ঐক্যফ্রন্টের ‘ইশতেহার’ সম্পন্ন, থাকছে না কোনো চমক

বিবিধ, নির্বাচন

মুজাহিদুল  ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | 2023-08-26 15:10:25

‘জনগণই রাষ্ট্রের মালিক’ শিরোনামে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহার প্রস্তুত। যা শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে।

বৃহস্পতিবার(২৯ নভেম্বর) সবশেষ বৈঠকে চুড়ান্ত হবে বিএনপি, গণফোরাম, নাগরিক ঐক্যের সমন্বয়ে গঠিত সরকার বিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী এই ইশতেহার।

বহুল কাঙ্খিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে থাকছে না কোনো চমক। চলতি বছরের শুরুতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ঘোষণা করেছিলেন ভিশন ২০৩০। চমক না থাকলেও এই ইশতেহারকে বাস্তবমুখী বলছেন ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির এক সদস্য।

এছাড়া ঢাকায় এক জনসভায় ঘোষিত বিএনপির ১২টি লক্ষ্য ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ঘোষিত ১১ টি লক্ষ্যের সমন্বয় রয়েছে শীঘ্রই ঘোষিত হতে যাওয়া নির্বাচনী ইশতেহারে। যার মূল লক্ষ্য হবে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা।

ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির সূত্রে জানা গেছে,  নির্বাচনী ইশতেহারে সরকার, সংসদ, রাজনীতি, অর্থনীতি ও শিক্ষার পাশাপাশি কৃষির উন্নয়ন, গামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন, সুশাসন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, সমতা আনয়ন, যুব সমাজের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়েছে।

‘জনগণ রাষ্ট্রের মালিক’ এই স্লোগানে দেশের সকল মত ‍ ও পথকে নিয়ে রংধনু জাতি গঠনে নানা প্রতিশ্রুতি ও ঘোষণা থাকলেও  তাতে নতুনত্ব কিছু নেই বলে ইতোমধ্যে গুঞ্জণ শোনা যাচ্ছে। বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ যেভাবে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ স্লোগান নিয়ে জাতিকে স্বপ্ন দেখিয়েছিল। তেমন কিছুই থাকছে না জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে। উল্টো কৃষির উন্নয়ন ও সুলভ মূল্যে স্বাস্থ্যসেবার যে প্রতিশ্রুতি থাকছে তা বহু বছর আগেই জাতীর উদ্দ্যেশ্যে দেয়া ১৯ দফায় বলেছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান।

জাতির উদ্দ্যেশে দেয়া ১৯ দফার আত্মনির্ভরশীল জাতি গঠন, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কৃষির উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিকে জোরদার করা, ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ নিশ্চিত করা, গৃহহীনদের আবাসন নিশ্চিত করা, ন্যুন্যতম চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা, বেকারত্ত দূরীকরণ ও দারিদ্রমুক্ত ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।

তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালে দাড়িয়ে ভিশন ২০৩০ ঘোষণা করে বিএনপি। যে ঘোষণায় নতুনত্ব নেই বলে নানা মহলে আলোচিত হয়। তাছাড়া ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে অনেক পথ এগিয়েছে। ২০২১ সালে মধ্য আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখিয়েছে জাতিকে। শুধু তাই নয়, ডেল্টা প্লান যা আগামী ১০০ বছর পরের বাংলাদেশ কেমন হবে তারও স্বপ্ন দেখিয়েছে আওয়ামী লীগ। ধারণা করা হচ্ছে, এটাই হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের ফোকাস পয়েন্ট। সে তুলনায়  বিএনপির ভিশন ২০৩০ শিশুতোষ। 

জানা গেছে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার প্রণয়ন কমিটিতে রয়েছেন গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপি থেকে সিনিয়র সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ, গণফোরামের আওম শফিক উল্লাহ, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের ইকবাল সিদ্দিকী এবং নাগরিক ঐক্যের ডা. জাহেদ উর রহমান। এর নেপথ্যে রয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বার্তা২৪.কমকে বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করা হবে। আগামীকাল চূড়ান্ত করা হবে। এবং কি কি থাকছে তা আপনারা জানতে পারবেন।

তবে আজগুবি কিছু থাকবে না ইশতেহারে। নাগরিক জীবনের সংস্কার, বিচার বিভাগের সংস্কার, জীবন যাত্রার উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, সুলভ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয়গুলো প্রধান্য পাবে বলে জানান তিনি।  

তিনি আও বলেন, প্রশাসন ও বিচার বিভাগে দলীয়করণের প্রভাবমুক্ত করা হবে, যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি হবে। এছাড়া কৃষি খাতে যুগোপযোগী সংস্কারের মাধ্যমে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা হবে। যেখানে কৃষিতে ভর্তুকি, দ্রব্যমূল্য নির্ধারণ ও শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ করা হবে। এছাড়া বাস্তবমূখী নানা বিষয় থাকছে ইশতেহারে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর