একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের ৬টি আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং সিস্টেমের (ইভিএম) মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই ৬ আসনের মধ্যে খুলনা-২ বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত সদর ও সোনাডাঙ্গা থানা নিয়ে খুলনা-২ আসন গঠিত। সদর থানার ৯টি ওয়ার্ড ও সোনাডাঙ্গার ৭টি ওয়ার্ড মিলে খুলনা-২ এর নির্বাচনী আসন। এ আসনের সবগুলা কেন্দ্রেই থাকবে ইলেকট্রনিক ভোটিং ব্যবস্থা বা ইভিএম মেশিন।
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-২ আসনে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে প্রার্থী হয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভ্রাতুষ্পুত্র, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল। অপরদিকে বিএনপির একক মনোনয়নের চিঠি পেয়েছেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও নগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৭৩ সালের পর গত ৪১ বছরে খুলনা-২ আসন থেকে নির্বাচিত হতে পারেনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী। যে কারণে এ আসনটি বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে খ্যাত। ৪১ বছর পর গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অনুপস্থিতির সুযোগে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মিজানুর রহমান মিজান এখানে এমপি নির্বাচিত হন। তাই দীর্ঘদিন পর ফিরে পাওয়া এ আসন হাতছাড়া করতে নারাজ আওয়ামী লীগ। আর ক্লিন ইমেজ এবং নতুনত্বের চমকে এ আসনে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য শেখ জুয়েল নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে।
অপরদিকে ৪১ বছর ধরে দখলে থাকা আসনটি পুনরুদ্ধারের জন্য মরিয়া বিএনপি। যার প্রস্তুতিও নিচ্ছে দলটি। খুলনা বিভাগীয় শহরের (সদর) এ আসন থেকে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মঞ্জু।
খুলনা-২ আসনে এ দুই শক্ত প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। ভোটাররা বলছে, এবারের ইভিএমের নির্বাচনে জুয়েল-মঞ্জুর লড়াই হবে সমানে সমান।
খুলনা-২ আসনে সব মিলিয়ে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৫৭টি। অর্থাৎ এ ১৫৭টি কেন্দ্রেই থাকছে না কোনো ব্যালট আর ব্যালট বাক্স। ইভিএমের মাধ্যমে ভোটাররা তাদের ভোট প্রদান করেই পছন্দের প্রার্থী নির্বাচিত করবেন। সব মিলিয়ে খুলনা-২ আসনে ১৫৭টি ভোটকেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ৬৫৩টি কক্ষে চলবে ভোটগ্রহণ।
খুলনা-২ আসনে ইভিএমের আওতাভুক্ত মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৯৪ হাজার ৮৩ জন। এর মধ্যে সদর থানায় মোট ভোটার ১ লাখ ৬৮ হাজার ৮১০ জন ও সোনাডাঙ্গা থানায় মোট ভোটার ১ লাখ ২৫ হাজার ২৭৯ জন। পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৪৬ হাজার ৮৮৯ এবং নারী ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৪৭ হাজার ৩৭৩ জন। সব ভোটারকেই ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে হবে।
উল্লেখ্য, আগে স্থানীয় পর্যায়ে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আংশিক ও ছোট পরিসরে ইভিএম ব্যবহার হয়েছে। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবারই প্রথম ইভিএমের ব্যবহার করবে নির্বাচন কমিশন।
গত ২৬ নভেম্বর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে লটারির মাধ্যমে অন্য ৫টির সঙ্গে খুলনা-২ নির্বাচনী আসনে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।