গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার জাহাজ সংগ্রহ করবে সরকার

বাজেট, অর্থনীতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 16:32:05

গভীর সমুদ্রে টুনা মাছসহ অন্যান্য মৎস্য সম্পদের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সরকার গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণের উপযোগী জাহাজ সংগ্রহের প্রকল্প হাতে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বৃহস্পতিবার (১১ জুন) জাতীয় সংসদের ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘অগভীর সমুদ্রে বাংলাদেশের মৎস্যজীবীরা দীর্ঘদিন ধরেই মৎস্য আহরণে নিয়োজিত। কিন্তু গভীর সমুদ্রে আমাদের মৎস্য আহরণ শুরু করা যায়নি। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতে গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণের সক্ষমতা তৈরির জন্য সরকার পৃষ্ঠপোষকতা করবে।’

তিনি আরও বলেন, সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ আহরণের সুযোগকে সঠিকভাবে ব্যবহার ও নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে সরকার আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন করেছে। সামুদ্রিক মৎস্য আইন ২০২০ চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে।’

মুস্তফা কামাল বলেন, ‘২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মৎস্য সম্পদ আহরণে নতুন লাইসেন্স প্রদান বন্ধ রয়েছে। তবে গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণে আগ্রহীদের ক্ষেত্রে এই বিধিনিষেধ প্রযোজ্য হবে না। বালাদেশের গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণের জন্য মাত্র ১৭টি জাহাজের সম্মতিপত্র দিয়েছে। কয়েকটি আবেদন জমা হয়েছে। নতুন করে আরও কিছু আবেদন পাওয়া গেলে দ্রুত সময়ের মধ্যে দরপত্র আহ্বান করতে চায় মৎস্য অধিদফতর। নিয়ম হচ্ছে দরপত্র আহ্বান করলে আবেদন জমা দিতে হয়। আবেদন যথাযথ হলে জাহাজ আমদানি করার অনুমোদন দেওয়া হয়। এই অনুমোদন পাওয়ার ৬ মাসের মধ্যে জাহাজের নকশা জমা দিতে হয়। নকশা অনুমোদিত হলে, ২ বছর সময় দেওয়া হয় জাহাজ আমদানির জন্য।’

তিনি বলেন, ‘জাহাজ আমদানি করার পর এমএমডি (মার্চেটাইল মেরিন ডিপার্টমেন্ট) থেকে জাহাজের ফিটনেস সনদ নিতে হয়। সনদ প্রাপ্তি সাপেক্ষে সমুদ্রে মৎস্য আহরণের চূড়ান্ত সনদ দেওয়া হয়। এখানে একটি শর্ত রয়েছে, ৫ বছরের অধিক ব্যবহৃত কোনো জাহাজ আমদানি করার কোনো সুযোগ নেই।’

মন্ত্রী বলেন, ‘২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন (ইইজেড) সমুদ্র সম্পদ নিয়ে একটি জরিপ কাজ চলমান রয়েছে। ২০১৬ সালে শুরু হয়েছে এই জরিপ কাজ। চলতি মাসেই এই জরিপ শেষ হওয়ার কথা। জরিপ শেষ হওয়ার পর জরিপের রিপোর্টের উপর নির্ভর করবে ইইজেডে লাইসেন্স প্রদানের বিষয়টি। বর্তমানে অনুমোদিত লাইসেন্স রয়েছে ২৫৫টি।’

তিনি জানান, দেশের মোট মৎস্য উৎপাদনের ২২ শতাংশ আসে সমুদ্র থেকে। জিডিপিতে যার অবদান ৩.৭৪ শতাংশ। আর দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৪ শতাংশ আসে এই খাত থেকে। দেশে মৎস্যজীবীর সংখ্যা ধরা হয় প্রায় ১১ লাখের মতো। যার এক-তৃতীয়াংশ সামুদ্রিক মৎস্য আহরণে জড়িত। এর বাইরে বিশাল জনগোষ্ঠী রয়েছে যারা খণ্ডকালীন মৎস্য আহরণে জড়িত।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত মহাসাগরে মাছ ধরার অধিকার রয়েছে বাংলাদেশের। এক টুনা মাছ ধরেই বছরে কোটি কোটি ডলার আয় করছে ভিয়েতনাম। ২০১১ সালে দেশটি টুনা রপ্তানি করে আয় করেছে ২১ কোটি ডলার। কিন্তু বাংলাদেশ সবে মাত্র ১৭টি জাহাজের সম্মতিপত্র দিয়েছে। যা ২০১৬ ও ২০১৭ সালে দু’দফায় টেন্ডার করার পর।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর