একদিকে শীতের আগমন, অন্যদিকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে গ্রামের চায়ের দোকানগুলোতে বাড়তে শুরু করেছে ভিড়। দোকানিরাও বাড়াচ্ছে কেটলি-কাপের সংখ্যা। নির্বাচনী প্রচারণার মধ্য দিয়ে গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙা হচ্ছে বলে জানালেন স্থানীয় দোকানিরা। এখন থেকেই দোকানে দোকানে শুরু হয়েছে নির্বাচনী আড্ডা ও তর্ক-বিতর্ক।
মেহেরপুর জেলায় দু’টি নির্বাচনী এলাকায় জনসংখ্যা প্রায় সাত লাখ। সদর ও মুজিবনগর উপজেলা নিয়ে মেহেরপুর-১ আসন এবং গাংনী উপজেলা নিয়ে মেহেরপুর-২ আসন গঠিত। মেহেরপুর-১ আসনে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৩৪৬ জন ও মেহেরপুর-২ আসনে ২ লাখ ২৬ হাজার ৪১৬ জন ভোটার রয়েছে। এদের মধ্যে নারী-পুরুষ ভোটার প্রায় সমান সমান।
মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দু’টি আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রায় দুই ডজন, বিএনপির অর্ধ-ডজন ও অন্যান্য দল মিলে আরও কয়েকজন সম্ভাব্য প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন পেতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তাই এখনই চায়ের দোকানে আপ্যায়নসহ মাঠ পর্যায়ে অন্যান্য খরচ শুরু হয়ে গেছে।
গাংনীর চা দোকানি রফিকুল ইসলাম রুলিম বলেন, ‘শুধু নির্বাচন নিয়েই আমার দোকানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আলোচনা হয়। বর্তমানে এখানে আর কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে না। এই ফাঁকে চা বিক্রিও বেড়েছে।’
সীমান্তবর্তী সহড়াতলা গ্রামের চা দোকানি আনারুল ইসলাম বলেন, ‘কয়েকদিন আগে চারটি নতুন কেটলি ও ১০০ পিস চায়ের কাপ কিনেছি। সম্ভাব্য প্রার্থীদের স্থানীয় কর্মীরা এখনই চায়ের বিল দিচ্ছেন। তার নেতার মাঠ ঠিক রাখতে পারলে তিনিও উপকৃত হবেন এই আশায় খরচ করছেন তারা।’
মেহেরপুর ও গাংনী শহরের কয়েকটি দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চায়ের কেটলি বিক্রি মোটামুটি শুরু হয়েছে। প্রতিদিনই বিক্রি বাড়ছে। বিশেষ করে গ্রামের চায়ের দোকানদাররা এই কেটলি কিনছেন।
রাইপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান মোকলেছ জানান, বিকেল থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চায়ের দোকানগুলো জমজমাট থাকছে। উপজেলা পর্যায় থেকে নেতারা রাতেও গ্রামের চায়ের দোকানে গিয়ে গণসংযোগ করছেন। এতে দোকানিদের বেচাবিক্রি বেড়েছে। এছাড়াও নির্বাচনী অন্যান্য খরচ এখনই শুরু হয়ে যাওয়ায় গ্রামীণ অর্থনীতিতে চাঙা ভাব তৈরি হয়েছে।
জানা গেছে, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয় নির্ধারিত। তবে এ বিষয়টি কাগজে-কলমে ঠিক থাকলেও কোনো প্রার্থীই এ ব্যয় ঠিক রাখতে পারেন না। তাই নির্বাচনকে ঘিরে একদিকে উৎসব শুরু হয়, অন্যদিকে বেড়ে যায় গ্রামের সাধারণ মানুষের আয়। কারণ এ সময়টাতে বিভিন্ন ভাবে আয়ের চেষ্টা করেন এক শ্রেণির মানুষ।