জাকির-আশিকুর দ্বন্দ্বে ডুবে যেতে পারে নৌকা!

বিবিধ, নির্বাচন

ফরহাদুজ্জামান ফারুক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 23:45:02

বেগম রোকেয়ার জন্মস্থান খ্যাত মিঠাপুকুর উপজেলাতে তেমন বলিষ্ঠ উন্নয়ন হয়নি। এমপি হিসেবে হ্যাট্রিক করা এইচ.এন আশিকুর রহমানের ছোট ছোট ব্যর্থতাগুলোকেই এখন বড় করে দেখছে সাধারণ ভোটাররা। এই সুযোগে আশিকুর রহমানের বিপক্ষে শক্তিশালী জনমত তৈরি করেছে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন।

দলের ভেতর এমন কোন্দল আর পাল্টাপাল্টি অভিযোগে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে গ্রুপিং। ভোটাররা মনে করছেন, জাকির-আশিকুরের দ্বন্দ্ব ঠেকাতে না পারলে ভেঙে যেতে পারে আওয়ামী লীগের জয়ের ধারাবাহিকতা। এতে এরশাদের জাতীয় পার্টি ফিরে পেতে পারে হারানো সম্মান।

বিশাল আয়তনের মিঠাপুকুর উপজেলা নিয়ে গঠিত রংপুর-৫ আসনটিতে এখন আওয়ামী লীগে চলছে কোন্দল আর জাপাতে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রত্যয়। এ কারণে তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, এমপি আশিকুর রহমান দলের ইমেজ বাড়ানোর চেয়ে নিজের ছেলে রাশেদ রহমানের পরিচিতি বাড়ানো নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। বয়সের কারণে এবার আশিকুর রহমান প্রার্থী না হলে তার ছেলে মিডিয়া ব্যক্তিত্ব রাশেক রহমানকেই প্রার্থী করতে ভেতরে ভেতরে লবিং চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ তৃণমূলে।

এদিকে এলোমেলো সিদ্ধান্তে নিজ দুর্গে বেহাল দশায় থাকা জাতীয় পার্টি এখন পূর্বের চেয়ে অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী। দলীয় চেয়ারম্যান এরশাদের নির্দেশে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ফখর-উজ-জামান জাহাঙ্গীর। রঙিন পোস্টার, ফেস্টুন আর ব্যানারে ছেয়ে গেছে তার লাঙ্গল প্রতীকের প্রচারণা।

স্থানীয় জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা বলছেন, বারবারই এই আসনে আওয়ামী লীগ পার পেয়ে গেলেও এবার সেই সুযোগ নেই। এরশাদের প্রতি এখানকার মানুষের ভালোবাসা আর আওয়ামী লীগের গ্রুপিংয়ে লাঙ্গল প্রতীকে জাহাঙ্গীরের জয়ী হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

বড় হযরতপুর ইউনিয়নের আবু বকর সিদ্দিক জানান, এখানে আওয়ামী লীগের দুটি গ্রুপ। একটি এমপি আশিকুর রহমানের, অপরটি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের। দলীয় স্বার্থের চেয়ে ব্যক্তি স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত তারা। যেন কেউ কাউকে ছাড় দিতে চান না।

এই আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নের প্রত্যাশায় রয়েছেন বর্তমান এমপি এইচ এন আশিকুর রহমান ছাড়াও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন, জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোতাহার হোসেন মওলা। এ জন্য তারা প্রচার-প্রচারণাও চালাচ্ছেন।

মিঠাপুকুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, ‘এখানকার ৮০ শতাংশ মানুষ আমাকে সমর্থন করে। আমি তাদের প্রতিনিধি ছিলাম। তাদের সেবার জন্য আমি প্রস্তুত। যদি জনগণ আমাকে চায়, আমি নির্বাচন করব।’

এদিকে দলীয় নেতাদের এমন বিষোদগারে ক্ষুদ্ধ আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা এমপি এইচএন আশিকুর রহমান। তিনি বলেন, যদি বিভক্তি থাকত তাহলে এখানকার ১৭টি ইউনিয়নেই নৌকার প্রার্থীরা জয়ী হতো না। দলের দু’ একজন জামায়াত-শিবিরকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করতে চায়। তারাই উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে আড়াল করে অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।

এই আসনে জেলা বিএনপির সদস্য অধ্যাপক ড. মমতাজ উদ্দিন ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি খাজা নূর খাজা ধানের শীষের মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।

অন্যদিকে মিঠাপুকুর উপজেলা জামায়াতের আমির ও বরখাস্ত হওয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করতে পারেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর