আগামী ৫ বছরে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ২ শতাংশ অবদান রাখবে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল। আর এক্ষেত্রে সরকারের কার্যকর সহযোগিতা জরুরি।
রোববার (২১ জুন) এক অনলাইন আলোচনায় এ খাতের উদ্যোক্তারা এসব কথা জানান।
আলোচনায় অংশ নেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
এছাড়াও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই-এর সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, ভিসিপিয়াবের মহাসচিব শওকত হোসেন, বেসিসের সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর, মসলিন ক্যাপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়ালি-উল-মারুফ মতিন, সিএমজেএফের নির্বাহী সদস্য সুজয় মহাজন, ইনফ্লেকশন ভেঞ্চারের অংশীদার তানভীর আলী, পাঠাওয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হুসেইন এম ইলিয়াস এবং স্টার্টআপ ঢাকার সহ-প্রতিষ্ঠাতা সামাদ মিরালি আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
বক্তারা বলেন, বর্তমানে এ খাতে প্রায় ৭ লাখ লোকের কর্মসংস্থান। ফলে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে বাংলাদেশি স্টার্টআপকে প্রণোদনা ও নীতিগত সহায়তা দেওয়া জরুরি। শামীম আহসান বলেন, করোনার কারণে আমাদের ব্যবসায় এবং অর্থনীতি উভয়ই অভূতপূর্ব সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। ভেঞ্চার ক্যাপিটালের সহায়তায় পরিচালিত আমাদের দেশের স্টার্টআপগুলো সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি টিকে থাকার লড়াই করছে। ফ্রান্স, সিঙ্গাপুর, জাপান এবং মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল। সেখানে সরকারের পক্ষ থেকে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এবং স্টার্টআপ প্রয়োজনীয় আর্থিক ও নীতিগত সহায়তা দেওয়া হয়। এতে কোম্পানিগুলোকে টিকে থাকতে সহায়ক হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে বাংলাদেশি স্টার্টআপগুলোকেও ট্যাক্স অব্যাহতি, অনুদান, সহজ শর্তে ঋণ এবং ইক্যুইটি বিনিয়োগের মাধ্যমে একই ধরনের নীতিগত ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া জরুরি। এই ব্যবসাগুলো টিকে থাকলে ৭ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান রক্ষা পাবে বলেও জানান শামীম আহসান।
ভিসিপিয়াবের মহাসচিব শওকত হোসেন বলেন, নিবন্ধিত অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিতে বিনিয়োগ করার জন্য সরকার কিংবা বাংলাদেশ ব্যাংক একটি ফান্ড তৈরি করতে পারে। প্রাইভেট এবং অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের সম্মিলিত বিনিয়োগে অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড খুবই কার্যকরী এবং সফল হবে। এছাড়া ১০ বছরের জন্য অল্টারনেটিভ ফান্ড ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিকে আয়কর থেকে অব্যহতি দেওয়া যেতে পারে। ভিসিপিই ফার্মকে তাদের কোর ব্যবসা থেকে আয় করতে কমপক্ষে ১০ বছর সময় লেগে যায়। এর আগে আয় খুবই সীমিত হয় এবং সেটি দিয়ে শুধু কোম্পানিকে কোনোভাবে চালিয়ে নেওয়া যায়। এই ছোট্ট আয়ের ওপর ট্যাক্স এআইএফএম খাতের জন্য খুবই প্রতিবন্ধকতামূলক হবে। অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্টের ফান্ড ম্যানেজার এখনও নাজুক অবস্থায় আছে। এছাড়া এআইএফএম ডিল অধিক ঝুঁকিপূর্ণ।
এখাতের সংগঠন ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ভিসিপিয়াব) এবং ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম যৌথভাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। বৈঠকের সভাপতিত্ব ও মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভিসিপিয়াব চেয়ারম্যান শামীম আহসান।
উল্লেখ্য যখন একটি কোম্পানি বাজারে নতুন এবং মৌলিক কোনো সেবা বা পণ্য নিয়ে ব্যবসা শুরু করে, তাকে স্টার্টআপ বলা হয়। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, মৌলিক একটি উদ্যোগকে ছোট থেকে আস্তে আস্তে বড় করে বিকশিত করা। বাংলাদেশে স্টার্টআপ বিজনেসের মধ্যে উবার বা পাঠাও অন্যতম। এই স্টার্টআপ বিজনেসে পুঁজির যোগান দেয় ভেঞ্চার ক্যাপিটাল।