এনালগে বাধা, চলছে পুরোদমে ডিজিটাল প্রচারণা !

বিবিধ, নির্বাচন

মনি আচার্য্য, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-26 01:08:34

 

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোকে ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেবে নির্বাচন কমিশন। আর এই প্রতীক বরাদ্দের একদিন পর ১১ ডিসেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় নামবে প্রার্থীরা। প্রার্থীদের এ প্রচারণা ভোটের আগে ইসির বেঁধে দেওয়া সময় পর্যন্ত চলবে।

কিন্তু আনুষ্ঠানিক প্রচারণার ঘোষণা এখনো না আসলেও প্রার্থীরা বসে নেই। দিব্যি দলীয় ও নিজেদের নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। গ্রাম থেকে শুরু করে শহর বন্দর সব জায়গায়ই চলছে এ প্রচারণা।

তবে প্রার্থীদের এ প্রচারণা মাঠ-ঘাট, রাস্তা কিংবা বাজারে পোস্টার, ব্যানার, মাইকিং বা সভা মিছিল করে নয়। সাইবার ওয়ার্ল্ড ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে ব্যাপক হারে প্রচারণা চালাচ্ছে প্রার্থীরা। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কোনো বিধি নিষেধ না থাকায় প্রার্থীরা আরও উৎসাহী হচ্ছে ডিজিটাল প্রচারণায়।

ইসির গ্রিন সিগন্যাল ও প্রার্থীদের উৎসাহের কারণে ডিজিটাল প্রচারণার প্রভাব ইতোমধ্যেই বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গেলে দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে ফেসবুক ও ইউটিউবে উল্লেখযোগ্য হারে ডিজিটাল প্রচারণা দেখা যাচ্ছে। শুধু তাই নয় এরই মধ্যে বিভিন্ন দলের প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা নির্বাচন উপলক্ষে ‘নির্বাচনী প্রচারণার' নামে একাধিক ফেসবুক আইডি ও পেইজ খুলে দিন-রাত নানা পোস্ট এবং ছবি প্রকাশ করে প্রচারণা চালাচ্ছে। তাছাড়া ইউটিউবে বিভিন্ন চ্যানেল খুলে নানা ধরনের নির্বাচনী গান ও ভিডিও প্রকাশ করেও চলছে প্রচারণা।

 এ বিষয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইন্টারনেটের মাধ্যমে ডিজিটাল প্রচারণা, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্বাচনী প্রচারণার গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রার্থীরা ও তাদের সমর্থকরা বিনা বাধায় ও কোনো ধরনের আচরণ বিধি লঙ্ঘন না করে নির্বাচনের আগে থেকেই প্রচারণা চালাতে পারছে।

আবার অনেক দলের নেতাকর্মীরা মনে করছে, ডিজিটাল প্রচারণার কারণে অবৈধ প্রচারণা নেই বলেই চলে। কেননা এখন সবার হাতে হাতে স্মার্ট ফোন রয়েছে, ফলে প্রার্থীদের প্রচারণার বিষয়গুলো খুব সহজেই ভোটারদের হাতে চলে যাচ্ছে। ফলে ইসির আইন ভঙ্গ করে নির্ধারিত তারিখের আগে ব্যানার পোস্টার লাগানোর প্রয়োজন পরছে না। তবে এক্ষেত্রে তরুণ ভোটারদের কাছেই এসব ডিজিটাল প্রচারণা যাচ্ছে বেশি।

এ ডিজিটাল প্রচারণার বিষয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নির্বাচনের আচরণবিধির আওতায় পড়ে না। তাই এ বিষয়ে কোনো ধরনের বাধা বা নিষেধ নেই নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে।

তবে ডিজিটাল প্রচারণার বিষয়ে বাধা না থাকলেও গুজব ছড়িয়ে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্টকারীদের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থানে থাকবে নির্বাচন কমিশন।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া কোনো ভাবেই বন্ধ করা যাবে না। তবে যারা গুজব ছড়াবে, সহিংসতা ও অপপ্রচার ছড়াবে তাদের বিষয়ে এনটিএমসি, বিটিআরসি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাইবার ক্রাইম ইউনিটকে মনিটরিং করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ইসিকে জানিয়েই দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি এবং ক্রাইম বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার মো. নাজমুল হক বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্যে একটি ‍গুণগত পার্থক্য রয়েছে। কেননা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাইবার ওয়ার্ল্ডে ব্যবহার সর্বোচ্চ হবে বা হতে যাচ্ছে। তবে ডিজিটাল প্রচারণার বিষয়ে আমাদের কাছে ইসির কোনো নির্দেশনা নেই। এটি ইসির বিষয়।’

তিনি বলেন, ‘তবে নির্বাচনকে সামনে রেখে কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো ধরনের গুজব বা অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করলে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আমরা প্রস্তুত রয়েছি এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে।’

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর