আগামী আগস্ট মাসে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে দ্বিতীয় অগ্রাধিকারমূলক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) স্বাক্ষরিত হবে।
মঙ্গলবার (১৬ জুন) দুই দেশের সংশ্লিষ্টদের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক ভার্চুয়াল সভায় (ভিডিও কনফারেন্স) এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ ভার্চুয়াল সভায় অংশ নেওয়া বাংলাদেশের ১০ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ) মিসেস শরিফা খান।
ভুটানের পক্ষে ১৪ সদস্যের প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেন ডিপার্টমেন্ট অফ ট্রেডের মহাপরিচালক সোনম তেনজিন।
এ সভায় উভয় পক্ষের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে অগ্রাধিকারমূলক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি করার জন্য পিটিএ টেক্সটসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয় চূড়ান্ত করা হয়।
উভয় পক্ষ পিটিএ সম্পাদনের জন্য ঐকমত্যে পৌঁছেছে। আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং ও কেবিনেটের অনুমোদনের পর আগামী ৩০ আগস্টে মধ্যে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। উভয় দেশের বাণিজ্য মন্ত্রীরা বাণিজ্য চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করবেন।
বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে প্রথম স্বীকৃতি দানকারী দেশ ভুটান। এ কারণে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে সুসম্পর্ক বিদ্যমান। বিশ্বায়নের দ্রুত গতি আর বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার আলোচনায় স্থবিরতার কারণে বিশ্বের সকল দেশ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের নীতি অনুসরণ করছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশও ভুটান, নেপাল, ইন্দোনেশিয়াসহ বেশ কিছু দেশের সাথে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ২০১২-১৩ অর্থবছরে ২৬.৫২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার; তা ক্রমান্বয়ে বেড়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৫৭.৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়। বাংলাদেশ থেকে ভুটানে মূলত তৈরি পোশাক, খাদ্য সামগ্রী, প্লাস্টিক, ওষুধ, গৃহসজ্জা সামগ্রী, ইলেকট্রিক্যাল সামগ্রী রপ্তানি করা হয়। অন্যদিকে, ভুটান থেকে মিনারেল পণ্য, সবজি, ফলমূল, নির্মাণ সামগ্রী, বোল্ডার পাথর, পাল্প ও বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল আমদানি করে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের আলোচনায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাংলাদেশের ১০০টি পণ্য ভুটানে এবং ভুটানের ৩৪টি পণ্য বাংলাদেশের শুল্কমুক্ত বাজার প্রবেশাধিকার সুবিধা পাবে। তবে, আলোচনার মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে পণ্য সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে। ভুটান থেকে শুল্কমুক্ত সুবিধার আওতায় আমদানি করা গেলে আমাদের দেশের জন্য নির্মাণ সামগ্রীর ব্যয় হ্রাস পাবে। যা নির্মাণ খাতের উন্নয়নে সহায়ক হবে। এছাড়া, স্বল্পমূল্যে কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্যের কাঁচামাল আমদানি করা সহজ হবে।
এ আলোচনা শেষ হওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন মাইল ফলক সৃষ্টি হয়েছে, কেননা এটিই বাংলাদেশের জন্য ভুটানের সাথে প্রথম অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি হতে যাচ্ছে।