পাবনা-২: প্রার্থী নির্বাচনের ওপর নির্ভর করছে জয়

বিবিধ, নির্বাচন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 17:21:33

পাবনা-২ (সুজানগর-বেড়া আংশিক) আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপই বলে দিচ্ছে নির্বাচন আসন্ন। ভিন্ন ভিন্ন দলের ইতোমধ্যে ডজন খানেক প্রার্থীর শুভেচ্ছা বার্তা, নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের ডিজিটাল ব্যানারে ছেয়ে গেছে পুরো নির্বাচনী এলাকা।

হারানো আসন ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিএনপির নবীন-প্রবীণ প্রায় অর্ধ ডজন মনোনয়ন প্রত্যাশী। আর বসে নেই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের বর্তমান সাংসদসহ অর্ধ ডজন প্রার্থী।

বর্তমান আওয়ামী লীগের সাংসদ খন্দকার আজিজুল হক আরজু ও আহমেদ ফিরোজ কবিরের সঙ্গে বিএনপি প্রার্থী আব্দুল হালিম সাজ্জাদ ও সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট একেএম সেলিম রেজা হাবিবের ভোট যুদ্ধ হবে এমনটি ভাবছে সাধারণ ভোটাররা।

তথ্য মতে, পাবনার সুজানগর উপজেলা ও বেড়া উপজেলার একাংশ নিয়ে গঠিত পাবনা-২ আসন। এই আসনে ভোটার রয়েছে প্রায় দুই লাখ ৩৫ হাজার। ১৯৯১ সালে এই আসনে আওয়ামী লীগের আহম্মদ তফিজ উদ্দিনকে হারিয়ে জয় পায় বিএনপির প্রার্থী ওসমান গনি খান। পরের বার ১৯৯৬ সালে মাত্র ১৫শ ভোটের ব্যবধানে নৌকার তফিজ উদ্দিনের কাছে পরাজিত হন ধানের শীষের ওসমান গনি। ২০০১ সালে দুই দলেরই প্রার্থী পরিবর্তন হয়। সেবার আওয়ামী লীগের মির্জা আব্দুল জলিলকে প্রায় ১০ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বিএনপির এ কে এম সেলিম রেজা হাবিব।

২০০৮ সালে নৌকার নতুন প্রার্থী মুক্তিযুদ্ধের উপ-সর্বাধিনায়ক এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এ কে খন্দকারের কাছে প্রায় ২৩ হাজার ভোটে হেরে যায় বিএনপির সেলিম রেজা হাবিব। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক কর্মকাণ্ড নিয়ে এ কে খন্দকারের ওপর ক্ষুব্ধ হয় আওয়ামী লীগ। আর তিনি রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন। ফলে ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে আজিজুল হক আরজু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

সরেজমিনে দেখা যায়, মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ করার পাশাপাশি পোস্টার এবং বিলবোর্ড টাঙিয়ে তাদের প্রার্থিতা জানান দিয়েছেন। এই আসনে আওয়ামী লীগের ধারাবাহিক পরিবর্তনের আশায় এবারও মাঠে নেমেছে একাধিক নেতা। ইতোমধ্যে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা, সভা সমাবেশ ও দেখা সাক্ষাৎ থেমে নেই মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মাঝে।

আওয়ামী লীগের পক্ষে মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকায় রয়েছেন- বর্তমান সাংসদ আজিজুল হক আরজু, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সুজানগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আহমেদ ফিরোজ কবির, প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও কৃষকলীগের সাবেক সভাপতি ড. মির্জা জলিল, পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা রাকসুর সাবেক জিএস ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য খন্দকার জাহাঙ্গীর কবির রানা, ট্যারিফ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মজিবুর রহমান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. সাঈদুর রহমান। তবে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন বর্তমান সাংসদ খন্দকার আজিজুল হক আরজু ও আহমেদ ফিরোজ কবির।

অপরদিকে আসনটি পুনরুদ্ধার করতে মাঠে নেমেছে বিএনপির একাধিক নেতা। প্রার্থী হতে গণসংযোগ চালাচ্ছেন সাবেক এমপি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এ কে এম সেলিম রেজা হাবিব, পাবনা জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল হালিম সাজ্জাদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান জাফির তুহিন, পাবনা জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি ও সুজানগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আরশেদ আলম, সুজানগর থানা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম হোসেন মণ্ডল। তবে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন সেলিম রেজা হাবিব ও আব্দুল হালিম সাজ্জাদ।

এছাড়া জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি মকবুল হোসেন সন্টু প্রার্থী হবেন বলে জানা গেছে।

দেশ স্বাধীনের পর থেকে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত আসনটি থেকে চারবার আওয়ামী লীগ, তিনবার বিএনপি এবং একবার জাতীয় পার্টির দলীয় প্রার্থী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। বিগত নির্বাচনগুলোর ফলাফল তথা নির্বাচনী মাঠের বাস্তব অবস্থা অনুযায়ী মূলত আসনটিতে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির শক্ত অবস্থান রয়েছে। সে কারণে এলাকার সচেতন মহল মনে করছেন আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে। প্রার্থী নির্বাচনের ওপর নির্ভর করছে দলের জয় পরাজয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর