গুলশান-বনানীর এমপি হবেন কে?

বিবিধ, নির্বাচন

সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 18:09:42

ঢাকা-১৭ (গুলশান-বনানী) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য কে সেটা জানেন না ওই এলাকার বেশিরভাগ বাসিন্দা। দেশের কূটনৈতিক এলাকা আর ঢাকা সেনানিবাস এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৭। তবে আসন্ন নির্বাচনে কে হবেন এই এলাকার এমপি? এটা নিয়ে রীতিমতো ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা চান নৌকা প্রতীক। আর জোটগত হিসেবে নাম আসছে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের। অপরদিকে বিএনপি থেকে ঢাকা-১৭ আসনে মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, ফরহাদ হালিম ডোনার ও পারটেক্স' গ্রুপের আবুল হাসেমের ছেলে শওকত আজিজ রাসেল মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন চিত্র নায়ক ফারুক খান ও উত্তর আওয়ামী লীগ নেতা কাদের খান।  শেষ লড়াইয়ে যাবেন কোন দু’জন তা এখন আটকে আছে জোটের নানা সমীকরণে।

রাজধানীর গুলশান, বনানী, ক্যান্টনমেন্ট, মহাখালীর নিউ ডিওএইচএস, ভাসানটেক, বারিধারা ও শাহজাদপুর এলাকা নিয়ে ২০০৮ সাল থেকে গঠন হয় ঢাকা-১৭ আসন। এর আগে এ এলাকাগুলো ঢাকা-৫ আসনের মধ্যে ছিল। 

২০০৮ সালের নির্বাচনে মহাজোট থেকে প্রার্থী হয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বিএনপির হান্নান শাহকে পরাজিত করেন। এরপর বিগত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগ মুহূর্তে এ আসনে এরশাদ হঠাৎ করে বেঁকে বসেন। তখন বিএনএফের আবুল কালাম আজাদ সংসদ সদস্য হয়ে যান। কিন্তু বর্তমান এই এমপিকে গুলশান বনানীর কোনো কর্মকাণ্ডে দেখা যায় না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

জানা গেছে, স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা এ আসনে প্রার্থী হওয়ার জন্য গত বছর থেকে তৎপরতা শুরু করেন। তাদের মধ্যে ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাদের খানও একজন। তাকে ও চিত্রনায়ক ফারুককে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তারা মনোনয়ন জমাও দিয়েছেন।

কিন্তু মহাজোটগত ভাবে এরশাদ এখানে প্রার্থী হতে পারেন। লাঙ্গল প্রতীকে তার মনোনয়ন ফরম নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের নেতা কাদের খানের সমর্থকরা নিশ্চিত হতে পারছেন না।

কাদের খান বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত মেনে নেবো। তবে সব সময় ভাড়া করা লোক দিয়ে এ আসনে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। নৌকার কোনো প্রার্থী অতীতে এ আসনে ছিল না। তাই আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীক ছাড়া কাউকে মানবে না দলের নেতাকর্মীরা। ১৯৮৬ সাল থেকে এ এলাকার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলাম। তখন শহরে কোনো থানা আওয়ামী লীগ ছিল না। ২০০৪ সাল পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্ব পালনের পর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়েছি।’

এদিকে বিএনপি থেকে এ আসনে মনোনয়ন দাখিল করেছেন একাধিক ব্যাক্তি। এর মধ্যে মেজর জেনারেল (অব) রুহুল আমিন ও গুলশান ক্লাবের সভাপতি আবুল হাসেমের ছেলে শওকত আজিজ রাসেল রয়েছেন।

বিএনপি দলীয় সূত্র জানায়, রুহুল আমিনকে দলীয় প্রার্থী করা হবে এখানে। তবে শেষ মুহূর্তে কোনো ঝামেলা হলে সেটা মোকাবিলা করতেই শওকত আজিজ রাসেলকেও মনোনয়ন চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে শওকত আজিজ রাসেলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার ব্যাপারে বিরুপ মন্তব্য করেছেন অনেকে। আগের নির্বাচনেও পারটেক্স গ্রুপের এই পরিবারের ভূমিকাকে সুযোগসন্ধানী হিসেবে দেখছে বিএনপি। রাসেলের বাবা পারটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান হাশেম নোয়াখালির একটি আসন থেকে ২০০১ সালে বিএনপির এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর ওয়ান ইলেভেনের সময় থেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে যান।

এই আসনে বিএনপি‘র নেতারা মনে করেন, রাসেলের তেমন কোনো ভূমিকা ছিলো না দলে। অভিজাত হিসেবে যারা সাধারণের আড়ালে বেশি থাকেন তারা মনোনয়ন পেলে ক্ষমতাসীন দল বেশি সুবিধা পাবে।

তবে দলটির অনেক নেতাকর্মীর ধারণা শেষ সময়ে ঢাকা-১৭ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে জোট প্রার্থী এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ আর ঐক্যজোটের প্রাথী বিএনপি নেতা রহুল আমিনের মধ্যে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর