‘ব্যাংক বন্ধ হলে আমানতকারীদের লাখ টাকা পাবার সংবাদ গুজব’

ব্যাংক বীমা, অর্থনীতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-28 22:38:46

তফসিলি ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে আমানতের বিপরীতে গ্রাহকরা ১ লাখ টাকা পাবে এই খবর গুজব বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ দ্বারা জনগণকে বিভ্রান্ত বা আতংঙ্কিত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

বুধবার(২৬ফেব্রুয়ারি) জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে ডেকে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে টাকা রেখে সেই প্রতিষ্ঠান অবসায়ন হয়ে গেলে সকল আমানতকারী মাত্র এক লাখ টাকা পাবে এমন খবর গুজব। কোনো ব্যাংক যদি বন্ধ হয়ে যায় সেক্ষেত্রে মোট ১৮০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক আমানতকারীকে এক লাখ টাকা দিয়ে দিবে। প্রথম ৯০ দিনের মধ্যে আমানতকারীরা আবেদন করবেন। পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে টাকা বুঝিয়ে দেয়া হবে। পরবর্তীতে পুরো টাকা আইন অনুযায়ী ফেরত দেওয়া হবে। এ বিষয়ে শঙ্কিত হবার কোনো কারণ নেই।

সিরাজুল ইসলাম জানান, ২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমানত বিমা ট্রাস্ট তহবিলে ৮ হাজার ৭৪৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকা জমা হয়েছে। কোন ব্যাংক বন্ধ হলে আমানতকারীদের প্রথম তিন মাসের মধ্যে এক লাখ টাকা পরিশোধ করা হবে। ১ লাখ টাকা দিলেই ৯২ শতাংশ আমানতকারী টাকা পরিশোধ হয়ে যাবে বলে জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক। সময়ে এই টাকার পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়। এর পরিমাণ আরও বৃদ্ধি করার প্রক্রিয়া চলছে।

তিনি আরও জানান, এর আগে শুধুমাত্র ব্যাংকের আমানতকারীরা বিমা সুবিধা পেতেন। কিন্তু নতুন করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আমানতকারীদের এখানে যুক্ত করা হয়েছে। এখন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সকল আমানতকারীরা এই সুবিধা পাবেন। প্রথমে ব্যক্তি গ্রাহকের টাকা এবং পর্যায়ক্রমে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। সবশেষে টাকা পাবেন প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষ। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আর কোনো ব্যাংক বন্ধ হবে না বলেও আশ্বাস দিয়েছেন মুখপাত্র।

সিরাজুল ইসলাম বলেন, মাত্র ৮ শতাংশ আমানতকারী হিসাব বিমাকৃত নয়, অর্থাৎ ৮ শতাংশ আমানতকারী ঝুঁকিতে আছে। এছাড়া বাকি ৯২ শতাংশ আমানতকারীর হিসাব সম্পূর্ণ বিমাকৃত।

তিনি বলেন, কোনও ব্যাংক যদি বন্ধ হয়ে যায় সেক্ষেত্রে মোট ১৮০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক আমানতকারীকে এক লাখ টাকা দিয়ে দিবে। ৯০ দিনের মধ্যে আমানতকারীরা আবেদন করবেন। পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে টাকা বুঝিয়ে দেয়া হবে। বাকি টাকা পরবর্তীতে বন্ধ হওয়া ব্যাংকের সম্পদ বিক্রি করে আমানতকারীকে পরিশোধ করা হবে।

তিনি বলেন, ১৯৮৪ সালে আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় যে আইন করা হয় সেখানে আমানতের অর্থ ফেরত দেওয়ার পরিমাণ ছিল ৬০ হাজার টাকা। পরবর্তীতে ২০০০ সালে আমানত বিমা আইন প্রবর্তন করে এক লাখ টাকা করা হয়। বর্তমানে এই আইনে আমানতকারীরা এক লাখ টাকা পর্যন্ত পাওয়ার নিশ্চয়তা আছে। তবে সংশোধিত আইনে এটি বাড়িয়ে ২ লাখ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কোনও ব্যাংক অবসায়নের ঘোষণা দিলে অনধিক ১৮০ দিনের মধ্যে আমানতকারীদেরকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের "আমানত বিমা ট্রাস্ট তহবিল" থেকে পরিশোধ করা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর