নতুন করে ৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, এমন সংবাদেই দেশের পুঁজিবাজারে আবারও ধস নামে। সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (১৬ মার্চ) পুঁজিবাজারে ধস দিয়ে দিনের কার্যক্রম শেষ হয়। এদিন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক কমেছে ১৯৬ পয়েন্ট। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক কমেছে ৫৭৭ পয়েন্ট।
বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শঙ্কা ‘নতুন করে করোনায় আক্রান্ত সংখ্যা আরও বাড়বে’ এমন শঙ্কায় গত সাড়ে ৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ধস হয়েছে পুঁজিবাজারে। এর আগে ২০১৩ সালের ২১ অক্টোবর ডিএসইর প্রধান সূচক ছিল ৩ হাজার ৭৬৩ পয়েন্ট। অর্থাৎ প্রায় সাড়ে ৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ধস। ওই দিন ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ২ লাখ ৪২ হাজার ৬৯৮ কোটি ৭১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা।
ডিএসইর তথ্য মতে, সোমবার সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় শুরু হয় লেনদেন। এরপর নতুন করে বাংলাদেশে আরও ৩জনের করোনায় আক্রান্তের খবরে মাত্র ১৫ মিনিটের মাথায় শুরু হয় দরপতন। যা ধসে পরিণত হয়। দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ১৯৬ পয়েন্ট কমে ৩ হাজার ৭৭২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান সূচকের পাশাপাশি অন্যদুই সূচকের মধ্যে ডিএস৩০ সূচক ৬৮ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক কমে ৫২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
এর ফলে টানা তিনদিন পুঁজিবাজারে দরপতন হলো। আর তাতে ডিএসইর সূচক কমেছে ৪৫৯ পয়েন্ট। সূচকের পাশাপাশি কমেছে শেয়ারের দামও। আর তাতে তিনদিন বিনিয়োগকারীরা ২৮ লাখ ৮২১কোটি ৯৯ লাখ টাকার পুঁজি হারিয়েছেন। আরও পুঁজি হারানোর শঙ্কায় পুঁজিবাজারের লেনদেন বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
কিন্তু ডিএসই কর্তৃপক্ষ পাকিস্তান-ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য পুঁজিবাজারের মতো বাংলাদেশের বাজারের লেনদেন বন্ধ করবে না বলে জানিয়েছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, রোববারের মতোই ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ ৯৮ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমায় ক্রেতা সংকটে পড়ে পুঁজিবাজার। এটি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে যখন ঘোষণা আসে যে নতুন করে আরও তিনজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। ফলে শেয়ার মার্কেটে গুজব রটে মার্কেটে আরও ধস নামবে।
অন্যদিকে, ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি কমতে থাকে। এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে শেষ হয় দিনের বাকি লেনদেন।
দিন শেষে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর দাম বেড়েছে ১০টির, কমেছে ৩৩৩টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। মোট লেনদেন হয়েছে ৪০৬ কোটি ৬৯ লাখ ৬৩ হাজার টাকার। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪০৯ কোটি টাকা।
অপর বাজার সিএসইর প্রধান সূচক ৫৭৭ পয়েন্ট কমে ১১ হাজার ৫৭৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ৩৮ লাখ ১১ হাজার টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ২৫টির, কমেছে ২২৫টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১১টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সার্বিক বিষয়ে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বার্তা২৪.কমকে বলেন, আস্থা ও তারল্য সংকট কাটাতে ব্যাংকগুলোর বিশেষ ফান্ড গঠন করাসহ বেশ কিছু ইতিবাচক প্রভাবের পরও কেবল করোনায় আতঙ্কে পুঁজিবাজারে বিপর্যয়ে নেমেছে এসেছে।
তিনি বলেন, করোনায় আতঙ্কিত হওয়া কোনো কারণ নেই।