প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তৈরি পোশাক খাতের সাতটি কারখানা বন্ধ করা হয়েছে। পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সদস্যভুক্ত এসব কারখানার মালিকরা নিজেরাই বন্ধ করেছেন।
মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন বিজিএমইএ’র পরিচালক আসিফ ইব্রাহিম।
তিনি বলেন, শ্রম আইনের বিধিমালা অনুসরণ করে মালিকরা নিজেরাই সাতটি কারখানা বন্ধ করে দিয়েছেন। বিজিএমইএ’র প্রত্যেক সদস্যকে জানানো হয়েছে যে যদি তারা কারখানা বন্ধ করেন, তাহলে শ্রম আইনের সমস্ত বিধি অনুযায়ী কারখানা বন্ধ করতে হবে। আমাদের তথ্য অনুযায়ী, নিয়ম মেনে সাতটি কারখানা বন্ধ করে দিয়েছেন মালিকরা।
এছাড়া আর্থিক সংকটের কারণে গত ১৪ মাসে (২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত) বিজিএমইএ’র সদস্যভুক্ত ১০৬টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া গত বছরের তুলনায় এ বছরের ১৮ মার্চ তৈরি পোশাক রফতানি কমেছে ৪১ দশমিক ৮৪ শতাংশ। আগের বছরের তুলনায় এ বছরের ১৯ মার্চ কমেছে ১২ দশমিক ০২ শতাংশ। আগের বছরের তুলনায় এ বছরের ২০ মার্চ রফতানি কমেছে ৪৪ দশমিক ১৫ শতাংশ।
বিজিএমইএ নেতারা বলছেন, আর্থিক সংকটের কারণে কিছু দিনের মধ্যে অন্তত এক হাজার পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। পরিস্থিতি খারাপ হলে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এ প্রসঙ্গটি তুলে রুবানা হক বলেন, বিজিএমইএ কাউকে বন্ধ করতে বলবে না। আবার চালু রাখতেও বলবে না। পোশাক কারখানার মালিকরাই নিজেদের কারাখানা চালু বা বন্ধ রাখবেন।
এদিকে মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) সকাল ১০টা পর্যন্ত নতুন করে ৭৩৮টি কারখানার ৬৪৯ দশমিক ৩০ মিলিয়ন পিস অর্ডার বাতিল ও স্থগিত হয়েছে। যা টাকার অংকে ২ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলার ইউস ডলার সমপরিমাণ। এ কারখানাগুলোতে ১৪ লাখ ২ হাজার শ্রমিক রয়েছেন।
সোমবার (২৩ মার্চ) সার্বিক বিষয়ে বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বলেন, করোনার কারণে ক্রেতারা ১ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলারের অর্ডার বাতিল করেছেন।
তিনি জানান, আগামী এপ্রিল, মে ও জুন মাসের অর্ডারও বাতিল করছেন ক্রেতারা। তবে পরিস্থিতি যাই হোক, পোশাক শ্রমিকেরা সময়মতো মজুরি পাবেন। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে, সরকার পোশাক শিল্পের পাশে আছে।
গত চার দিনে প্রায় দুইশ’ কোটি ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল বা স্থগিত হয়েছে। এতে অন্তত ১২ লাখ পোশাক শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।