সদ্য বিদায়ী অধ্যাপক এম খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বাধীন কমিশন ব্যর্থ মন্তব্য করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনটি শক্তিশালী ও সৎ। আর তাই এই কমিশনের মাধ্যমে পুঁজিবাজার এগিয়ে যাবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
শনিবার (৬ জুন) অনলাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রকিবুর রহমান বলেন, শিবলী রুবাইয়াতের নেতৃত্বে কমিশন বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় কাজ করার জন্য দৃঢ়। তারা এরই মধ্যে ভালো ভালো কোম্পানি পুঁজিবাজারে আনার জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন।
এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে একটি কার্যকরী সভা করেছে। যেখানে তারল্য সংকট সমাধানে ব্যাংকগুলোকে বিনিয়োগে আনা ও ৩০ সেপ্টেম্বরের আগে লভ্যাংশ প্রদানে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় শিথিলতার সম্ভাবনা তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া এই কমিশন বন্ড মার্কেট উন্নয়নে উদ্যোগ নেওয়া শুরু করেছে।
তিনি বলেন, নবনিযুক্ত কমিশন বাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জোর দেবে। এই কমিশন কোনো ধরনের অনিয়মকে ছাড় দেবে না। সে যত বড়ই ক্ষমতা হোক না কেনো। এছাড়া সম্মিলিতভাবে উদ্যোক্তা/পরিচালকদের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ না করা কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে অতি শিগগিরই অ্যাকশনে যাবে।
লেনদেন নিয়ে হতাশ না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন রকিবুর রহমান। তিনি বলেন, গত ৩ জুন অনেক কম লেনদেন হওয়া নিয়ে লেখালেখি হয়েছে। কিন্তু এই কম লেনদেন হওয়ার পেছনে আবার লকডাউনের আতঙ্ক ও ফ্লোর প্রাইস কাজ করেছে। যদিও এখন পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ।
তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে গত কয়েকদিনের লেনদেনের ৮৭ শতাংশ অনলাইনে হয়েছে। ব্রোকারেজ হাউসগুলোতে এক-চতুর্থাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। চাইলে এ বাজারে ব্রোকারেজ হাউসে না গিয়ে শতভাগ লেনদেন করা সম্ভব। তাই ভবিষ্যতে ব্যাংক খোলা রেখে পুঁজিবাজার বন্ধ রাখা ঠিক হবে না। অতীতে যেটা হয়েছে, সেটা খুবই দুঃখজনক।
পৃথিবীর কোথাও নিয়ন্ত্রক সংস্থা সূচক ও লেনদেন ওঠা-নামায় হস্তক্ষেপ করে না বলে জানিয়েছেন রকিবুর রহমান। তবে বিগত কমিশনের সময়ে সেটা করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান কমিশন এটা করবে না।
তিনি বলেন, বিমা কোম্পানিগুলোর কাছে অনেক টাকা আছে। তাদের টাকাগুলো ফিক্সড ডিপোজিটে ও বন্ডে চলে যায়। অথচ সেখানে রিটার্ন অনেক কম। মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর অধিকাংশ টাকা এফডিআর। অথচ পৃথিবীব্যাপী মিউচুয়াল ফান্ডগুলো বাজারে বিনিয়োগ করে। আমাদের দেশে বিনিয়োগ করার মতো অনেক ভালো ভালো কোম্পানি আছে।
বিএসইসির চেয়ারম্যান এরইমধ্যে পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন বলে জানান রকিবুর রহমান। উনারা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্লাটফর্ম তৈরি করার জন্য কাজ করছেন।
তিনি বলেন, এখন দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের সুযোগ। যারা ডে ট্রেডার, তাদের কোনো সুযোগ নেই। যারা ১-২ বছরের জন্য বিনিয়োগ করবেন, তাদের জন্য সুযোগ। তাই সবাইকে বিনিয়োগে আসার এবং সক্রিয় হওয়ার জন্য আহ্বান করব। আপনারা যাচাই-বাছাই করে বিনিয়োগ করুন।
তিনি আরও বলেন, আমরা জানি ১০ শতাংশ টেক্সের সুযোগ দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ (কালো টাকা) বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হবে। করোনাভাইরাসের কারণে এই সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। তবে ওই অর্থ বিনিয়োগের জন্য কোনো সেক্টর নির্দিষ্ট করে দেওয়া ঠিক হবে না। সবাইকে সবার সুবিধা মতো সেক্টরে বিনিয়োগের সুযোগ দিতে হবে। এতে করে বাজারে বিনিয়োগ বাড়বে। যা বাজারকে গতিশীল করবে।