নরসিংদীতে লোকসানে সবজি চাষিরা

ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি

শরীফ ইকবাল রাসেল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নরসিংদী | 2023-09-01 08:45:24

করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত লোকসানের মুখে পড়েছেন নরসিংদীর সবজি চাষিরা। লোকসানে পড়ে ঋণ পরিশোধ নিয়ে চিন্তিত তারা।

নরসিংদী থেকে সড়ক পথ, রেলপথ ও নৌপথে ঢাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলায় সবজি সরবরাহ হয়। নরসিংদীতে উৎপাদিত সবজির মধ্যে রয়েছে—লাউ, করলা, পেঁপে, চিচিংগা, কাকরোল, ঢেঁড়শ, কাচামরিচ, শিম, ডাটা, পুইশাক, লাল শাক, বেগুন, টমেটো ও মিষ্টি কুমড়াসহ আরো অনেক সবজি।

এখন দেশে করোনা পরিস্থিতিতে বাজারগুলোতে ক্রেতা না থাকায় অনেকটাই বিপাকে পড়েছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। ক্রেতার অভাবে ব্যাপক দরপতন হয়েছে পাইকারি সবজির বাজারগুলোতে।

গণপরিবহন সঙ্কটের কারণে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকাররা আসছেন না সবজির বাজারে। আর তাই বাজারে সবজি বিক্রি করতে গিয়ে রিকশা ভ্যানের খরচও উঠাতে পারছেন না চাষিরা। সবজির উৎপাদন খরচ না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে কৃষকদের।

করলা

কৃষক ও কৃষি বিভাগ জানায়, নরসিংদীর সবজির খ্যাতি রয়েছে দেশ-বিদেশে। এখানকার উৎপাদিত সবজির প্রায় সিংহভাগই সরবরাহ হয়ে থাকে রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের শহরাঞ্চলে। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে গত দুই সপ্তাহ যাবৎ এ অঞ্চলের পাইকারি সবজির বড় বাজার বেলাবো উপজেলার নারায়ণপুর, বারৈচা, রায়পুরার জঙ্গী শিবপুর, শিবপুর উপজেলা সদর, সিএন্ডবি বাজার, পালপাড়া বাজারসহ সবজির সবগুলো পাইকারি বাজারে কমে গেছে ক্রেতা।

করোনাভাইরাস আতঙ্ক ও সরকারি নিষেধাজ্ঞায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় পাইকারি ক্রেতার অভাবে বিক্রি করা যাচ্ছে না উৎপাদিত সবজি। স্থানীয়ভাবে আসা ক্রেতাদের নিকট স্বল্পমূল্যে কিছু সবজি বিক্রি করা গেলেও ন্যায্যমূল্য পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে উৎপাদিত সবজি বাজারে নিতে রিকশা-ভ্যানের ভাড়াও পাচ্ছেন না কৃষকরা।

সরেজমিনে বেলাব উপজেলার বারৈচা ও নারায়ণপুর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, আশেপাশের গ্রামগুলো থেকে রিকশা/ভ্যান বোঝাই করে শিম, বেগুন, মিষ্টি কুমড়া, লালশাক, ধনে পাতা, শসাসহ বিভিন্ন সবজি বিক্রির জন্য নিয়ে আসছেন কৃষকরা। বাজারে প্রচুর পরিমাণে সবজি আসলেও ক্রেতা মাত্র হাতেগোনা কয়েকজন।

শসা

বাজারে প্রতি মণ বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়, শিম ২২০ টাকায় ও শসা ৪০০ টাকায়। বিক্রি করতে না পেরে অনেকে বাজারেই ফেলে গেছেন সবজি। করোনা পরিস্থিতিতে সবজির বাজারে দরপতন ঘটায় হতাশায় পড়েছেন কৃষকরা।

বেলাব উপজেলার কৃষক জাকির হোসেন জানান, বিক্রির জন্য সকাল ৮টায় বারৈচা বাজারে বেগুন নিয়ে আসলেও দুপুর গড়িয়ে গেলেও কেউ বেগুনের দাম জিজ্ঞাসাও করেননি। সবজি বিক্রি করতে না পারলে সংসার চলবে কী করে? আর সার, কীটনাশকসহ কৃষি উপকরণের দাম দেব কিভাবে?

বারৈচা গ্রামের আরেক বেগুন চাষি সবুজ আলী বলেন, আমার দুই বিঘা জমিতে বেগুন ও শিম চাষ করেছি। বর্তমানে শিম ও বেগুনের বাজার দর এতো কম, যা থেকে শ্রমিক খরচ ও ভ্যান ভাড়া দিতেও হিমশিম খেতে হয়। যার কারণে জমিতে যাওয়া ও পরিচর্যা করা বন্ধ করে দিয়েছি। ফলে জমির বেগুন ও শিম জমিতেই নষ্ট হচ্ছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর