শেখ হাসিনাতেই ভরসা পীরগঞ্জবাসীর

বিবিধ, নির্বাচন

ফরহাদুজ্জামান ফারুক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 07:36:16

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্বশুরবাড়ি খ্যাত পীরগঞ্জ আসনে (রংপুর-৬) জমে উঠেছে প্রচার-প্রচারণা। উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে। পিছিয়ে নেই বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকা এরশাদের জাতীয় পার্টি। এছাড়া এক যুগেরও বেশি সময় ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি ভোটযুদ্ধে অংশ নিতে প্রস্তুত।

টানা ২২ বছর রাজত্ব করা জাতীয় পার্টির লাঙ্গলের দুর্গ খ্যাত রংপুর-৬ আসনে বর্তমান এমপি স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে এ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ হাসিনা। পরবর্তীতে আসনটি তিনি ছেড়ে দিলে এখানে উপ-নির্বাচনে জয়ী হন আওয়ামী লীগের ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

অষ্টম সংসদ নির্বাচনে এই আসনে শেখ হাসিনা জাতীয় পার্টির প্রার্থী নুর মোহাম্মদ মণ্ডলের কাছে সামান্য ভোটে পরাজিত হলেও নবম ও দশম সংসদ নির্বাচনে পরপর এমপি হন। তখন থেকেই এ আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে।

অতীত নির্বাচনে ফলাফলে দেখা যায়, ২০০১ সালের নির্বাচনে এই আসনে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন জাতীয় পার্টির নুর মোহাম্মদ মণ্ডল। তিনি পেয়েছিলেন ৯০ হাজার ৭৩০ ভোট এবং নৌকা প্রতীক নিয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পেয়েছিলেন ৭৭ হাজার ৯৯১ ভোট।

পরে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ থেকে এ আসনে নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি পেয়েছিলেন ১ লাখ ৭০ হাজার ৫৪২ ভোট। অন্যদিকে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে ৩৮ হাজার ৬৭২ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছিলেন জাতীয় পার্টির নুর মোহাম্মদ মণ্ডল।

এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার শ্বশুরবাড়ির এই আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে মনে করছেন স্থানীয় নেতারা। নির্বাচনী বৈতরণি সহজে পার হওয়ার জন্য এ আসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অথবা তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন উপজেলা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান রাঙ্গা।

পীরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এবং উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর ভাতিজা তাজিমুল ইসলাম শামীম জানান, গেল ১০ বছরে পীরগঞ্জ এলাকায় যে উন্নয়ন হয়েছে, তা বিগত সময়ের কোনো সরকারই করেননি। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পীরগঞ্জের মানুষের জন্য অনেক সুযোগ সুবিধা দিয়েছেন। এখানকার মানুষরা এখন উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে গেছে। এ কারণে এই আসনে শেখ হাসিনা বা সজীব ওয়াজেদের বিকল্প কাউকে দেখছেন না তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর প্রার্থিতার বিষয়টি দলের কোনো নেতা নিশ্চিত করতে পারেননি। এ আসনে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন না করলে শিরীন শারমিন চৌধুরীর প্রার্থী হবার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে জোটগতভাবে নির্বাচন না হলে হিসাব বদলে যেতে পারে বলেও মনে করছেন নেতারা।

জাতীয় সংসদের হেভিওয়েট এই আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছেন রংপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ছাত্রনেতা সাইফুল ইসলাম এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান সাবেক এমপি নূর মোহাম্মদ মণ্ডল। তারা দু’জনই দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। সাধারণ মানুষের কাছে যাচ্ছেন এবং গণসংযোগ করছেন।

অন্যদিকে এরশাদের জাতীয় পার্টির পক্ষে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও উপজেলা সাধারণ সম্পাদক ব্যবসায়ী নুর আলম যাদু, পীরগঞ্জ উপজেলা কমিটির সহ-সভাপতি নোমান ইকবাল খসরু।

এছাড়াও হেভিওয়েট এই আসনে জাসদ, বাসদ, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম শোনা যাচ্ছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর