কৌশল নাকি বিএনপি হাইকমান্ডের ভুল?

বিবিধ, নির্বাচন

ঊর্মি মাহবুব, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 14:11:33

আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছে বিএনপি। কারণ আইন অনুযায়ী দণ্ডপ্রাপ্তরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন না। খালেদা জিয়াও দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।

অন্যদিকে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ফেরারী জীবন কাটাচ্ছেন লন্ডনে। আর তাই এবার মনোনয়ন বিক্রির শুরুর দিন থেকেই নতুন নতুন কৌশল প্রয়োগ করছে দলটির হাইকমান্ড। তৈরি করেছেন তিনস্তরের মনোনয়ন পরিকল্পনা।

৩০০ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীর সংখ্যা ৮০০ জনেরও বেশি। কিন্তু মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনেও মনোনয়ন জমা দেননি দলটির হ্যাভিওয়েট তিন প্রার্থী। যাদের মধ্যে আছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়ালমিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কারাবন্দী সভাপতি হাবিব-উন নবী খান সোহেল।

এ বিষয়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যেই ঘুরছে নানা আলোচনা সমালোচনা। কেউ কেউ ধারণা করছেন এটি বিএনপির হাইকমান্ডের নির্বাচনী কৌশলগুলোর একটি। অনেকে মনে করছেন নির্বাচনকালীন সময়ে আবদুল আওয়াল মিন্টু ও সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতেই এটা করা হয়েছে।

আবার অনেকে মনে করছেন তাদের লোকচক্ষুর আড়াল করতেই বিএনপির হাইকমান্ডের কৌশল হতে পারে। নির্বাচনকালীন সময়ে দলের মূল দায়িত্ব পালন করতে পারেন সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালই।

অন্যদিকে, খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়ার সময় নাশকতার মামলায় কারাগারে থাকা হাবিব-উন নবী সোহেল রয়েছেন হাইকমান্ডের গুড বুকে। নির্বাচন পরিচালনায় এই তিন নেতাকে কাজে লাগাতে পারে বিএনপি। কিন্তু তারপরও এই নেতাদের কেন পছন্দের আসন দেওয়া হলো না বা কেন তারা মনোনয়ন দাখিল করলেন না তা নিয়ে রহস্য ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।

তবে যদি সত্যি আন্তকোন্দলের কারণে এই তিন নেতা মনোনয়ন দাখিল না করে থাকেন তাহলে তা বিএনপির হাইকমান্ডের আরো একটি ঐতিহাসিক ভুল হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে দলটির কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অনেক সময় চাটুকারদের কারণে বিপাকে পড়ে সংগ্রামী নেতারা। যদি এসব সংগ্রামী নেতাদের বাদ দিয়ে চাটুকারদের প্রাধান্য দেওয়া হয় তাহলে মাশুল গুনতে হতে পারে দলটির। তবে এসব বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ সংশ্লিষ্টরা।

সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।

তবে এই ঘটনা দলটির কৌশলী হওয়ার আভাস দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও নির্বাচন পরিচালনাকমিটির প্রধান নজরুল ইসলাম খান। তারা নির্বাচন পরিচালনায় থাকবেন বলেও সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তিনি।

জানা গেছে, ফেনী-১ ও ফেনী-৩ আসন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন আবদুল আওয়াল মিন্টু। অন্যদিকে ঢাকা-৮ থেকে ২০০৮ সালে নির্বাচন করেছিলেন হাবিব-উন নবী সোহেল। কিন্তু এই আসনটি মির্জা আব্বাসের জন্য ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন বিএনপির হাইকমান্ড। আর তাই ঢাকা-৯ আসন থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন তিনি।

কিন্তু ঢাকা-৯ আসন থেকে মনোনয়ন তুলেছিলেন মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস। কিন্তু ২৮ শেষ পর্যন্ত মনোয়ন দাখিলকরেননি সোহেল। অন্যদিকে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ঢাকা-১৩ আসন থেকে নির্বাচন করতে চাইলেহাইকমান্ডের নির্দেশে বরিশাল-২ থেকে মনোনয়ন নিতে হয় তাকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনিও মনোনয়ন দাখিল করেননি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর