বৃহত্তর রংপুরের ২২ আসনের ১৮টি চায় জাপা

বিবিধ, নির্বাচন

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | 2023-08-21 19:08:34

বৃহত্তর রংপুরের (রংপুর-গাইবান্ধা-কুড়িগ্রাম ও নীলফামারী) ২২ আসনের সর্বোচ্চ ৪টি ছাড় দিতে চায় জাতীয় পার্টি। তবে আওয়ামী লীগ ১০টি আসন দাবি করেছে বলে জাতীয় পার্টি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

জাতীয় পার্টি দুর্গখ্যাত বৃহত্তর রংপুরে কোনভাবেই ছাড় দিতে চায় না দলটি। বৃহত্তর রংপুরের আসন প্রশ্নে প্রয়োজনে ‘জোট ত্যাগ’ করতেও দ্বিধা করবে না-এমন কঠোর অবস্থান নিতে চায় জাতীয় পার্টি। যদিও পরিস্থিতির কারণে ৪টি আসনে ছাড় দিতে এরশাদকে বাধ্য হয়েছে বলে জানা গেছে।

জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্বশুরবাড়ির আসন রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) নৈতিক কারণেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ২০০৮ সালেই। সে কারণে এবারও পীরগঞ্জের বিষয়ে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে কোন দাবিই  থাকছে না।

অন্যদিকে রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া) আসনে ২০০৮ ও ২০১৪ সালে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শেফাল গ্রুপের মালিক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি টিপু মন্সী,  গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনেও একইভাবে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিঞা, নীলফামারী-২ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান নূর। এই চারটি আসনেও জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে দাবি নেই।

এর বাইরে রংপুরের অন্য ১৮ আসনে কোনো ছাড় দিতে নারাজ জাতীয় পার্টি। তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে লালমনিরহাট-২ (কালিগঞ্জ-আদিতমারি) আসনের বর্তমান সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, লালমনিরহাট-১ আসনে সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোহাতার হোসেন, গাইবান্ধা-২ (সদর) মাহবুব আরা গিনি, রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসন পেতে চায়।

জাতীয় পার্টি এই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। বিষয়টি ঝুলে রয়েছে পরিস্থিতির উপর। যদি বিএনপি নির্বাচনে আসে তাহলে চাপে রেখে দাবি আদায়ের মনোবাসনা রেখেছে জাতীয় পার্টি। অর্থাৎ ঝোপ বুঝে কোপ দাগাতে চায় দলটি।

অন্যদিকে জাতীয় পার্টি ২০১৪ সালে ঢাকার ৪টি আসন পেয়েছিলো। এগুলো হচ্ছে ঢাকা-১৭ এইচএম এরশাদ, ঢাকা-৪ (শ্যামপুর-ডেমরা-যাত্রাবাড়ী) সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, ঢাকা-৬ (ওয়ারী-গেন্ডারিয়া-সুত্রাপুর-কোতয়ালী) কাজী ফিরোজ রশীদ, ঢাকা-১ (দোহার-নবাবগঞ্জ) থেকে প্রেসিডিয়াম সদস্য সালমা ইসলাম। এরমধ্যে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নির্বাচন বর্জন করলে সেখানে বিএনএফ’র প্র্রার্থী বিজয়ী হন।

এবার আরও তিনটি বাড়তি আসন দাবি করবে দলটি। জাতীয় পার্টি ঢাকা-৯ (খিলগাঁও-সবুজবাগ-বাসাবো) আসনে দেলোয়ার হোসেন খান, ঢাকা-৫ (ডেমরা-যাত্রাবাড়ী –কদমতলি) আসনে প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদকে প্রার্থী করতে চায়।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এরশাদের প্রেস ও পলিটিক্যাল সেক্রেটারি সুনীল শুভরায় বার্তা২৪.কমকে বলেন, চাওয়াতো কোনো অপরাধ নয়। আমরাও চাইতে পারি, তারাও চাইতে পারে। তবে এই মুহূর্তে জাতীয় পার্টি তিনশ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে।

বৃহত্তর রংপুরের ২২টি আসনের মধ্যে ২০০৮ সালে জোটগত ভাবে নির্বাচন হলেও কয়েকটি আসন উন্মুক্ত রাখা হয়। এতে জাতীয় পার্টি ১১টি আসনে বিজয় লাভ করে। আর আওয়ামী লীগ ১১টি আসনে জয়ী হয়। ২০১৪ সালের নির্বাচনে ৫টি আসনে বিজয়ী হয় জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর