জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের ভাগ্য প্রধানমন্ত্রীর হাতে

বিবিধ, নির্বাচন

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | 2023-08-22 16:28:29

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপের পর পার্টির মনোনয়ন নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ভোটারদের কাছে জনপ্রিয় ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন।

৫ নভেম্বর গণভবনে সংলাপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরশাদের উদ্দেশ্যে বলেন, এমন কাউকে মনোনয়ন দিয়েন না যাকে বিজয়ী করে আনা যাবে না। ভোটারদের কাছে জনপ্রিয় ব্যক্তিদের প্রার্থী দিবেন। আমার কাছে কিন্তু আপনার দলের প্রার্থীদের সব খবর রয়েছে। কে কেমন জনপ্রিয়।

আর প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর এরশাদ অত্যন্ত সাবধানে পা ফেলতে চান তার ঘনিষ্ট নেতারা মন্তব্য করেছেন। আর ঠিক যেনো এটাই চাইছিলেন তৃণমূলের নেতারা। জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রদানের ক্ষেত্রে জনপ্রিয়তা কিংবা পার্টির প্রতি ত্যাগ-অবদান সব সময় উপেক্ষিত থেকেছে বলে মনে করা হয়।

এখানে এরশাদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক, পার্টির সিনিয়র কিছু নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ টনিকের মতো কাজ করে। বনানী অফিস ও এরশাদের বাসায় ঘুরঘুর করলেই মনোনয়ন পাওয়া যায়। বছরের পর বছর দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তাদের মনোনয়ন না দিয়ে হঠাৎউড়ে এসে জুড়ে বসে মনোনয়ন বাগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আবার ভোটের পর সুযোগ বুঝে জাতীয় পার্টিকে গুডবাই বলে বিদায় নিয়েছেন এমন উদাহরণ ভূরিভূরি দেওয়া যাবে।

এমন অনেক নেতা রয়েছে যাদের এলাকার পার্টির নেতাকর্মীরাই চেনেন না। ক্ষেত্রবিশেষ এলাকায় জাতীয় পার্টির সঙ্গে তাদের কোনো যোগাযোগও নেই। শুধু পার্টি আফিসে ঘুরঘুর করে কেন্দ্রীয় নেতা বনে গেছেন জাতীয় পার্টিতে এটাই এখন ধারা তৈরি হয়েছে। অনেকে সময় স্থানীয় নেতাদের মতামত থেকেছে উপেক্ষিত। এ জন্য পার্টিকেও কম মাশুল দিতে হয়নি।

সম্প্রতি খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বাইরে থেকে প্রার্থী হায়ার করা হয়। এতে স্থানীয় নেতারা প্রতিবাদ করে গণপদত্যাগ করেন। তবুও হাইব্রীড নেতাকেই সিটি করপোরেশনে প্রার্থী করা হয়। যার ফলশ্রুতিতে জামানত হারিয়ে চরম লজ্জায় পড়ে যায় জাপা।

কিন্তু এই ট্রেডিশন থেকে বের হতে পারছে না জাতীয় পার্টি। নতুন করে সংসদ নির্বাচন এগিয়ে আসায় তার কিছুটা আঁচ লক্ষ্যকরা যাচ্ছে। যে কারণে কেন্দ্র থেকে তৃণমুল পর্যন্ত হতাশা রয়েছে। যে কারণে পার্টিতে প্রতিশ্রুতিশীল নেতা তৈরি হচ্ছে না এমন অভিমত রয়েছে অনেকের। এবার নির্বাচনেও পার্টির নেতারা এমন শঙ্কার মধ্যেই ছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় এরশাদের নড়েচড়ে বসা ত্যাগী নেতারা আশার আলো দেখছেন।

সম্প্রতি এক কেন্দ্রীয় নেতা তার বাসায় দেখা করতে গেলে, তাকে বলেছেন এলাকায় গিয়ে কাজ করো। জনপ্রিয়তা না থাকলে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। এরশাদের এই নির্দেশনায় বনানী অফিসে ঘুরঘুর করা নেতারা শঙ্কার মধ্যে পড়ে গেছেন। মহাসচিবের বাসাসহ সিনিয়র নেতাদের বাসায় বাসায় ধর্ণা দিচ্ছেন।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা জনপ্রিয় নেতাদের মনোনয়ন দিতে চাই। সব দলেই চায়। তবে সবক্ষেত্রে সম্ভব হয় না। অনেক ত্যাগী নেতা রয়েছে, যার দোকানে চা খেয়ে বিল দেওয়ার সামর্থ্য নেই। তাকে তো আর মনোনয়ন দেওয়া যায় না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর