একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আর পেছাচ্ছে না। ঐক্যফ্রন্ট ৩ সপ্তাহ নির্বাচন পেছানোর দাবি করলেও কমিশন বৈঠক করে নির্বাচন আর না পেছানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ নভেম্বর) সকালে প্রধান নির্বাচন কমিশার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। সকাল ১১টা থেকে ১২ পর্যন্ত টানা এক ঘণ্টা বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছাড়াও অন্যান্যা কমিশনারসহ নির্বাচন কমিশন সচিব উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, জানুয়ারি মাসে বিশ্ব ইজতেমা ও বিদ্যালয়গুলো খোলা থাকায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ ব্রিফ করে জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দিন অাহমদ বলেন, নির্বাচন পেছানোর অার কোনো সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, নির্বাচনের পর বিভিন্ন কাজ রয়েছে। নির্বাচনের পর অনেক সময় পুন:নির্বাচন করতে হয়। এছাড়া গেজেট প্রকাশসহ বিভিন্ন কাজ রয়েছে। সেজন্য ৩০ ডিসেম্বরের পরে অার নির্বাচন পেছানো সম্ভব নয়।
সচিব বলেন, বুধবার (১৪ নভেম্বর) ঐক্যফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ কমিশনে এসে বেশকিছু দাবি উপস্থাপন করেছে। সেজন্য আজকে নির্বাচন কমিশন তাদের দাবিগুলো পর্যালোচনা করেছেন এবং নিজেদের ভেতরে বৈঠক করেছেন। বৈঠক করে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, জানুয়ারি মাসে বেশ কয়েকটি আইনী ও সাংবিধানিক বিষয় আছে। যেগুলো হাতে যথেষ্ট সময় নিয়ে কাজগুলো করতে হবে। যেমন যদি পুনঃনির্বাচন করতে হয়, উপনির্বাচন করতে হয়, নির্বাচনে অনিয়ম হলে তদন্ত করা, গেজেট প্রকাশ করা ও নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণ ইত্যাদি।
তিনি বলেন, এছাড়া বিশ্ব ইজতেমা জানুয়ারি মাসে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে। এত প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশ নিয়ে থাকেন এবং লক্ষাধিক আইন শৃঙ্খলাবাহিনী মোতায়েন থাকেন। সবদিক বিবেচনা ও চুলচেরা বিশ্লেষণ করে ৩০ ডিসেম্বরের পর নির্বাচন পেছানোর ইসির কাছে যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত এবং বাস্তবসম্মত না হওয়ায় নির্বাচন পেছানের আর কোনো সুযোগ নেই বলে ইসি সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
সচিব বলেন, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিদেশি পর্যবেক্ষক নয়, আমরা এদেশের নাগরিক যে ১০ কোটি ৪১ লাখ ভোটার তাদের বিষয়গুলো আগে বিবেচনা করব। তবে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের সবসময় আমরা স্বাগত জানাই।
সেনাবাহিনী মোতায়েন সম্পর্কে তিনি বলেন, সকালে আমি বলেছিলাম। ২ থেকে ১০ দিনের মধ্যে সেনাবাহিনী নামবে। আসলে আমি বিষয়টি বুঝতে পেয়েছিলাম সহকারি রির্টানিং কর্মকর্তারারা সেনাবাহিনীর জন্য ১০ দিন আগে থেকে তাদের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করবেন। তবে নির্বাচন কবে কখন কীভাবে সেনা মোতায়েন করা হবে সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত পুনঃনির্ধারিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২৮ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের দিন ২ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ৯ ডিসেম্বর এবং ভোটের দিন ৩০ ডিসেম্বর।