের মধ্য পুঁজিবাজারে না আসলে লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দিয়েছিলেন আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান পাটোয়ারী। কিন্তু আইডিআরএ’র এই ডাকে সাড়া দিয়েছে মাত্র ৯টি কোম্পানি। তারা আইপিওতে আসতে প্রথমিকভাবে আইডিআরএ’র কাছে অনাপত্তি পত্র দাখিল করেছে। বাকি ১৮ কোম্পানি এখনো আবেদন করেনি।
রাষ্ট্রায়ত্ত জীবন বিমা করপোরেশন, সাধারণ বিমা করপোরেশন ও দুটি বিদেশি বিমা কোম্পানিসহ মোট ৭৮টি বিমা কোম্পানি দেশে বিমা ব্যবসা করছে। এর মধ্যে ৩২টি জীবন বিমা, ৪৬টি সাধারণ বিমা এবং দুটি বিদেশি বিমা কোম্পানি রয়েছে। বিদেশি বিমা কোম্পানি দুটি হলো— আমেরিকান লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি বা মেটলাইফ, লাইফ ইন্স্যুরেন্স করপোরেশন অব বাংলাদেশ। এর মধ্যে বর্তমানে ৪৭টি কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত।