টাঙ্গাইল-৮ আসনে নিষ্প্রভ বিএনপি-কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ

বিবিধ, নির্বাচন

ইসমাঈল হোসাইন রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪ | 2023-08-30 12:01:55

বাসাইল ও সখীপুর নিয়ে গঠিত টাঙ্গাইল-৮ আসন। যেখানে রয়েছে একটি পৌরসভা ও আটটি ইউনিয়ন। ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৬৪৫ জন। আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নানান কৌশলের মাধ্যমে নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজদের সক্ষমতার জানান দিচ্ছেন।

আসনটিতে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে ভোটের মাঠে অনেকটা নিষ্প্রভ অন্যতম প্রতিপক্ষ বিএনপি ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে নেতা কর্মীদের সরব উপস্থিতি রয়েছে। নেতাকর্মীরা ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে সভা করছেন, নিজেদের মধ্যেও আলাপ আলোচনা সেরে নিচ্ছেন। কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র বিএনপি ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কার্যালয়ে। দুই দলের কার্যালয়ে কয়েকবার গিয়েও বন্ধ পাওয়া গেছে।

বিএনপির পৌরসভা সংলগ্ন কার্যালয়ের পাশে দোকানি মাহবুব মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন যাবত বিএনপির এই কার্যালয় বন্ধ রয়েছে। নেতাকর্মীরা এখানে আসেন না। আগে এই কার্যালয় অনেক নেতাকর্মী ভিড় করত। মামলা-গ্রেফতারে জর্জরিত হওয়ায় এখন কেউ আসেন না। সর্বশেষ কবে কার্যালয়ের সাটার খোলা হয়েছে মনে করতে পারছি না।’

দলটির অপর কার্যালয়ে গিয়েও বন্ধ পাওয়া গেছে। কার্যালয়ের পাশের দোকানি সুমন আহমদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বিএনপির মধ্যে বিভক্তি আছে। সখীপুর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ হাবিবের সঙ্গে বিএনপি নেতা আজম খানের মতবিরোধের কারণেই এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। যদিও কয়েকদিন আগে কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে একত্রিতভাবে সভা-সমাবেশ করেছেন তারা। তবে এখনো বিভক্তি রয়েছে। নির্বাচনে তারা কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে জোট বেঁধে কাজ করবে বলে শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কিছু বাস্তবে দেখা যায়নি।’

অন্যদিকে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের অফিসে গিয়েও একই চিত্র দেখা গেছে। দলটির কার্যালয়ে ছিল তালাবদ্ধ। আশেপাশে কোন কর্মী সমর্থকেরও দেখা মেলেনি। কার্যলয়ের পাশের হোটেলের এক কর্মচারি জানান, ‘প্রতিদিন সন্ধ্যায় অফিস খোলে। রাইতে কিছু মানুষ আসে। সারাদিন এমন তালা লাগানোই থাকে। নেতা আইলে আবার অনেক মানুষ থাকে। কিন্তু এছাড়া সবসময় দিনের বেলায় এমনই থাকে।’

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রধান কাদের সিদ্দিকীর সখীপুরের বাসভবনে গিয়েও কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সেখানকার একজন নারী জানান, ‘উনি (কাদের সিদ্দিকী) আসলে কিছু মানুষজন আহে। তয় এমনে তেমন মানুষজন আহে না। বাড়ি তো বেশিরভাগ সময় খালিই থাহে।’

এ বিষয়ে জানতে দলটির প্রধান কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এছাড়াও বিএনপির নেতৃবৃন্দের কাউকে পাওয়া যায়নি।

এদিকে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ নির্বাচনকেন্দ্রী আলোচনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। অনেক নেতাকর্মী মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন বলে জানান দলটির নেতারা।

সখীপুর যুবলীগের সভাপতি খলিলুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা নির্বাচনকেন্দ্রীক কাজে ব্যস্ত সময় পার করছি। আমাদের অন্যতম প্রতিপক্ষ বিএনপি। তবে জয়ের ব্যাপারে আমরা শতভাগ আশাবাদি। আমাদের নেতাকর্মীরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। নেতারাও ছুটে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষের কাছে।

যুবলীগের শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক আলমাস আজাদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, আওয়ামী লীগের পাশাপাশি আমরা যুবলীগ-ছাত্রলীগও মাঠে সক্রিয়ভাবে কাজ করছি। আমাদের কার্যালয় সবমসময় লোকারণ্য। অনেক নেতাকর্মী বাইরে আছেন, তারপরেও আমাদের কার্যালয়ে নেতাকর্মীরা প্রতিনিয়ত আসছেন। আমরা এখন নির্বাচনী কাজে পুরোদমে নেমে পড়েছি।

আসনটিতে ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৬৪৫ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৮ হাজার ৪৫৪ জন। আর নারী ভোটার ১ লাখ ৭৮ হাজার ১৯১ জন।

প্রসঙ্গত টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে এবার মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন জোয়াহেরুল ইসলাম (আওয়ামী লীগ), কাদের সিদ্দিকী (কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগ), কুড়ি সিদ্দিকী (কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগ), হাবিবুর রহমান তালুকদার (কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগ), শফি সরকার (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি), কাজী আশরাফ সিদ্দিকী ও রেজাউল করিম (জাতীয় পার্টির), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা আবদুল লতিফ মিয়া এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী লিয়াকত আলী ও শহিদুল ইসলাম।

এ সম্পর্কিত আরও খবর