মুক্তাদিরের সাজানো মাঠের ভাগ চান ইনাম চৌধুরী

বিবিধ, নির্বাচন

নূর আহমদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 11:51:32

দরজায় কড়া নাড়ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ভোট যুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য আর মাত্র সময় বাকি আছে দেড় মাস। এরই মধ্যে পাল্টে যেতে বসেছে অনেক প্রার্থীর হিসাব-নিকাশ। সিলেটি ভাষায় অনেকের ‘পাকনা ধানে মই দিতে বসেছেন কেউ কেউ।,

মর্যাদাপূর্ণ সিলেট-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী নির্ধারণে তেমনি ঘটনার আভাস মিলছে। খন্দাকর আব্দুল মুক্তাদিরের সাজানো-গোছানো মাঠে ভাগ বসাতে চান প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ইনাম আহমদ চৌধুরী। এই আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য দলীয় মনোনয়ন কিনেছেন তিনি।

জানা গেছে, সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের মৃত্যুর পর সৃষ্টি হওয়া শূন্যতার সুযোগকে কাজে লাগাতে মাঠে নামেন সিলেট-১ আসন থেকে একাধিকবারের নির্বাচিত এমপি খন্দকার আব্দুল মালিকের ছেলে আব্দুল মুক্তাদির। সিলেট বিএনপির ত্যাগী নেতা ছিলেন খন্দকার আব্দুল মালিক। এক সময় খন্দকার মালিক নিজ বাসা থেকেই বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। তার ছেলে খন্দকার মুক্তাদির একজন শিল্পপতি। উচ্চ শিক্ষিত। দুই-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া মাঠ গোছানোর যোগ্যতা ও কৌশল রয়েছে তার নজর কাড়া। মুক্তাদির সব ধরনের রাজনৈতিক ক্লেশ-সহিংসতা এড়িয়ে সিলেট নগর ও সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত সংসদীয় আসনের সাধারণ মানুষের কাতারে জায়গা করে নিয়েছেন।

খন্দকার মুক্তাদির গড়ে তোলেন তার বাবার নামে ‘খন্দকার মালিক ফাউন্ডেশন’। সদর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে গড়ে তোলেন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। নারীদের জন্য হাতে নেন সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ নানামুখী কার্যক্রম। হাটখোলা ও জালালাবাদ ইউনিয়নের কয়েক হাজার অনাবাদি জমি চাষের জন্য নিজ উদ্যোগে করে দেন সেচ প্রকল্প। এছাড়া বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ করে খুব কম সময়ে স্থানীয়দের সঙ্গে পরিচিত হয়ে যান।

বাবার রাজনৈতিক সূত্র ধরে আসা মুক্তাদির রাজনীতিতে পা মাড়ান খুব সতর্কভাবে। বিএনপির বিগত কাউন্সিলে তাকে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা করা হয়। সিলেট বিএনপিতে এখন খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরের প্রভাব বেশি। সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদল মুক্তাদিরের নিয়ন্ত্রণে। মুক্তাদিরকে নিয়ে মাঠে ময়দানে ঘুরে ছাত্রদলের এসব কর্মীরা।

কারাবরণেরও স্বাদ গ্রহণ করেছেন মুক্তাদির। সিলেটে ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ শেষে তাকে গ্রেফতার করা হয়। প্রায় এক মাস কারাবরণ করেন তিনি। এছাড়া শত শত মামলা নিয়ে পালিয়ে থাকা নেতাকর্মীদের আইনি প্রক্রিয়া থেকে বের করে আনতে গিয়ে লাখ লাখ টাকা খরচ করেন মুক্তাদির।

এদিকে খন্দকার মুক্তাদিরের সাজানো-গোছানো মাঠে এখন প্রার্থী হতে চান বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইনাম আহমদ চৌধুরী। খন্দকার মুক্তাদির সমর্থকদের অভিযোগ, ওয়ান ইলেভেনের উপদেষ্টা ইফতেখার আহমদ চৌধুরী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ফারুক চৌধুরী তার দুই ভাই এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দিন আহমদ বিএনপি নেতা ইনাম চৌধুরীর ভগ্নিপতি। এমন গুঞ্জন আছে ইনাম আহমদকে গ্রেফতার করা হলে তিনি দ্রুত ছাড়া পান ওই ঘনিষ্ঠতার কারণে। বিগত দিনে সিলেটের রাজনীতিতে বা কর্মী সমর্থকদের চলমান দুঃসময়ে তাকে কাছে মিলেনি।

অপরদিকে নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার পর থেকে প্রার্থী নিয়ে নানাভাবে বিচার বিশ্লেষণ করছেন সাধারণ সমর্থকরা। তবে নেতাদের কেউ মুখ খুলতে চান না। তাদের মতে, যিনি দলীয় মনোনয়ন পাবেন তার পক্ষে কাজ করবেন তারা। তবে সবাই চান ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করা হোক।

উল্লেখ্য, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দাকার মুক্তাদির, ইনাম চৌধুরী ছাড়াও নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী দলীয় মনোনয়ন ফরম ক্রয় করেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর